কারাগার থেকে বিএসএমএমইউ তে বিএনপি চেয়ারপারসন
তৌফিক ইমাম,
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (বিএসএমএমইউ) ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর নাজিমুদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে এ হাসপাতালে নেয়া হয় তাকে। সেখানে তার চিকিৎসায় নতুন বোর্ড গঠন করা হয়েছে।
কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে গতকাল খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে পাঠানোর ঘণ্টাখানেক পর নবগঠিত বোর্ডের সদস্যরা তার স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ করে ব্যবস্থাপত্র দেন। এর কিছুক্ষণ পরই বিএনপি চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থার সর্বশেষ পরিস্থিতি জানাতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিশেষ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। সেখানে খালেদা জিয়া যেসব রোগ ও স্বাস্থ্যগত সমস্যায় ভুগছেন, তা তুলে ধরেন বিএসএমএমইউর পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে মাহবুবুল হক।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার হাত ও পায়ের জয়েন্টে ব্যথা আছে। তার ডায়াবেটিসের মাত্রা কিছুটা বেশি। খাওয়ায় অরুচি আছে। তার ঘুমও কম হচ্ছে। তিনি নিজে হাঁটাচলা করতে পারেন না। অন্যের সাহায্য নিয়ে তাকে হাঁটতে হচ্ছে।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ড পুনর্গঠন করা হয়েছে জানিয়ে বিএসএমএমইউর পরিচালক বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসার জন্য গঠিত আগের মেডিকেল বোর্ডের প্রধান আবদুল জলিল অবসরে যাওয়ায় গত ২৮ মার্চ মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক জিলান মিয়া সরকারের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড পুনর্গঠন করা হয়েছে।
এ বোর্ডকে সহায়তার জন্য খালেদা জিয়ার দুজন ব্যক্তিগত চিকিৎসকও রয়েছেন। তাকে ৬২১ নম্বর কেবিনে রাখা হয়েছে। এছাড়া ৬২২ নম্বর কেবিনে তার ব্যক্তিগত লোকজন আছে।
চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেয়ার মতো কিছু পাননি জানিয়ে এ কে মাহবুবুল হক বলেন, আমরা এখনো এমন কিছু পাইনি যার জন্য তার বিদেশে চিকিৎসার প্রয়োজন আছে। এখানেই সব চিকিৎসা দেয়া সম্ভব। কবে তিনি এখান থেকে আবার কারাগারে ফিরে যাবেন জানতে চাইলে পরিচালক বলেন, স্বাস্থ্যের উন্নতি হলে তিনি চলে যাবেন।
৭৪ বছর বয়সী খালেদা জিয়া আর্থ্রাইটিসসহ বয়সজনিত বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছেন। এ কারণে তাকে বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর দাবি জানিয়ে আসছে বিএনপি। গতকাল খালেদা জিয়াকে বিএসএমএমইউতে স্থানান্তরের পর দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল আবারো একই দাবি জানান।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন ও শঙ্কিত। সেজন্যই বারবার বলছি, তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অবশ্যই বিশেষায়িত হাসপাতালে পাঠানো হোক। একই সঙ্গে তার চিকিৎসার জন্য ভালো একটি পরিবেশ যেন তৈরি করা হয়। তাকে যেন এমনভাবে রাখা না হয়, যাতে তিনি বন্দি অবস্থায় চিকিৎসা হচ্ছে, এমনটা মনে না করেন।
এদিকে খালেদা জিয়ার অসুস্থতার কারণে কারা কর্তৃপক্ষ সোমবার তাকে আদালতে হাজির না করায় তার বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানি পিছিয়ে দেয়া হয়। ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য ১০ এপ্রিল নতুন তারিখ ঠিক করে দিয়েছেন বলে খালেদা জিয়ার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার জানিয়েছেন।