ফায়ার সার্ভিসের জন্য কেনা হবে বিশেষ হেলিকপ্টার: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
বিশেষ প্রতিনিধি,
জরুরী উদ্ধার ও আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য ফায়ার সার্ভিসের জন্য বিশেষ ধরনের হেলিকপ্টার কেনা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। বুধবার (৩ এপ্রিল) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত আইনশৃঙ্খলা সম্পর্কিত সভায় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রীর পরিকল্পনা অনুযায়ী ফায়ার সার্ভিসের জন্য বিশেষ ধরনের হেলিকপ্টার ক্রয় করা হবে, যা দিয়ে উদ্ধার এবং আগুন নিয়ন্ত্রণ দুই কাজই হবে। এছাড়া ফায়ার সার্ভিসকে আরও আধুনিকায়নের কাজ অব্যাহত রয়েছে। ফায়ার সার্ভিসে কিছু বৈষম্য রয়েছে, এটাও ঠিক করার কাজ অব্যহত রয়েছে। তাদের এখন ঝুঁকি ভাতাও দেওয়া হচ্ছে’।
এ সময় বনানীর এফ আর টাওয়ারের আগুন নিয়ন্ত্রণে ও উদ্ধারকাজে ব্যবহৃত হেলিকপ্টারের বাতাসে আগুন আরও ছড়িয়ে পড়ার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সেদিনের অগ্নিকাণ্ডটা একেবারে পিক টাইমে ঘটেছিল। ফায়ার সার্ভিস ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছে। তখন ছাদের ওপর অনেক লোক উঠে গিয়েছিল। তাই তাদের উদ্ধার করার জন্য বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হয়েছিল। সব শক্তি ব্যবহার করে লোকজনকে উদ্ধার করতে চেয়েছিলাম। হেলিকপ্টারে কয়েকজনকে উদ্ধারও করেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য পানিও ঢেলেছিল’।
তিনি আরও বলেন, ‘আগুন নিয়ন্ত্রণ ও উদ্ধার কাজে ফায়ার সার্ভিস খুব তৎপর ছিল। সময়মতো গাড়ি সেখানে গিয়েছিল। কিন্তু উৎসুক জনতার জন্য উদ্ধারকাজ শুরু করতে ৫ থেকে ১০ মিনিট সময় লেগেছিল’। এ ধরনের ঘটনায় উৎসুক জনতা যেন ভিড় না জমায় সেজন্য সকলের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
বনানীর আগুন লাগার পরপরই দুইটি হেলিকপ্টার ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য ওপর থেকে পানি ও বালি ছেটায়। একপর্যায়ে ওই ভবনের ৫০ থেকে ৬০ ফুট উঁচুতে এসে ছাদে আশ্রউ নেওয়া দুইজনকে উদ্ধারও করে। তবে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মতে, উদ্ধার কাজে অংশ নেওয়া দুটি হেলিকপ্টারের বাতাসের কারণে একপর্যায়ে আগুনের তীব্রতা আরও বেড়ে যায়। বনানী অগ্নিকাণ্ডের সময় ঘটনাস্থলে আসা একটি হেলিকপ্টার ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার কাজে ব্যাঘাত ঘটায় উল্লেখ করে তারা বলেন, ‘এ ধরনের আগুনে হেলিকপ্টারের ব্যবহার উপকারের চেয়ে অপকার বেশি। কর্তৃপক্ষের চিন্তাভাবনা ছিল যেহেতু অনেকে ছাদে আছেন, তাদের জীবন বাঁচাতে হেলিকপ্টার ব্যবহার করা যেতে পারে। দুই থেকে তিনবার হেলিকপ্টার যখন একটু বেশি নিচে নামে তখন প্রচুর বাতাস হয়, আগুনের তীব্রতা তখন বেড়ে যায়। পরে যখন আমরা তাদের বলি যে, আগুন বাড়ছে তখন হেলিকপ্টার চলে যায়। একই ঘটনা ঘটেছিল বসুন্ধরা সিটির অগ্নিকাণ্ডেও’।
উল্লেখ্য, গত ২৮ মার্চ (বৃহস্পতিবার) রাজধানীর বনানীর এফ আর টাওয়ারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড হয়। এতে এক শ্রীলংকান নাগরিকসহ মোট ২৬ জন নিহত হন। আহত হন আরও ৭৩ জন। ভবনের ইলেকট্রনিক যন্ত্র কিংবা রান্নাঘরের ওভেন থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়।