আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন
স্টাফ রিপোর্টার,
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন আহমেদের দীর্ঘ কর্মজীবনের অভিজ্ঞতা থেকে লিখেছেন ‘গভর্নরের স্মৃতিকথা’। শনিবার বিকেলে রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারের অডিটোরিয়ামে বইটির মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এবি মির্জা আজিজুল ইসলাম, ড. আকবর আলী খান, ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, সাবেক রাষ্ট্রদূত এম সিরাজুল ইসলাম, বণিক বার্তা সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ প্রমুখ।
প্রকাশনা অনুষ্ঠানে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, গভর্নরের স্মৃতিকথা বইটিতে অর্থনীতি নিয়ে বিস্তারিত হয়তো লিখিনি; তবে আমি আমার ব্যক্তিজীবনের কিছু অভিজ্ঞতা এ বইয়ে লিখেছি। বইয়ে গ্রামের ঐতিহ্য, সম্প্রীতি প্রভৃতি বিষয় উল্লেখ করেছি। আগে আমরা হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ সবাই একসঙ্গে থাকতাম। সবাই সবার উৎসবে মেতে উঠতাম। তখন এত হিংসা বিদ্বেষ ছিল না। আমি আমার বইয়ে এ বার্তাটাও দেয়ার চেষ্টা করেছি যে- আমাদের মাঝে যে সম্প্রীতিটা ছিল, এখনো আছে; তবে সেটাকে রিকাল্টিভেট করতে হবে। এটা ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে।
বণিক বার্তার প্রকাশনায় বইটি অনলাইন বুকশপ রকমারিডটকম এবং বণিক বার্তার কার্যালয় থেকেও সংগ্রহ করা যাবে। বইটির প্রচ্ছদ এঁকেছেন ধ্রুব এষ। ১৭০ পৃষ্ঠার বইটির মূল্য ধরা হয়েছে ৪০০ টাকা।
ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সহকর্মী ও সহপাঠীসহ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট নাগরিকরা। তাদের মধ্যে রয়েছেন—সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইদুজ্জামান, অর্থনীতিবিদ ড. মাহবুবউল্লাহ, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী, নগর পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম, ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স বাংলাদেশের (আইসিসিবি) প্রেসিডেন্ট মাহবুবুর রহমান, সাবেক রাষ্ট্রদূত শামীম আহমেদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর মুর্শিদ কুলী খান, মাহবুব উল্লাহ, প্রাইসওয়াটারহাউসকুপারস বাংলাদেশের ম্যানেজিং পার্টনার মামুন রশীদ প্রমুখ।
সালেহউদ্দিন আহমেদ পুরান ঢাকার মাহুতটুলীতে জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল থেকে ১৯৬৩ সালে এবং ঢাকা কলেজ থেকে ১৯৬৫ সালে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে যথাক্রমে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেন। ১৯৬৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে বিএ অনার্স পাস করেন এবং ১৯৬৯ সালে একই বিষয়ে এমএ পাস করেন। ১৯৭০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতির লেকচারার হিসেবে যোগ দেন। তৎকালীন পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় প্রশাসনে সিভিল সার্ভিস অব পাকিস্তান (সিএসপি) ক্যাডারে যোগ দেন।
১৯৭৮ সালে কানাডার হ্যামিল্টন শহরে অবস্থিত ম্যাকমাস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোর আন্তঃরাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ‘সিরডাপ’- এ গবেষণাপ্রধান হিসেবে কাজ করেন। কুমিল্লা পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বার্ড) মহাপরিচালক ও এনজিও ব্যুরোর মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ক্ষুদ্রঋণের জন্য অর্থসহায়তাকারী। প্রতিষ্ঠান পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। সেখান থেকে তিনি ২০০৫ সালের মে মাসে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে যোগ দেন এবং ২০০৯ সালের এপ্রিলে তার কার্যকাল সমাপ্ত করেন। তিনি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগে অধ্যাপক ছিলেন এবং বর্তমানে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক। তিনি ৮০টির অধিক নিবন্ধ ও বই প্রকাশ করেছেন, যেগুলো দেশ ও বিদেশ থেকে প্রকাশিত হয়েছে। তিনি কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ও সংস্থার পরিচালনা পর্ষদেরও সদস্য।