রিয়ালকে বাঁচাতে জিদানকে ফেরাতে চান পেরেজ
২০১৫ সালে কোনো শিরোপা পায়নি রিয়াল মাদ্রিদ। সেবার সম্ভাব্য তিন শিরোপার সবগুলোই জিতে নিয়েছিল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনা। তিন বছর বিরতি দিয়ে ঠিকই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হওয়ার দশা। সম্ভাব্য তিন শিরোপার দৌড় থেকেই ছিটকে গেছে রিয়াল। অন্যদিকে আরেকটি ট্রেবল জয়ের আশা দেখছে বার্সেলোনা। কিন্তু ২০১৫ সালেও যা হয়নি, সেটা হচ্ছে এবার। রিয়ালের ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে সময় বলে চিহ্নিত করা হচ্ছে এ মৌসুমকে। সে অবস্থা থেকে উদ্ধার পেতে জিদানকেই সমাধান মানছে তারা।
গতকাল আয়াক্সের কাছে ঘরের মাঠে ৪-১ ব্যবধানে উড়ে গেছে রিয়াল। দুই লেগ মিলিয়ে ব্যবধানটা ৫-৩। ব্যবধান যাই হোক। ২০০৯-১০ মৌসুমের পর এই প্রথম চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলো থেকেই ছিটকে গেছে রিয়াল। এ কারণেই ২০১৫ সালের হতাশাকেও পার করে দিয়েছে এ মৌসুম। বরাবর চ্যাম্পিয়নস লিগকে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া এ ক্লাব সেবার অন্তত সেমিফাইনাল খেলেছিল। লিগেও শেষ দিকে পা হড়কানোর আগে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দৌড়ে ছিল।
এবার ঘরোয়া দুই প্রতিযোগিতার আশা এ সপ্তাহেই শেষ হয়েছে। সে সঙ্গে কাল যোগ হয়েছে মহাদেশীয় হতাশা। ৭ দিনের মাঝে তিনটি প্রতিযোগিতা থেকে মার্চের শুরুতেই ছিটকে গেছে রিয়াল। স্প্যানিশ পরাশক্তির জন্য ভয়ংকর এক ব্যর্থতা এটি। এর পেছনে দুটি কারণ খুঁজে পাচ্ছে সবাই। মৌসুমের শুরুতে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর বিদায়ের পর গোল করার দায়িত্বটা অন্য কারও না নেওয়া। এবং নতুন কোচদের অধীনে দল হয়ে না উঠতে পারে। হ্যাঁ, নতুন কোচদেরই বলতে হচ্ছে। অনেক আলোচনা জন্ম দিয়ে, বিশ্বকাপের দায়িত্ব থেকে বাদ পড়ে রিয়ালের কোচ হওয়া হুলেন লোপেতেগি টিকেছিলেন মাত্র তিন মাস। এর ক্ষণস্থায়ী সমাধান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়া সান্তিয়াগো সোলারিও বুঝিয়ে দিয়েছেন, এ ভার নেওয়া সম্ভব নয়। সবাই জিনেদিন জিদান নন।
২০১৬ সালে প্রায় একই পরিস্থিতিতে দলের দায়িত্ব পেয়ে রিয়ালকে চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতিয়েছেন জিদান। টানা তিন বছর সে ট্রফি নিজের দখলে নিয়ে অবিশ্বাস্য এক রেকর্ড গড়েছেন। কিন্তু এ মৌসুমে রোনালদোর ক্লাব ছাড়া আটকাতে না পেরে নিজেই চলে গিয়েছেন। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যমের দাবি সেই জিদানের কাছে আবার দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে চায় তারা!
স্প্যানিশ টিভি চ্যানেল লা সেক্সতার ফুটবল অনুষ্ঠান হুয়োনেসে দাবি করা হয়েছে রবিবার রিয়াল ভায়াদোলিদের ম্যাচের আগেই চাকরি হারাতে পারেন সোলারি। ক্লাব সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছেন, মৌসুমের শুরুতেই ক্লাব ছেড়ে যাওয়া জিদান যেন আবার ফিরে আসেন। এ মৌসুমে মোনাকো ও লিওনার্দো জার্ডিমের ক্ষেত্রে যেটা হয়েছে, ঠিক তারই ভদ্রস্থ পুনরাবৃত্তি যেন। জার্ডিমকে অক্টোবরে চাকরি থেকে ছাঁটাই করেছিল মোনাকো। ক্লাব কিংবদন্তি থিয়েরি অরি দায়িত্ব নিয়ে ক্লাবকে আরও ডোবানোর পর সেই জার্ডিমকেই ফিরিয়ে এনেছে মোনাকো। জিদান নিজে থেকে চলে গিয়েছিলেন আর মাঝে একের বদলে দুজন কোচ ছাঁটাই হয়েছেন, পার্থক্য এখানেই।
হুয়োনেস আরও জানিয়েছে, জিদান নাকি পেরেজকে ফেরার ব্যাপারে ইতিবাচক উত্তর দিয়েছেন। তবে ছন্নছাড়া রিয়ালের এ মৌসুমে আর যোগ দিতে রাজি নন সাবেক কোচ। পরের মৌসুমে একদম নতুন করে শুরু করতে চান। তাকে রাজি করাতে দলবদলের ব্যাপারে সর্বোচ্চ ক্ষমতা দেওয়ার কথাও নাকি বলেছেন পেরেজ। যে কারণে মতের মিল না থাকায় প্রথমবার ক্লাব ছেড়েছিলেন জিদান।