দেশব্যাপী স্কাউট আন্দোলন জোরদারে গুরুত্বারোপ রাষ্ট্রপতির

গাজীপুর প্রতিনিধি,

রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ দেশব্যাপী স্কাউট আন্দোলন জোরদার করার ওপর গুরুত্বারোপ করে তাদের মাদকের অপব্যবহার সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

আজ বিকেলে গাজীপুরের মৌচাকস্থ জাতীয় স্কাউট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ১০তম বাংলাদেশ এবং তৃতীয় এসএএনএসও (দক্ষিণ এশীয় এসোসিয়েশন অব ন্যাশনাল স্কাউট অর্গানাইজেশন) স্কাউট জাম্বুরী-২০১৯ এর উদ্বোধনীকালে তিনি স্কাউটদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আপনাদেরকে মাদকের অপব্যবহার, সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে এবং সর্বদা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, দেশপ্রেম ও মানবতার প্রতি দায়িত্ববোধ সমুন্নত রাখতে হবে।

প্রধান স্কাউট আব্দুল হামিদ বলেন, ‘তোমরা আগামীতে জাতিকে নেতৃত্ব দেবে। তোমরা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত এবং সম্পদশালী বাংলাদেশ গড়ে তুলবে।

শিশু-কিশোর ও যুবকদের ধর্মান্ধতা, সাম্প্রদায়িকতা সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের বিষবাষ্প থেকে নিরাপদ ও দূরে রাখতে স্কাউটিং ইতিবাচক অবদান রাখতে পারে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, কেবল স্কাউটরাই আধুনিক প্রগতিশীল ও সৃষ্টিশীল নতুন প্রজন্ম গড়ে তুলতে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। তিনি বলেন, স্কাউটিংয়ের মাধ্যমে দক্ষ নেতৃত্ব গড়ে তোলার পাশাপাশি বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য স্কাউট আন্দোলনকে তরান্বিত করতে অভিভাবক ও স্কাউট লিডারসহ সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশ স্কাউটয়ের ব্যতিক্রম ধর্মী কার্যক্রম আমাকে মুগ্ধ করেছে। সম্প্রতি চকবাজারে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে উদ্ধার কাজ এবং দেশব্যাপী সড়ক নিরাপদ ও ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় সহায়তা করে বাংলাদেশ স্কাউটস উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, স্কাউট আন্দোলন শিশু-কিশোরদের চারিত্রিক গুণাবলী বিকাশে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। লেখাপড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডে নিজেদেরকে সম্পৃক্ত করার মানসিকতা তৈরিতে স্কাউটিং এর ভূমিকা অনন্য।

রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ বলেন, স্কাউটরা নিয়মিত সমাজ সেবামূলক কাজের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা ও আর্তমানবতায় সেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্য আয়ের ও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত করার লক্ষ্যমাত্রা নিধারণ করেছে। সরকারের যুগোপযোগী পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের ফলে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে নি¤œ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে, পেয়েছে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার স্বীকৃতি।

রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করে বলেন, স্কাউটরা কঠোর পরিশ্রম ও অনুশীলনের মাধ্যমে ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে স্কাউট আদর্শের প্রতিফলন ঘটাবে এবং দেশের যে কোন প্রয়োজনে একজন প্রকৃত দেশ প্রেমিক ও স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে আত্মনিয়োগ করবে।

প্রধান স্কাউট পরে এখানে ছয় দিনব্যাপী প্রচারনা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। বিদেশী ৪শ’ স্কাউটসহ প্রায় ১২শ’ স্কাউট বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছে।
বাংলাদেশ স্কাউট-এর সভাপতি ও এসডিজির মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ স্কাউট-এর প্রধান জাতীয় কমিশনার ও দুর্নীতি বিরোধী কমিশনের (এসিসি) কমিশনার ড. মো. মোজাম্মেল হক খান, ওয়ার্ল্ড অর্গানাইজেশন অব স্কাউট মুভমেন্ট-এর মহাসচিব আহমেদ আলহেমদাবি ও জাতীয় কমিশনার (সংস্থা) আখতারুজ্জামান খান কবীরও অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *