ময়নাতদন্ত শেষে নুসরাতের মরদেহ নেয়া হয়েছে সোনাগাজীতে

লোপা রাতিব,

লিগ্যাল ভয়েস : ময়নাতদন্ত শেষে দগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির মরদেহ তার গ্রামের বাড়ি ফেনীর সোনাগাজীতে নেয়া হচ্ছে। বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হওয়ার কথা সাংবাদিকদের জানান ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন।

এরপর নুসরাতের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সেখান থেকে স্বজনরা লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সে করে মরদেহ নিয়ে সোনাগজীর উদ্দেশে রওয়ানা হন।

মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন জানান, যেহেতু শরীরের ৮০ শতাংশই পুড়ে গিয়েছিল। এ কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে বলেই প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে। তবে চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরিতে কিছুটা সময় লাগবে। এ জন্য ডিএনএসহ কিছু নমুনা সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে। সেসব পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে ময়নাতদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়া হবে।

রাত ৯টায় মৃত্যুর পর ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হতে এতোটা সময় লাগল কেন; এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ময়নাতদন্ত সকালে করতে হয়। এর আগে পুলিশের কিছু আনুষ্ঠানিকতা রয়েছে। সেগুলো সম্পন্ন হওয়ার পর আমরা মরদেহের ময়নাতদন্ত শুরু করি। স্বাভাবিকভাবে যেটুকু সময় লাগে এর মধ্যেই হয়েছে।

এর আগে বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় নুসরাতের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঢামেকের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন।

ফেনীর সোনাগাজীতে মাদ্রাসা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। গত শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।

গত ২৭ মার্চ অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে মামলা করেন মেয়েটির মা। মামলা প্রত্যাহারে রাজি না হওয়ায় ছাত্রীটির গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ওই দিনই গুরুতর আহত অবস্থায় ওই মাদ্রাসাছাত্রীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।

ঘটনার দিন প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সেই দিন নুসরাত জাহান আরবি প্রথমপত্র পরীক্ষা দিতে মাদ্রাসায় যান। পরে তিনি প্রকৃতির ডাকে বাথরুমে যায়। সেখানে থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাকে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজউদ্দৌলার অনুগত কয়েক দুর্বৃত্ত ছাদে নিয়ে যায়। সেখানে তার গায়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। তার আর্তচিৎকারে শিক্ষকরা এসে তাকে উদ্ধার করে।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *