৩ বছরের বেশি সময় ধরে দায়িত্বরত রাষ্ট্রদূতদের বদলির ঘোষণা : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
কূটনৈতিক প্রতিবেদক,
লিগ্যাল ভয়েস ডেস্ক : পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কর্মরত প্রায় ৬০ জন রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারের মধ্যে অর্ধেকই মেয়াদোত্তীর্ণ। সরকারি নিয়ম হচ্ছে কোন কর্মকর্তাকে একই কর্মস্থলে তিন বছরের বেশি রাখা যাবে না। তিন বছর পর বদলি করতে হবে। অথচ তিন বছরের বেশি সময় ধরে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্বে আছেন প্রায় ৩০ জন কর্মকর্তা।
তিন বছর থেকে শুরু করে নয়-দশ বছর পর্যন্ত একই দেশে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করছেন এরা। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন সোমবার এক প্রেসব্রিফিংয়ে তিন বছরের বেশি সময় ধরে দায়িত্বরত রাষ্ট্রদূতদের বদলির ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, এখনো আমরা রাষ্ট্রদূত পর্যায়ে বড় ধরনের রদবদল করিনি। এখন থেকে তিন বছরের বেশি সময় ধরে কর্মরতদের বদলি করা হবে। অনেকে বহু বছর ধরে এক জায়গায় আছেন।
সেপ্টেম্বর মাসের আগেই তাদের বদলি করা হবে গতিশীল করা হবে। দুর্নীতি, অনিয়ম বা শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ রয়েছে এমন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সম্প্রতি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইরান ও লেবাননে কর্মরত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করে দেশে ফেরার নির্দেশ দিয়েছে। ইরানে রাষ্ট্রদূত একেএম মজিবুর রহমান ভুঁইয়া ও লেবাননে রাষ্ট্রদূত আবদুল মোতালেব সরকারের বিরুদ্ধে নৈতিক স্খলন ও আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠে বেশ আগে। সিনিয়র দুইজন কর্মকর্তা এসব অভিযোগের তদন্ত করেন। অভিযোগ গুলির সত্যতা মিলে। ইরানে নতুন রাষ্ট্রদূত হিসেবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক গাউসুল আজম সরকারকে নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বিদেশে কর্মরত রাষ্ট্রদূত, কর্মকর্তাদের নিয়োগ বদলি নিয়ে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। নিয়ম নীতি অনুসরণ না করেই কর্মকর্তাদের পোস্টিং ও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়। জেনেভা, বার্লিন ও কুয়ালালামপুরে কর্মরত তিনজন রাষ্ট্রদূতই চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে আছেন। মস্কোতে রাষ্ট্রদূত চুক্তিতে আছেন নয় বছর ধরে। এছাড়া জর্ডান, অস্ট্রিয়া, পোলান্ড, ডেনমার্ক, মেক্সিকো, নেপাল, কাতার, বেলজিয়াম, সংযুক্ত আরব আমিরাতে দায়িত্বরত রাষ্ট্রদূতগণ পাঁচ বছর বা বেশি সময় ধরে আছেন। এমনও রাষ্ট্রদূত আছেন চারটি দেশে কাজ করেছেন।
দশ থেকে পনের বছর ধরে বিদেশে আছেন এমন কর্মকর্তার সংখ্যা অনেক। বিভিন্ন সময় সুনির্দিষ্ট অভিযোগে ঢাকায় ফিরিয়ে আনা কর্মকর্তাদের আবার বিদেশে পাঠানো হয়। সবমিলিযে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানান। তাদের মতে, একটি স্বার্থন্বেষী উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের ছত্রছায়ায় নিয়োগ বদলি নিয়ন্ত্রণ করে। এ চক্রটি পছন্দের বা অনুগতদের পুরস্কৃত আর অপছন্দের কর্মকর্তাদের হয়রানি করেছে গত কয়েক বছর ধরে।