স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটার তৈরী করছে ওজোপাডিকো

আসাদুজ্জামান,

খুলনা, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার গ্রাহকদের জন্য স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটার তৈরীর প্রকল্প হাতে নিয়েছে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেড (ওজোপাডিকো)।

সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে ওজোপাডিকো চীনের হেক্সিং কোম্পানীর সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ২৮ কোটি ৬০ লাখ টাকা। প্রকল্পের ৫১ শতাংশ মালিকানা ওজোপাডিকোর এবং বাকি ৪৯ শতাংশের মালিকানা হেক্সিং কোম্পানীর।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আগামী তিন মাসের মধ্যেই ২১ জেলার গ্রাহকদের মধ্যে স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটার সরবরাহ করা শুরু হবে। চলতি বছরের মধ্যে ওজোপাডিকোর সব গ্রাহককে স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটারিংয়ের আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

খুলনা মহানগরীর জিরো পয়েন্ট সংলগ্ন একটি ভাড়াবাড়ীতে প্রকল্পের কার্যক্রম প্রাথমিকভাবে শুরু করা হয়েছে। শিগগিরই নিজস্ব জমিতে ওজোপাডিকো পরবর্তী কার্যক্রম শুরু করবে। একটি সূত্র জানায়, গ্রাহক সেবার মান বৃদ্ধি, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়া ও দেশের সব গ্রাহককে স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটারের আওতায় আনার লক্ষ্যে সরকারী উদ্যোগের অংশ হিসেবে পদ্মার এপারের ২১ জেলা নিয়ে গঠিত ওজোপাডিকো সম্প্রতি এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

প্রি-পেমেন্ট মিটারিং প্রজেক্ট ফর খুলনা সিটি ফেজ-১ এর আওতায় ওজোপাডিকো এর আগে ৭৩ হাজার গ্রাহককে বিদেশ থেকে আমদানী করা স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটার সরবরাহ করেছে।
সুত্রমতে, এবার প্রতিষ্ঠানটি যৌথ মালিকানায় স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটার তৈরী করে এবছরের মধ্যে কোম্পানীর আওতাধীন ২১ জেলার বাকি গ্রাহকদেরও প্রি-পেমেন্ট মিটার দেয়া শেষ করবে।

স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটার তৈরী প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো: তোফাজ্জেল হোসেন বাসসকে জানান, চারটি প্যাকেজে মোট পাঁচ লাখ গ্রাহককে স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটার সরবরাহ করার লক্ষ্য নিয়ে আমাদের মিটার তৈরীর প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে।
ওজোপাডিকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী শফিক উদ্দিন জানান,বিদেশ থেকে আমদানী করা প্রি-পেমেন্ট মিটারে খরচ বেশী হতো, তাই স্থানীয়ভাবে স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটার তৈরী হলে একদিকে সরকারের খরচ কমবে, পাশাপাশি গ্রাহকরা খুব উপকৃত হবেন।এছাড়া আমদানী নির্ভর স্মার্ট প্রি-পেইড মিটার এর কোন সমস্যা দেখা দিলে স্থানীয়ভাবে মেরামত করার কোন সুযোগ নেই।তাই স্থানীয়ভাবে তৈরী হলে মেরামতের পাশাপাশি আধুনিক টেকনোলজীর সাথে তাল মিলিয়ে চলা যাবে।চীনের সাথে সম্পদিত চুক্তিতেও বিষয়টির বিশদ উল্লেখ রয়েছে।জয়েন্ট ভেঞ্চার কোম্পানীর সুাবধা এটি। প্রয়োজনবোধে মিটার রিপ্লেসমেন্ট-এর সুযোগ থাকবে।এর আগে বসানো আমদানী নির্ভর মিটারে এই সুযোগ ছিল না।

ওজোপাডিকোর সচিব ও স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটার প্রকল্পের পরিচালক (অর্থ) মো: আব্দুল মোতালেব জানান, ডিজিটাল ব্যবস্থা গড়ার লক্ষ্য নিয়ে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সে লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে ওজোপাডিকো। প্রথম দিকে গ্রাহকদের মধ্যে প্রি-পেমেন্ট মিটারে ক্ষোভ ও বিরুপ প্রতিক্রিয়া থাকলেও এখন সকলেই এই ডিজিটাল উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। যেহেতু প্রি-পেমেন্ট মিটারের চাহিদা বাড়ছে সেহেতু স্থানীয়ভাবে মিটার উৎপাদনের মাধ্যমে একদিকে ওজোপাডিকোকে আরো লাভজনক পর্যায়ে নেয়া সম্ভব হবে অপরদিকে গ্রাহকসেবাও উন্নত হবে।সেই সাথে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটার আগামীতে বিদেশে

ও রপ্তানী করা যাবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটারের সুবিধার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, বিদ্যুৎ শর্ট সার্কিট থেকে দুর্ঘটনারোধ,মাসিক বিল সহজীকরণ, মিটার টেম্পারিং বা বিদ্যুৎ চুরি বন্ধ, যে কোন স্থানে বসেই মোবাইল এসএমএস-এর মাধ্যমে মিটার রিচার্জ করার সুযোগ ছাড়াও ১০০ টাকা পর্যন্ত জরুরী ব্যালান্স নেয়া এবং ছুটির দিনে ব্যালান্স শেষ হলেও এই মিটার বন্ধ হবে না। তাছাড়া প্রতিটি মিটারের সাথেই বাংলা ভাষায় অপারেটিং ম্যানুয়াল প্রদান করা হবে। যার সাহায্যে গ্রাহকরা সহজেই বিদ্যুৎ ব্যবহারের পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে পারবেন।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *