দারিদ্র্য বিমোচনে যাকাত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে: পরিকল্পনামন্ত্রী

ভূঁইয়া আসাদুজ্জামান,

লিগ্যাল ভয়েস : পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, দারিদ্র্য বিমোচনে যাকাত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে। সমতা ও নায্যতা ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিত্তবানদের পরিকল্পিত উপায়ে, প্রাতিষ্ঠানিকভাবে যাকাত প্রদানের আহ্বান জানান তিনি।

শনিবার রাজধানীর ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে (কেআইবি) ৭ম যাকাত মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সেন্টার ফর যাকাত ম্যানেজমেন্ট (সিজেডএম) একদিনের এই মেলার আয়োজন করেছে।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালে আমরা যখন ক্ষমতায় এসেছিলাম তখন দারিদ্র্যের হার ছিল ৪৪ শতাংশ। আমরা তা ২০ থেকে ২১ শতাংশে নামিয়ে আনতে পেরেছি। দেশে কোটিপতির সংখ্যা বাড়ছে, আয় বাড়ছে, এটি একদিকে ভালো খবর। তবে কোটিপতি বা আয় বৃদ্ধি পাওয়া মানুষের সঙ্গে দেশে আয় বৈষম্যও বাড়ছে। এটা একটি খারাপ দিক। সবকিছুই আমাদের মাথায় রাখতে হবে। তিনি বলেন, যাকাতের মাধ্যমে দারিদ্রতা দূর হতে পারে। তবে দেশের বিশাল একটি অংশ যাকাত বিষয়ে সচেতন নয় বলে তিনি মনে করে করেন।

এবারের দিনব্যাপী যাকাত মেলায় বিভিন্ন স্টলের মাধ্যমে যাকাত সংক্রান্ত পরামর্শ ডেস্ক, বিভিন্ন ইসলামিক বই ও যাকাতভিত্তিক বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরা হয়েছে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য রাখেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিচারপতি আব্দুর রউফ, সাবেক এনবিআর চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ, ইসলামি ব্যাংক কনসালটেটিভ ফোরাম এর ভাইস চেয়ারম্যান এ কে এম নুরুল ফজল বুলবুল প্রমুখ। মেলা উপলক্ষে ‘আয় বৈষম্য কমাতে যাকাত ও কর’ শীর্ষক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে বক্তারা জানান, দেশে ৩০ হাজার কোটি টাকা যাকাত আদায়ের সম্ভাবনা থাকলেও সরকারিভাবে আদায় হচ্ছে মাত্র কয়েক কোটি টাকা। ব্যক্তির নিজস্ব উদ্যোগে দেওয়া যাকাত বড় অবদান রাখছে না। এজন্য যাকাত আদায় ও বণ্টনে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর প্রতি তাগিদ দেন তারা।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেছেন, দেশে আয় বৈষম্য ধীরে ধীরে বাড়ছে। গিনি কো ইফিসিয়েন্ট সূচক দিয়ে আয় বৈষম্য পরিমাপ করা হয়, এই সূচকের হিসেবে বাংলাদেশে বৈষম্যের মাত্রা শূন্য দশমিক ৪৮। দশমিক পাঁচ হলে অতিমাত্রার বৈষম্য রয়েছে বলে ধরে নেওয়া হয়। আমরা সেই অবস্থানেই আছি। তিনি বলেন, দারিদ্রতা ও আয় বৈষম্য কমাতে যাকাত খুবই গুরুত্বপূর্ণ। করের ক্ষেত্রে যেমন অনেকে কর ফাঁকি দেয়, তেমনি অনেকে যাকাত ফাঁকি দেয়।

আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ বলনে, যাকাত ব্যবস্থপনার দুর্বলতার কারনেই দেশে বৈষম্য বাড়ছে। মুসলিম বিশ্বে বর্তমানে যে ক্ষুধা-দারিদ্র্য বিরাজ করছে, যাকাতের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে তা দূর করা সম্ভব।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *