স্বর্ণ আমদানির সময় বাড়ানো হবে : এনবিআর চেয়ারম্যান

সাইদুর রনি,

লিগ্যাল ভয়েস : স্বর্ণ আমদানি নীতিমালা কার্যকর করার প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি এখনও পুরোপুরি সম্পন্ন না হওয়ায় স্বর্ণ আমদানির ঘোষণার সময় আগামী তিন মাস বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূইয়া।

মঙ্গলবার প্রাক-বাজেট আলোচনায় বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে তিনি একথা বলেন। এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, স্বর্ণ আমদানির ঘোষণার সময় আগামী তিন মাস বাড়ানো হবে। এজন্য এক সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক ও শিল্প মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয়া হবে।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় রাজস্ব ভবন সভাকক্ষে প্রাক-বাজেট আলোচনায় বাংলাদেশ এগ্রো প্রসের্সস এসোসিয়েশন (বাপা), ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ এসোসিয়েশন বাংলাদেশ, বিডার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ক্রপ প্রোটেকশন এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ ট্যানার্স এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ অটো ব্রেড বিস্কুট ম্যানুফ্যাক্চারার্স এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ ব্রেড, বিস্কুট ও কনফেশনারি প্রস্তুতকারক সমিতি, এগ্রিকালচারাল মেশিনারি ম্যানুফ্যাক্চারার্স এসোসিয়েশনসহ আরো কয়েকটি ব্যবসায়ী সমিতির প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।

বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির সহ-সভাপতি এনামুল হক খান বলেন, ‘স্বর্ণ নীতিমালা কার্যকর করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল কিন্তু এনবিআর ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রস্তুতি না থাকায় সেটা হচ্ছে না, এ অবস্থায় বাংলাদেশ ব্যাংক আমাদের আমদানি লাইসেন্স দিচ্ছে না। আগামী মাসের ৮ তারিখের মধ্যে আমাদের যে গোল্ড আছে তার ডিক্লারেশন করতে হবে। এটা স্বর্ণ নীতিমালায় আছে।’

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, নীতিমালা কার্যকর অথবা স্বর্ণ ঘোষণা ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে লাইসেন্স পাওয়া যাবে না। আমদানি নীতিমালা কার্যকর না হলে ভ্যাট নেবে না। আমাদের সার্টিফিকেট দেবে না। পাশাপাশি ১ হাজার টাকার বিনিময়ে আমাদের দায়মুক্তির সার্টিফিকেট দেবে না। একইসাথে পূর্বের বছরের স্বর্ণের জন্য ১ হাজার টাকা দিলে নতুন বছরের ডিক্লারেশন চলে আসবে।

ইনকাম ট্যাক্সের বিষয়টি যতক্ষণ পর্যন্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমারা স্বর্ণের ডিক্লারেশন দিতে পারছি না। তাই, তিনি স্বর্ণ ঘোষণার সময় আরো তিন মাস বাড়ানোর দাবি করেন। এর প্রেক্ষিতে এনবিআর চেয়ারম্যান সময় বাড়ানোর কথা জানান।

জুয়েলার্স সমিতির সহ-সভাপতি বলেন, ধনীরা আমাদের দেশ থেকে স্বর্ণ কিনছে না। তারা ভারত থেকে স্বর্ণালঙ্কার কিনছে কারণ, দেশের বাজার থেকে স্বর্ণ কিনলে ৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হয়। আর বিদেশ থেকে ১০০ গ্রাম স্বর্ণ আনতে কোনো কর দিতে হয় না। ফলে, তারা বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ নিয়ে আসছে। তিনি এই ভ্যাট হার কমানোর প্রস্তাব করেন।

মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে একটি উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যেহেতু ফাইনেন্সিয়াল রিপোর্টিং অ্যাক্ট অনুসারে কাজ করতে হয়। আগে বিদেশ থেকে কে কোন রেটে স্বর্ণ আমদানি করতে পারবে সেটা নির্ধারিত ছিল। সে জন্য এটার ওপর কাজ করিনি। আমাদের পরিকল্পনা হলো ফাইন্যান্স অ্যাক্ট পহেলা জুলাই থেকে কার্যকর করা।

সংগঠনটির পক্ষ থেকে স্বর্ণ মূল্যবান ও স্পর্শকাতর ধাতু হওয়ায় স্বর্ণ বিক্রির ওপর ১ দশমিক ৫ শতাংশ হারে ভ্যাট নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়। পাশাপাশি, স্বর্ণ শিল্পের বিকাশের জন্য এর আমদানির উপর প্রতি ১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রামের (এক ভরি) জন্য সর্বমোট ১০০ টাকা কর আরোপের প্রস্তাব দেয়া হয়।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *