রাইড শেয়ারিং কোম্পানিগুলোতে চালকরা ভুয়া ঠিকানা দিয়ে নিবন্ধন করছে : পুলিশ
ভূঁইয়া আসাদুজ্জামান,
লিগ্যাল ভয়েস : অ্যাপসভিত্তিক রাইড শেয়ারিং কোম্পানিগুলোতে চালকরা ভুয়া ঠিকানা দিয়ে নিবন্ধন করছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ বিষয়গুলো গুরুত্ব দিয়ে দেখতে পুলিশের পক্ষ থেকে রাইড শেয়ারিং কোম্পানিগুলোকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আজ রোববার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) বিপ্লব কুমার সরকার তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।
ডিসি বিপ্লব কুমার জানান, দুর্ঘটনায় যদি রাইড শেয়ারিং কোম্পানি গুলোর কোন ধরনের গাফিলতি থাকে এবং তদন্তে যদি তার তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে আইননানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তিনি বলেন,গত ২৫ এপ্রিল সকালে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাহমিদা হক লাবণ্য (২১) নিহত হওয়ার পর তাকে বহনকারী উবার বাইকার সুমনকে ২৬ এপ্রিল রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে এবং সর্বশেষ গতকাল শনিবার কাভার্ডভ্যানসহ চালক আব্দুর রহমানকে আশুলিয়া থেকে গ্রেফতার করে শেরে বাংলা নগর থানা পুলিশ।
তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার বিপ্লব কুমার বলেন, গত ২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর কলেজ গেটে অবস্থানকালে তার থেকে পাঁচ মিনিটের দূরত্বে অবস্থানকারী একজন উবার কলারের (ফাহমিদা হক লাবণ্য) কল পেয়ে সকাল ১০টা ৩৬ মিনিটে সুমন তাকে ফোন দেন। লাবণ্য খিলগাঁও ছায়াবীথি মসজিদের সামনে যেতে চান জানিয়ে সুমনকে শ্যামলী ৩ নম্বর রোডের ৩১ নম্বর বাসার সামনে আসতে বলেন। সেখান থেকে লাবণ্যকে নিয়ে কলেজ গেট দিয়ে গন্তব্যে রওনা হন চালক।
তিনি বলেন, লাবণ্যকে বাইকে উঠিয়ে চালক বেপরোয়া গতিতে বাইক চালাচ্ছিলেন। বাইকটি জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের কাছাকাছি পৌঁছলে পেছন থেকে একটি কাভার্ডভ্যান বাইকটিকে ধাক্কা দেয়। এসময় বাইক থেকে পড়ে যান লাবণ্য। কাভার্ডভ্যানটি তার ওপর দিয়ে চালিয়ে পালিয়ে যায়। পথচারী ও বাইকার লাবণ্যকে নিয়ে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ডিসি বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, হাসপাতালে উবারের বাইকচালক সুমন যে ঠিকানা দিয়েছিলেন সেই ঠিকানা ছিল ভুয়া। এই ঠিকানায় তাকে পাওয়া যায়নি। উবারে রেজিস্ট্রেশনের জন্য সুমন যে ঠিকানা দিয়েছেন তাও ভুয়া। তাই তাকে কোথাও পাওয়া যায়নি। উবারে ভুয়া ঠিকানা দিয়ে রাইডার নিবন্ধন করে সড়কে বাইক চালানোর অনুমতি পায়। রাইড শেয়ারিং কোম্পানিগুলো কোনও যাচাই বাছাই ছাড়াই চালকদের অনুমতি দিচ্ছে।
তিনি বলেন, সুমন ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করায় তাকে খুঁজে পেতে পুলিশের সময় লেগেছে।
ঘটনার পর কাভার্ডভ্যানসহ চালক আব্দুর রহমান পালিয়ে যান উল্লেখ করে বিপ্লব কুমার বলেন, সড়কের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পাওয়া গেলেও সেগুলো স্পষ্ট ছিল না। তাই কাভার্ডভ্যানটি শনাক্ত করা যাচ্ছিল না। পরবর্তী সময়ে একটি সিসি ক্যামেরায় কাভার্ডভ্যানের গায়ে লেখা কোম্পানির নাম দেখে তাকে শনাক্ত করা হয়। এরপর আশুলিয়া থেকে তাকে (চালক) গ্রেফতার করা হয়।