বাজেট ঘোষণার দিন থেকে নতুন ভ্যাট আইন কার্যকর হবে
সাইদুর রনি,
লিগ্যাল ভয়েস : আসন্ন ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার দিন থেকে নতুন ভ্যাট আইন কার্যকর হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূইয়া।
তিনি বলেন,‘যেদিন বাজেট ঘোষণা হবে। সেইদিন থেকে বাজেট কার্যকর হবে। কোন কোন সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন বাজেট ঘোষনার দিন থেকে হয়। ভ্যাট আইনের ক্ষেত্রেও তাই হবে।’
বৃহস্পতিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় রাজস্ব ভবন সভাকক্ষে অর্থনৈতিক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনায় তিনি একথা বলেন।
সভায় এনবিআর সদস্য ফিরোজ শাহ আলম ও কানন কুমার রায়,ইআরএফ সভাপতি সাইফ ইসলাম দিলাল ও সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
নতুন ভ্যাট আইনে ভ্যাটের হার সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ পর্যন্ত থাকবে উল্লেখ করে মোশাররফ হোসেন বলেন,ভ্যাটের হার কেমন হবে অর্থমন্ত্রী ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে, তা নির্ধারণ করেছেন।ব্যবসায়ীরা তা মেনেও নিয়েছেন। ১৫ শতাংশ পর্যন্ত ভ্যাট হার থাকছে।
করপোরেট করের সুবিধা নিতে কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহার ২৫ শতাংশ,তালিকা বহির্ভূত কোম্পানির করহার ৩৫ শতাংশ। কোনও কোম্পানি যদি মনে করে করপোরেট কর বেশি, তাহলে ওই কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে কর সুবিধা নিতে পারে। কিন্তু কোম্পানিগুলো স্বচ্ছতা জবাবদিহিতার ভয়ে পুঁজিবাজারে আসতে চায় না।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন,পৃথিবীর সব দেশেই তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহার ২৫ শতাংশ এবং তালিকা বহির্ভূত কোম্পানির করহার ৩৫ শতাংশ। বাংলাদেশেও তাই আছে।তিনি আরো বলেন,মোট কর আহরণের ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ আসে করপোরেট কর থেকে। ফলে এই খাতে রাতারাতি পরিবর্তন আনা দেশের জন্য মঙ্গলজনক হবে না। করপোরেট কর কমানো হলে অন্য কোন খাত থেকে কর আহরণ করা যাবে, সেটিও ভেবে দেখতে হবে।
তিনি বলেন, পুঁজিবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে।এই নিয়ে আমরা কাজ করছি। তবে, কারা ক্ষতিপূরণ পাবে বা কিভাবে পাবে তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি বলে তিনি জানান।
কর শনাক্তকরণ নম্বরধারীর (টিআইএন) ক্ষেত্রে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করার বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন,অনেকে অনৈতিকভাবে টিআইএন নেয়। এটা যাতে বন্ধ হয়, এ বিষয়ে আমরা কড়াকড়ি আরোপ করব। পাশাপাশি যারা টিআইএন নেন তারা যাতে রিটার্ন দাখিল করেন,সেই ব্যবস্থাও করা হবে বলে তিনি জানান।
কর অব্যহতির সংস্কৃতি থেকে এনবিআর বেরিয়ে আসছে মন্তব্য করে মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমরা কর অব্যহতির সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসছি। এখন হাতে গোনা ২-১টি খাতে কর অব্যহতি রয়েছে।
শুধু তাই নয়, জনসেবামুলক কাজ ছাড়া কাউকে এখন কর অব্যহতি দেয়া হচ্ছে না।’
ইআরএফের পক্ষ থেকে করদাতাদের সুবিধার্থে করসেবা সহজীকরণ,কর সচেতনতা তৈরিতে এস এম এস এর মাধ্যমে প্রচারনা চালানো, প্রত্যক্ষ করের ক্ষেত্রে সংস্কার কার্যক্রম গ্রহণ, ট্রান্সফার প্রাইসিং সেলকে অধিকতর কার্যকর করা,এনবিআরের গবেষণা সেল শক্তিশালীকরণসহ একাধিক সুপারিশ তুলে ধরা হয়।