সৌদি বাজার নিয়ে ঈদের পর বৈঠক: ইমরান আহমেদ

সিনিয়র রিপোর্টার,

লিগ্যাল ভয়েস ডেস্ক : সৌদির শ্রমবাজারকে গতিশীল করতে ঈদের পর দেশটির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক হবে বলে জানিয়েছেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমদ। তিনি বলেন, ‘ঈদের পরে সৌদি থেকে প্রতিনিধিরা আসবেন। তাদের সঙ্গে জয়েন্ট টেকনিক্যাল কমিটির বৈঠক হবে। সেখানে সৌদির শ্রমবাজার নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা হবে।’

রবিবার ইস্কাটন গার্ডেনের অ্যাবাকাস কনভেনশন সেন্টারে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় আয়োজিত সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় ও ইফতার মাহফিলে তিনি এ কথা বলেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘কেউ আমাদের জন্য কিছু করে দিবে না। আমাদের নিজেদের করে নিতে হবে।’

মালয়েশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমবাজার সম্পর্কে প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমেদ বলেন, ‘মালয়েশিয়া বা মধ্যপ্রাচ্যে আমাদের বিরাট শ্রমবাজার। এখন অনেকটা স্থবিরতা আছে। একটু আটকে আটকে আছে; তবে একেবারে বন্ধ নয়। কেন এই অবস্থা সেটা নিয়ে কাজ করতে হবে। ইতিমধ্যে আমি অনেক দেশের সাথে কথা হয়ছে ।  সমস্যাগুলো চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি। এরই মধ্যে অনেক সমস্যা আমরা চিহিৃত করতে পেরেছি। সেগুলো সমাধানে নিয়ে যাওয়া আমার দায়িত্ব। আমি আশাবাদি মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার আবার চালু হবে।’

তিনি জানান, আগামী দুই থেকে তিনদের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে একটি দল মালয়েশিয়াতে যাবে। সেখানে তারা জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের (জেডব্লিউজি) বৈঠকে যোগ দিবে।

এর আগে গত ১৪ মে মালয়েশিয়া সফরকালে দেশটির মানবসম্পদমন্ত্রী কুলাসেগারন এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হাজী মুহিউদ্দিন বিন হাজি মোহা ইয়াসিনের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমদ। দুই দেশের মধ্যে আলোচনায় বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে মালয়েশিয়া ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে। সেই প্রেক্ষিতে এ মাসের শেষ দিকে দুই দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

প্রবাসীদের কল্যাণে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমি শ্রমিকদের বাঁচার দায়িত্ব নিয়েছি, মারার দায়িত্বনি নাই।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘মন্ত্রণালয় একা একা কোন কাজ করতে পারে না। যার জন্য আমরা বায়রার সহায়তা নিচ্ছি। বায়রা আমাদের আরেকটি অঙ্গ। যেহেতু তারা এই ব্যবসায় যুক্ত আছে। আর একটা অঙ্গ সাংবাদিকরা। আপনারা যেভাবে লিখে যাচ্ছিলেন সেভাবে লিখে যাবেন, এটাই প্রত্যাশা করছি। তবে মাঝে মাঝে পুরাতন সংবাদ পুনরায় লেখা বা ছাপানো হয়। এর পেছনে কী উদ্দেশ্য আমি বুঝি না। আমি চাইবো বর্তমানে যদি কোনো নেতিবাচক কিছু থাকে সেগুলো তুলে ধরেন। আমরা যদি ভুল করে থাকি ওই কথা তুলে ধরেন। সেগুলো কারেকশন করার চেষ্টা করব।’

প্রত্যেকটি উপজেলা থেকে বিদেশি কর্মী পাঠানোর ব্যাপারে সরকারের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমি মন্ত্রণালয়ে যোগ দেওয়ার পর একটা লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছি যে, প্রত্যেকটি উপজেলা পর্যায় থেকে বিদেশে কর্মী পাঠাতে হবে। এটা আমাদের নির্বাচনী ইশতেহার। আমরা কতদূর এগিয়ে আছি বা কোথায় আটকে আছি, এটা আমাদের বিবেচনায় আনতে হবে।’

সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন, প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে হলে সাংবাদিকদের বিকেল চারটার পর আসতে হয়। সচিবের সাক্ষাতও সব সময় পাওয়া যায় না। ফোনেও তারা কথা বলেন না। তাহলে সাংবাদিকরা প্রয়োজনীয় তথ্য কোথায় পাবে? জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমার দুয়ার আপনাদের জন্য সব সময় খোলা। তার মানে এই নয় যে, আপনার কেউ এলে আমি কাজ বন্ধ করে গল্প শুরু করবো। আমার আগে দায়িত্ব মন্ত্রণালয় পরিচালনা। তবে তথ্য জানার জন্য সাক্ষাত করতে হবে। সাক্ষাতের জন্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হবে। এই প্রক্রিয়া মেনে চললে অবশ্যই সাক্ষাৎ পাওয়া যাবে।

মালয়েশিয়ায় শ্রমিকদের মানবেতর জীবন-যাপনের বিষয়টি এক সাংবাদিক উল্লেখ করলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমার কাছে কেউ লিখিত অভিযোগ করলে আমি ব্যবস্থা নিবো। তারা আমার কাছে কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি।’

প্রবাসীকল্যাণ সচিব রৌনক জাহানের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তৃতা করেন বায়রার সভাপতি বেনজির আহমেদ, বিএমইটির মহাপরিচালক মো. সেলিম রেজা, বোয়েসেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মরণ কুমার চক্রবর্তী, অতিরিক্ত সচিব আহমেদ মনিরুছ সালেহীন, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের এমডি মাহতাব জাবীনসহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। সভায় যুগ্মসচিব শহীদুল আলম মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম নিয়ে একটি পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা তুলে ধরেন।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *