সোনালী ব্যাংকের অর্থ আত্মসাৎ: ১২ জনের বিরুদ্ধে দুদকের অভিযোগপত্র

সাইদুর রনি,

সোনালী ব্যাংকের ৩৮ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ব্যাংকের সাবেক মহাব্যবস্থাপক (জিএম), উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম), ব্যবসায়ীসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র অনুমোদন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল কমিশনের সভায় এ অভিযোগপত্র অনুমোদন দেয়া হয়। শিগগিরই তা আদালতে জমা দেয়া হবে।

সূত্র জানায়, অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানায় একটি মামলা করে দুদক। মামলায় আসামি করা হয় ফেয়ার কেমিক্যালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফখরুল ইসলাম, পরিচালক ফাতেমা ইসলাম এবং লালবাগের বাকের হোসেন, জামির হোসেন, জরিনা আক্তার ও ওমর ফারুককে। তদন্ত শেষে সোনালী ব্যাংকের মতিঝিল স্থানীয় কার্যালয়ের সাবেক শাখা ব্যবস্থাপক ও ডিজিএম শওকত আলী, ডিজিএম আবদুল কাদির খান, সাবেক গোডাউনকিপার কাম ক্লার্ক বর্তমানে কৃষিভিত্তিক প্রকল্প অর্থায়ন বিভাগের কর্মকর্তা আবদুল মতিন, ফেয়ার কেমিক্যালের সাবেক গোডাউন চৌকিদার বর্তমানে সোনালী ব্যাংকের সাপোর্টিং স্টাফ মো. সরওয়ার্দি, কালিয়াকৈর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখক মো. সানোয়ার হোসেন এবং মো. আবদুল ওহাবকেও আসামি করা হয়। মামলার তদন্তে দুদকের সহকারী পরিচালক ইকবাল হোসেন ও মুজিবুর রহমান আসামিদের বিরুদ্ধে ৩৮ কোটি ৭২ লাখ ৩ হাজার ৯৬৮ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনেন।

ঋণের বিপরীতে বিভিন্ন সময় জমির মূল দলিল, ওই জমির ওপর নির্মিত কারখানার যন্ত্রপাতিসহ সবকিছু সোনালী ব্যাংকের স্থানীয় কার্যালয়ের অনুকূলে বন্ধক রাখা হয়, যা এখনো বলবৎ রয়েছে। ঋণের টাকা পরিশোধ না করে অথবা ওই জমি বন্ধকি দলিলের শর্ত ও আমমোক্তারনামা দলিলের শর্ত অনুসারে ঋণ পরিশোধ ছাড়া বিক্রয়, হস্তান্তর, রূপান্তর, পরিবর্তন কিছুই করার অধিকার নেই। এর পরও ফখরুল ইসলাম কালিয়াকৈর সাব রেজিস্ট্রি অফিসের সাব কবলা দলিলমূলে মো. বাকের হোসেন, বাকের হোসেনের স্ত্রী জরিনা আক্তার, ছেলে জমির হোসেন ও ভাগনে ওমর ফারুকের কাছে দেড় কোটি টাকায় ওই জমি বিক্রি করেন। জমি বিক্রি করার সময় ওই জমিতে ব্যাংকের কাছে বন্ধক রাখা ৫ কোটি টাকারও বেশি যন্ত্রপাতি ছিল। এছাড়া কারখানার প্রায় ১৩ কোটি টাকার কাঁচামাল ছিল, যা বিক্রি করে দেয়া হয়।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্যাংকে বন্ধক রয়েছে জেনেও বাকের হোসেন, জামির হোসেন, জরিনা আক্তার ও ওমর ফারুক জমি কিনে ফখরুল ইসলাম ও ফাতেমা ইসলামকে তা আত্মসাতে সহযোগিতা করেছেন। একই সঙ্গে ব্যাংকের কাছে বন্ধকি জমি বিক্রি করে আত্মসাতের সঙ্গে দলিল লেখক সানোয়ার হোসেনও জড়িত।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *