অনুচর প্রিয়া সাহাকে বাংলাদেশের জমিনে পা দিতে দেওয়া হবে না : মুফতী ফয়জুল করীম
দ্বীন ইসলাম,
লিগ্যাল ভয়েস ডেস্ক : বর্ণবাদী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা প্রিয়া সাহার বাংলাদেশে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার আহবান জানিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ ফয়জুল করীম বলেছেন, দেশ্রদ্রোহী ও চরম সাম্প্রদায়িক আচরণ করা এদেশের রাষ্ট্রদ্রোহীদের অনুচর প্রিয়া সাহাকে বাংলাদেশের জমিনে পা দিতে দেওয়া হবে না।
১৯ জুলাই শুক্রবার মধ্যরাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, হিন্দু ধর্মের অনুসারী প্রিয়া সাহা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিশ্ব মোড়ল ও ইসলাম বিদ্ধেষী ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে দেশের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করে রাষ্ট্রদ্রোহীতার অপরাধ করেছেন। তার মতো একজন দেশবিরোধী দেশে প্রবেশের অধিকার রাখে না। দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন্য করে এই নারী বাংলাদেশে থাকার অধিকার হারিয়েছেন। তাই আমেরিকা থেকে ফেরার পথে বাংলাদেশ এয়ারপোর্টে তাকে আটকে দেওয়া উচিত। সাথে সাথে তার স্বামী দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক মলয় সাহাকে তার স্ত্রীর রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকান্ডে সহযোগীতার দায়ে আগামী কর্মদিবসের আগে তার পদ থেকে বহিস্কারেরও দাবি তুলেছেন তিনি।
মুফতী ফয়জুল করীম বিবৃতিতে বলেন, প্রিয়া সাহা দেশের খেয়ে দেশের পড়ে দেশবিরোধী এমন মিথ্যা অভিযোগ কেন দিলো তা খতিয়ে দেখতে হবে। তাকে সঠিক বিচারের আওতায় না আনা হলে দেশে কঠোর আন্দোলন করা হবে বলেও তিনি হুঁশিয়ারী উচ্চারন করেন। তিনি বলেন, এই নারী ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে যা বলেছেন তা তার একার বক্তব্য নয় বরং এ দেশের রাষ্ট্রবিরোধী কিছু দালাল ও দোসরদের শেখানো বক্তব্য সে মুখপাত্র হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে বলেছেন। তাই যারা তাকে পরিকল্পিতভাবে আমেরিকায় পাঠিয়েছে এবং দেশবিরোধী বক্তব্য দিতে বলেছে তাদেরকে খুজে বের করে অতি-শীগ্রই আইনের আওতায় না আনা হলে দেশের সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়বে।
প্রসঙ্গত : মহিলা ঐক্য পরিষদ’র কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রিয়া সাহা আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে অভিযোগ করে বলেন, বাংলাদেশের প্রায় ৩৭ মিলিয়ন (৩ কোটি ৭ লাখ) সংখ্যালঘুদেরকে বিভিন্ন ভাবে খুন, গুম করা হয়েছে। এমনকি সে নিজেও দাবি করেছে তার ঘর বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে মুসলিমরা। এবং এসবই হয়েছে রাষ্ট্রীয় মদদে মুসলিম ফান্ডামেন্টাল গ্রুপের মাধ্যমে। কিন্তু বাস্তবিকভাবে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা সবচেয়ে নিরাপদ এবং সুন্দর জীবন যাপন করে থাকে যা বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত বিষয়। কেবলমাত্র হিংসার বশবর্তি হয়ে দেশের বিরুদ্ধে এমন ভয়ংকর মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে সারাদেশে নিন্দিত হচ্ছেন এই প্রিয়া সাহা।
এদিকে প্রিয়া সাহার এই রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকান্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল বলেছেন, বাংলাদেশ নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ট ট্রাম্পের কাছে নালিশের বিষয়টি চক্রান্তের অংশ ছাড়া কিছু নয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশে এ ধরণের কোনো ঘটনা ঘটেনি। শুক্রবার সন্ধ্যায় স্বরাস্ট্রমন্ত্রী তার নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, “নালিশ সংক্রান্ত ভিডিওটি দেখলাম। এ ধরণের ঘটনা বাংলাদেশে ঘটেনি। আমাদের বাংলাদেশটা প্রধানমন্ত্রীর কঠোর পরিশ্রমের ফলে আমরা পেয়েছি, যেটা কিনা বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখেছিল। এই মহিলাটি আমাদের কাছেও কখনো এ ব্যাপারে আসেননি কিংবা পুলিশ প্রশাসনের কাছেও যাননি। আমাদের পুলিশ প্রশাসন অত্যন্ত সজাগ থাকেন যাতে কোথাও কোনো সংখ্যালঘু নির্যাতনের শিকার না হন”।
মন্ত্রী আরও বলেন, এই মহিলা যা বলেছেন তা চক্রান্তের অংশ বলে মনে করছি। আমি এখনো বলব, কোথাও এ ধরনের ঘটনা থাকলে আমাদের বলুক বা পুলিশকে বলুক।
কে এই প্রিয়া সাহা:
খোজ নিয়ে জানা গেছে, প্রিয়া সাহা মহিলা ঐক্য পরিষদ’র কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন, উনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ইউনিয়ন করতেন এবং রোকেয়া হলে থাকতেন। এখন একটি এনজিও আছে ওনার। বিভ্রান্তিমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য গতবছর তাকে মহিলা ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। নিজের বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার নাটক করে প্রচুর বিদেশি ফান্ড কালেক্ট করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তার গ্রামের বাড়ি পিরোজপুর জেলার নাজিরপুরের মাটিভাঙ্গার চরবানী এলাকায়।
তার স্বামী মলয় সাহা দূর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক। তাদের দুই মেয়ে কয়েক বছর ধরে আমেরিকায় বসবাস করছে বলে জানা গেছে। এমনকি প্রিয়া সাহা আমেরিকা যাওয়ার আগে মলয় সাহা নিজেই তাকে বিমানবন্দরে পৌঁছে দিয়েছে বলেও জানা গেছে। জানা যায়, সকালের ফ্লাইট মিস করায় ওই দিন রাতের ফ্লাইটে আমেরিকায় যান প্রিয়া সাহা। এসময় যুদ্ধাপরাধী আকবর কবিরের কন্যা তথাকথিত মানবাধিকার কর্মী খুশী কবির বিমানবন্দরে উপস্থিত প্রিয়ার সাহার এই দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের সঙ্গী হওয়ায় তার স্বামী মলয় সাহাকে অভিযুক্ত করে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন অনেকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় তার ব্যাপারে সর্বস্থরের জনগণ প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছেন। কঠোর প্রতিবাদ জানিয়ে তাকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন নেটিজেনরা।