পর্যায়ক্রমে ব্রড গেজ হবে দেশের সব রেললাইন: প্রধানমন্ত্রী
গোলাম রব্বানী,
লিগ্যাল ভয়েস : দেশের সব মিটার গেজ রেললাইনকে পর্যায়ক্রমে ব্রড গেজে রূপান্তরের কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া রাজধানীর বাইরে সরকারি কর্মকর্তাদের পরিবারসহ বসবাস করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে গতকাল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এসব অনুশাসন দেন প্রধানমন্ত্রী। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।
সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রকল্পের জন্য ধনী কিংবা দরিদ্র ও অসহায় মানুষদের জমি অধিগ্রহণ করা যাবে না। একান্ত নিরুপায় হলে তিন গুণ দাম দিতে হবে। নদী খননের জন্য ড্রেজিং কার্যক্রম নিয়মিতভাবে পরিচালনা করতে হবে।
গতকালের একনেকে ১৮ হাজার ১৯১ কোটি টাকা ব্যয়ে সাতটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৬ হাজার ৬২২ কোটি ৪৩ লাখ টাকা ও প্রকল্প ঋণ ১১ হাজার ৫৬৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা।
গতকাল অনুমোদন হওয়া প্রকল্পগুলোর একটি রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের আখাউড়া-সিলেট সেকশনের মিটার গেজ রেললাইনকে ডুয়েল গেজ রেললাইনে রূপান্তর’। চীন সরকারের জিটুজি অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ১৬ হাজার ১০৪ কোটি ৪৪ লাখ টাকা।
প্রতি কিলোমিটারে ব্যয় অন্যান্য প্রকল্পের চেয়ে বেশি কেন, এমন প্রশ্নের উত্তরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আমরা দেশের মানুষের ভালোর জন্য যেটি প্রয়োজন সেটিই চেয়ে থাকি। এর সঙ্গে কারিগরি বিষয়গুলো সরকারের বিভিন্ন মাধ্যম দেখে থাকে। তারা বিষয়গুলো নিয়ে পর্যালোচনা করেছে। আমরা যাচাই-বাছাই করেছি। এর চেয়ে বেশি ব্যয়ের রেকর্ড আছে। ফলে এ প্রকল্পে বেশি ব্যয়ের তথ্য একেবারেই সঠিক নয়। যেখানে যতটুকু প্রয়োজন আমরা সেটিই বরাদ্দ দিয়েছি।
এদিন অনুমোদিত অন্যান্য প্রকল্পের মধ্যে আছে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ২৪৪ কোটি ৩১ লাখ টাকা ব্যয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্পগু; সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের ২১৫ কোটি ৯ লাখ টাকা ব্যয়ে মাগুরা-শ্রীপুর জেলা মহাসড়ক বাঁক সরলীকরণসহ সম্প্রসারণ প্রকল্প এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ১৩৯ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ব্যয়ে খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের নতুন কার্যালয় ভবন ও অডিটোরিয়াম নির্মাণ প্রকল্প।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ৯১৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ব্যয়ে মিরসরাইয়ে ভারতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন প্রকল্প, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ৮৯ কোটি টাকা ব্যয়ে বিসিএসআইআর ঢাকা ও চট্টগ্রাম কেন্দ্রে নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর শুঁটকি মাছ প্রক্রিয়াকরণ এবং ইনডোর ফার্মিং গবেষণাসংক্রান্ত সুবিধাদি স্থাপন প্রকল্প এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ৪৭৯ কোটি ২৩ লাখ টাকা ব্যয়ে কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলার ঘুঘুমারী থেকে ফুলুয়ার চর ঘাট ও রাজিবপুর উপজেলা সদর (মেম্বার পাড়া) থেকে মোহনগঞ্জ বাজার পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙন থেকে বাম তীর সংরক্ষণ প্রকল্পও এদিন অনুমোদন দেয়া হয়েছে। তবে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের ১৮৩ কোটি টাকা ব্যয়ে বহুমুখী পাটপণ্য উৎপাদন ফ্যাক্টরি স্থাপন, ডেমরা, ঢাকা প্রকল্পটি অধিকতর যাচাই-বাছাইয়ের জন্য অনুমোদন দেয়া হয়নি।
গতকালের সভায় কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা সভায় অংশ নেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, এসডিজির মুখ্য সমন্বয়ক, পরিকল্পনা বিভাগের সচিব, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যরা, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।