স্যানিটেশন ও হাইজিন সেবা নিশ্চিতে কাজ করছে সরকার : এলজিআরডি মন্ত্রী
সবার জন্য উপযুক্ত স্যানিটেশন ও হাইজিন সেবা নিশ্চিত করতে সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। শনিবার (৭ এপ্রিল) রাজধানীর গুলশানে স্পেক্ট্রা কনভেনশন সেন্টারে ‘শহরব্যাপি অন্তর্ভুক্তিমূলক স্যানিটেশন (সিটি ওয়াইড ইনক্লুসিভ স্যানিটেশন -সিডব্লিউআইএস) এর উপর জাতীয় পর্যায়ের পরামর্শ ও পর্যালোচনা সভায় প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি একথা বলেন। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, আইটিএন-বুয়েট ও বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন যৌথভাবে এ সভার আয়োজন করে।
বিশ্বব্যাপি স্যানিটেশনের সকল ক্ষেত্রে সমন্বিতভাবে মোকাবেলার জন্যে সিডব্লিউআইএস -এর ধারণা এখন সর্বত্র প্রয়োগ হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সিডব্লিউআইএস সকলের জন্য পর্যাপ্ত, উপযুক্ত স্যানিটেশন এবং হাইজিন সেবা নিশ্চিত করার পদক্ষেপগুলো নিয়ে কাজ করে। সঠিক প্রযুক্তি সহকারে ব্যাপক পরিকল্পনা এবং রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি উভয়ই এক্ষেত্রে একই রকম গুরুত্বপূর্ণ।
এলজিআরডি মন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের সুদৃঢ় পদক্ষেপ ও প্রতিশ্রুতি, আর্থিক বরাদ্দ এবং অন্যান্য সহায়তা, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাসমুহের আর্থিক সহযোগিতাসহ দেশের জনগনের পাশে উপস্থিতি, বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে সিডব্লিউআইএস এ আমাদের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্যে ক্যাপাসিটি বিল্ডিং প্রোগ্রাম এবং অন্যান্য সাপোর্ট, স্যানিটেশন সেবা বাস্তবায়নকারী লোকাল গর্ভনমেন্ট ইন্সটিটিউশন সমূহের প্রতিশ্রুতি, ডিপিএইচই, এলজিইডি, ওয়াসাসহ বাস্তবায়নকারী সংস্থা সমূহের গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকরী ভূমিকা এবং জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক এনজিওসমূহ, যারা প্রত্যশ্যা ও পরোক্ষভাবে বিভিন্ন শহরকে সিডব্লিউআইএস শহরে পরিণত করার জন্যে কাজ করে যাচ্ছেন, তাদের কারণে বাংলাদেশে শহরভিত্তিক পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশ উন্নয়নের সূচনা ঘটেছে।
যেকোন দেশের সুস্বাস্থ্য ও পরিবেশ উন্নয়নে উন্নত স্যানিটেশন ব্যবস্থার গুরুত্বারোপ করেন মন্ত্রী। স্যানিটেশন ও হাইজিন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরনে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে এলজিআরডি মন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ সরকার বর্তমানে পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনার প্রাতিষ্ঠানিক এবং আইনি কাঠামো (আইআরএফ-এফএসএম) বাস্তবায়নের জন্য একটি জাতীয় কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ করছে। এটাই উপযুক্ত সময় সিডব্লিউআইএস এর ধারণা এবং প্রয়োজনীয় কর্মপ্রণালীকে এই জাতীয় কর্মপরিকল্পনায় অন্তর্ভ‚ক্ত করার। পৌরসভা পর্যায়ের জাতীয় কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। আমরা ঈডওঝ এর আলোকে এই খসড়া কর্মপরিকল্পনাটি কে রিভাইস করতে পারি এবং সিডব্লিউআইএস এর জন্য প্রয়োজনীয় কার্যপ্রনালী অন্তর্ভ‚ক্ত করতে পারি।
এলজিআরডি মন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে ৪টি পৌরসভা (ফরিদপুর, কুষ্টিয়া ঝিনাইদহ এবং বেনাপোল), যেখানে পূর্বে পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনা বা এফএসএম বাস্তবায়ন হচ্ছিল, সেগুলো সিডব্লিউআইএস শহরে পরিণত হওয়ার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। ঢাকা ওয়াসা ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের সহায়তায় ঢাকাকে সিডব্লিউআইএস শহরে পরিণত করার জন্য চেষ্টা শুরু করেছে। যেহেতু সিডব্লিউআইএস পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনার থেকে ক্রমেই এগিয়ে যাচ্ছে, আমাদেরও উচিত স্যানিটেশন সেবা নিশ্চিত করার জন্যে শুধুমাত্র পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনা থেকে সরে এসে সম্পূর্ণ শহরে সমন্বয়ের ভিত্তিতে স্যানিটেশন সেবা নিশ্চিত করণের দিকে এগিয়ে যাওয়া।’
শহরব্যাপি সমন্বিত স্যানিটেশন এর ধারণাকে সকলের সাথে পরিচিত করার উদ্দেশ্যে এবং সিডব্লিউআইএস কীভাবে টেকসই উন্নয়ন লক্ষমাত্রা (এসডিজি) ৬.২ অর্জনে অবদান রাখতে পারে সে লক্ষে আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. সাইফুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব এস.এম. গোলাম ফারুক, গেস্ট অব অনার হিসাবে ছিলেন বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক ড. রুশান রাজ শ্রেষ্ঠা।
এছাড়াও অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভার মেয়র, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা, ঢাকাওয়াসা, ডিপিএইচই, এলজিইডি, মিউনিসিপ্যাল অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তা, সেক্টর প্রফেশন্যাল এবং প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিবৃন্দ।