তানিয়াকে (২৪) গণধর্ষণ ও হত্যা স্বীকার করে বাসটির চালক নূরু

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি,

লিগ্যাল ভয়েস : কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে স্বর্ণলতা পরিবহনের একটি বাসে নার্স শাহিনুর আক্তার তানিয়াকে (২৪) গণধর্ষণ ও হত্যা কথা স্বীকার করেছেন বাসটির চালক নূরুজ্জামান নূরু।রোববার কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত বিচারিক মুখ্য হাকিম আল মামুনের কাছে নূরুজ্জামান নুরু ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক এ জবানবন্দি দেন। পরে তাকে আদালতের নির্দেশে কিশোরগঞ্জ জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

কিশোরগঞ্জ পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের পক্ষ থেকে এসব তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদসহ ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন ও অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আসাদুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মামলার সিংহভাগ তথ্য পুলিশের কাছে এসেছে। সব কিছু খতিয়ে দেখে দ্রুত অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।

নুরুজ্জামান নূরুর স্বীকারোক্তির সূত্র ধরে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ৬ মে রাত আটটার পরে বাসটি কটিয়াদী পার হওয়ার পর একজন বৃদ্ধ যাত্রী বাস থেকে নেমে পড়লে তানিয়া একা হয়ে পড়ে। বাসটি বাজিতপুর উপজেলার বিলপাড় জামতলা নির্জন স্থানে একটি কলাবাগানের কাছে এলে বাসের সব জানালা লাগিয়ে দিয়ে নূরুজ্জামান নূরু প্রথমে তানিয়াকে ধর্ষণ করে। পরে হেলপার লালন মিয়া এবং বাসচালক নূরুজ্জামান নূরুর খালাতো ভাই ও বাসের অপর হেলপার বোরহান এই তিনজনে মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করে নার্স শাহিনূর আক্তার তানিয়াকে রক্তাক্ত করে। এই নৃশংস ঘটনাটিকে সড়ক দুর্ঘটনা হিসেবে চালিয়ে দিতে তানিয়াকে বাস থেকে নিচে ফেলে দেয়া হয়। এতে মাথা থেতলে গিয়ে গুরুতর আহত হয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে তানিয়া। তানিয়াকে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে রিকশা চালক জাকির মিয়া (২০) এবং একজন মোটর সাইকেল আরোহী এগিয়ে আসে। তখন নূরুজ্জামান ও তার সহযোগীরা মেয়েটি বাস থেকে নামতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে বলে তাদের জানান। তাই তাদের সাহায্যের প্রয়োজন নেই, তারাই মেয়েটির চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছেন বলে জানালে রিকশাচালক ও মোটর সাইকেল আরোহী চলে যায়। পরে তারা কাউন্টারে খবর দিলে কাউন্টারের লোকজন চলে আসে। এই অবস্থায় প্রথমে তানিয়াকে পিরিজপুর বাজারের সততা ফার্মেসীতে নিয়ে গেলে ফার্মেসীর লোক দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন।

এভাবে চিকিৎসার নামে রাত সাড়ে ৮টার থেকে সোয়া দুই ঘণ্টা পর রাত পৌনে ১১ টার দিকে স্বর্ণলতা পরিবহনের কটিয়াদীর কাউন্টার মাস্টার মো. রফিকুল ইসলাম রফিক এবং স্বর্ণলতা পরিবহনের সুপারভাইজার আল আমিন তানিয়ার নিথর দেহ কটিয়াদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, চারজনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এরমধ্যে এজহারভুক্ত নূরুজ্জামান নূরু (৩৯) ও লালন মিয়া (৩৩) গ্রেফতার হয়েছে।

সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে বকুল মিয়া ওরফে ল্যাংড়া বকুল, রফিকুল ইসলাম, খোকন মিয়াকে পুলিশ গ্রেফতার করার পর ৭ মে অতিরিক্ত মুখ্য বিচারক আল মামুন ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। মামলার অপর দুই আসামি আল আমিন (২৮) ও আবদুল্লাহ আল মামুন (৩৭)।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *