দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন না হলে নিরাপত্তা শঙ্কা আছে : প্রধানমন্ত্রী

সংসদ প্রতিনিধি,

লিগ্যাল ভয়েস ডেস্ক : রোহিঙ্গাদের দ্রুত ফেরত পাঠাতে না পারলে দেশের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বুধবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে একথা জানান তিনি। ‘রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে কোনো অগ্রগতি আছে কি না’ সরকারি দলের সংসদ সদস্য নূর মোহাম্মদের এমন প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিয়নমারের এসব নাগরিক এখানে স্বেচ্ছায় আসেনি। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী তাদের বলপূর্বক বাস্তুভিটা থেকে উচ্ছেদ করেছে। নির্মম নির্যাতনের শিকার এসব মানুষের খাদ্য, বাসস্থান, স্বাস্থ্যসেবাসহ মৌলিক মানবিক সহায়তা অত্যন্ত জরুরি ছিল। এ জন্য তাদের সাময়িকভাবে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও স্থানীয় এনজিওর সঙ্গে সমন্বয় করে এই বিপুলসংখ্যক মানুষকে আশ্রয় ও মানবিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

শেখ হাসিনা বলেন, বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা অধিবাসীরা অসন্তুষ্টিতে ভুগছে। তাদের অনেক অভাব অভিযোগ রয়েছে। তাদের প্রত্যাবাসনে সরকার কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এদেরকে অতিদ্রুত ফেরত না পাঠালে আমাদের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়ে দু’দেশের মধ্যে যে চুক্তি হয়েছিল তাতে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরুর সম্ভাব্য তারিখ ছিল ২০১৮ সালের ১৫ নভেম্বর। সেকথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি না হওয়ায় জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকরা সেখানে স্বেচ্ছায় ফেরত যেতে রাজি হয়নি।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে এখন মিয়ানমার উল্টো অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, রাখাইন রাজ্যে যথাযথ সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টির জন্য বাংলাদেশ এবং আন্তর্জাতিক মহল মিয়ানমারে উপর চাপ অব্যাহত রেখেছে। কিন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য যে মিয়ানমার বিভিন্ন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে এবং বলছে যে বাংলাদেশের অসহযোগিতার কারণে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিলম্ব হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা বারবার বিভিন্ন ফোরামে বলেছি যে, এ সকল বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার জনগণের ফেরত মিয়ানমার সরকারের উপর বর্তায় এবং তাদেরকেই উদ্যোগী ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব জনমত ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় অব্যাহতভাবে আমাদের সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। জাতিসংঘ এ বিষয়ে মানবাধিকার কমিশনে একটি রিপোর্ট প্রেরণ করেছে। কিন্তু মিয়ানমার সরকার তাদেরকে এ বিষয়ে কাজ করতে দিচ্ছে না। মিয়ানমারের অসহযোগিতা সত্ত্বেও আমরা দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক দুটি পথই খোলা রেখেছি।

রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর দমন অভিযান শুরুর পর ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। আগে থেকেই বাংলাদেশে প্রায় চার লাখ রোহিঙ্গা ছিল।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *