এবার মৌলভীবাজারে বাস থেকে ফেলে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রকে হত্যার অভিযোগ

‘চালকের সহযোগীর (হেলপার) ধাক্কায়’ এবার বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন।  শনিবার বিকেলে মৌলভীবাজারের শেরপুর বাসস্ট্যান্ডে এই ঘটনা ঘটে। এতে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী আহত হন।

নিহত শিক্ষার্থীর নাম ওয়াসিম আফনান। তিনি বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার রুদ্র গ্রামের আবু জাহেদ মাহবুবের ছেলে ওয়াসিম। আহত শিক্ষার্থীর নাম রাকিব হোসেন।

১৯ মার্চ ঢাকায় বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে নিহত হন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) শিক্ষার্থী আবরার আহমেদ চৌধুরী। এর চার দিনের মাথায় আজ এই ঘটনা ঘটল।

ওয়াসিমের সঙ্গে থাকা সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নয়ন রঞ্জন ঘোষ প্রথম আলোকে জানান, তাঁরা ১১ শিক্ষার্থী হবিগঞ্জের নবীনগরের দেবপাড়ায় একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। আজ শনিবার ময়মনসিংহ-সরিষাবাড়ী- সিলেট রুটে চলাচলরত উদার পরিবহনের যাত্রীবাহী একটি বাসে করে মৌলভীবাজারের শেরপুরে ফিরছিলেন।

নয়ন রঞ্জন জানান, তাঁরা নবীনগরের নাইমা ফিলিং স্টেশনের সামনে থেকে ওই বাসে ওঠেন। বাসে ওঠার সময়ই তাঁরা চালক ও হেলপারকে ভাড়া কম আছে বলে জানিয়েছিলেন। তিনি জানান, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী তাঁরা ভাড়া বাবদ ৬০০ টাকা পরিশোধ করেছিলেন। কিন্তু শেরপুরে নামার সময় হেলপার ও চালক তাঁদের কটূক্তি করেন। এ সময় নিহত ওয়াসিম ও আহত রাকিব হোসেন বিষয়টির প্রতিবাদ করেন। এ দুজন ছাড়া বাকি নয়জন তখন বাস থেকে নেমে স্ট্যান্ডে অবস্থান করছিলেন।

নয়ন রঞ্জনের ভাষ্য, তর্কাতর্কির একপর্যায়ে হেলপার ওয়াসিম ও রাকিবকে ধাক্কা দিয়ে বাসের দরজা লাগিয়ে দেন আর চালক বাস চালানো শুরু করেন। এতে রাকিব সড়কে ছিটকে পড়লেও ওয়াসিমের পা দরজার সঙ্গে আটকে যায়। একপর্যায়ে তিনি বাসের পেছনের চাকায় পিষ্ট হন। পরে দুজনকেই সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ওয়াসিমকে মৃত ঘোষণা করেন।

Eprothom Aloএ ব্যাপারে সিলেট কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম মিঞা বলেন, বাসটি জব্দ করে মৌলভীবাজার সদর থানায় রাখা হয়েছে। চালক ও সহযোগীকে আটকের চেষ্টা চলছে।

সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য মতিয়ার রহমান হাওলাদার হাসপাতালে সংবাদকর্মীদের বলেন, এটি কোনো দুর্ঘটনা নয়। এটি পরিষ্কার হত্যাকাণ্ড। এ ব্যাপারে হত্যা মামলা হবে।

এদিকে রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা সিলেট কদমতলী বাসস্ট্যান্ডে উদার পরিবহনের কাউন্টারে ভাঙচুর চালান।

বাস চালক আটক:
উদার পরিবহনের সেই বাসের চালককে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার রাত ১১টায় সিলেট কদমতলী বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে তাঁকে আটক করা হয়। বাসচালকের নাম জুয়েল আহমেদ (২৬)। তিনি সিলেটের দক্ষিণ সুরমার গোটাটিকর ইউনিয়নের বাসিন্দা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (গণমাধ্যম) জেদান আল মুসা। তবে এখনো এই ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *