জ্বর, ঠাণ্ডা ও কাশিতে কি এসব খাওয়া নিষেধ?
জ্বর, ঠাণ্ডা ও কাশি নিয়ে আমাদের দেশে প্রচলিত কিছু ধারণা রয়েছে। জ্বর হলে এটা করা যাবে না, ঠাণ্ডা লাগলে সেটা খাওয়া যাবে না ইত্যাদি। এসব ধারণা বা নিয়মকানুন আদৌ সঠিক কিনা, তা জানি না অনেকেই। অসুস্থতা বা খাবার সম্পর্কিত চিরাচরিত এসব নিয়মকানুন বা ধারণা সবসময় সঠিক নয়। বরং কখনো কখনো দেখা যায় অসুস্থতা বেড়ে যাওয়ার ভয়ে যেটা খাদ্যতালিকা থেকে ছাঁটাই করছেন, হয়তো সেটাই ওই অসুখের আদর্শ কোনো পথ্য। ভুল ধারণা ভাঙতে জেনে নিন নিচের বিষয়গুলো—
ঠাণ্ডা লাগলে ফল খেতে নেই
এখনো অনেকেই অন্ধভাবে বিশ্বাস করে ঠাণ্ডা বা কাশিতে কোনো ফলই খাওয়া যাবে না। বর্তমানে ধারণাটি একান্তই ভুল প্রমাণিত হয়েছে। বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে, ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ ফল ঠাণ্ডা বা কাশি দূর করতে সহায়ক। পরিমিত পরিমাণ ফল খাওয়া যেতেই পারে। দিনের প্রথম ভাগে ফল খাওয়া উত্তম। কলাকে ঠাণ্ডা ফল বলে মনে করা হয়। কিন্তু বর্তমানে প্রমাণিত হয়েছে, কলা পেস্ট করে খাওয়ালে তা শিশুদের ঠাণ্ডা সারায়।
দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার খেতে নেই
ঠাণ্ডা লাগলে দুধ খাওয়ার ব্যাপারে অনেকের আপত্তি না থাকলেও এখন পর্যন্ত অনেকেই মনে করে, সর্দিতে দই খাওয়া যাবে না। অনেকের বিশ্বাস দই ঠাণ্ডা খাবার। এটি খেলে কাশি বাড়তে পারে। তবে এ ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। ঠাণ্ডা, কাশি বা জ্বরে দই খাওয়া নিরাপদ। তবে দই ফ্রিজে সংরক্ষণ করা হলে খাওয়ার সময় তা ওভেনে হালকা গরম করে নেয়া ভালো।
জ্বর হলে স্নান বাদ
জ্বর হলে স্নান করা যাবে না, এ ধারণা থেকে অবশ্য আজকাল অনেকেই সরে এসেছে। এখন ডাক্তাররাই বলেন, জ্বর হলে স্নান নিতে। সেক্ষেত্রে ঈষদুষ্ণ পানিতে স্নান নেয়া ভালো। এতে ঘুমটাও ভালো হয়।
ঠাণ্ডা-কাশিতে শিশুকে ঘি খাওয়ানো বারণ
ভারতীয় উপমহাদেশীয় আনুষঙ্গিক খাবারের মধ্যে অত্যন্ত পুষ্টিকর অনুষঙ্গ এটি। ঘি ফুসফুস ভালো রাখে, ইনফেকশন দূর করে, শুকনা কাশি প্রতিরোধ করে ও মিউকাস দূর করে।
ডিম হৃদস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর
সাধারণের ধারণা ডিম খেলে হৃদরোগ হতে পারে বা বাড়তি কোলেস্টেরলের সমস্যা দেখা দিতে পারে। অনেকেই সপ্তাহে দুটি বা চারটির বেশি ডিম খাওয়া থেকে বিরত থাকতে বলে। বিশেষত যাদের টাইপ টু ডায়াবেটিস ও হূদরোগ রয়েছে, তাদের এ নিয়ম মেনে চলার কথা বলা হয়। কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে, ডিম খাওয়ার সঙ্গে হৃদরোগ বা ডায়াবেটিস বেড়ে যাওয়ার কোনো যোগসূত্র নেই।