বেআইনিভাবে ভিকারুননিসার ১৪ শিক্ষকের নিয়োগ বাতিল হচ্ছে

শাহনাজ পারভীন,

লিগ্যাল ভয়েস টোয়েন্টিফোর :
ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বেআইনিভাবে নিয়োগ পেয়েছেন ১৪ জন প্রভাষক ও প্রদর্শক। শিক্ষক নিবন্ধন আইন না মেনে প্রকাশ করা বিজ্ঞপ্তি অনুসারে ১০ জন প্রভাষক ও ৪ জন প্রদর্শক গত বছরের জুলাইতে নিয়োগ পেয়েছেন। এ প্রেক্ষিতে তাদের নিয়োগ বাতিলের সুপারিশ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর।

শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে, শিক্ষক নিবন্ধন আইন শর্ত শিথিল করে এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা লঙ্ঘন করে এসব শিক্ষক নিয়োগ দেয়ায় কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়নি।

সূত্র জানায়, গত তিন বছরের ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যন্ড কলেজের পারফরমেন্স অডিট কমিটির প্রতিবেদনে ১৪ প্রভাষক ও প্রদর্শকের অবৈধভাবে নিয়োগের তথ্যে উঠে এসেছে। তদন্ত কমিটির মতে, ভিকারুননিসা কর্তৃপক্ষ এসব প্রভাষক-প্রদর্শকদের নিয়োগে নিবন্ধন সনদের বালাই রাখেনি।

কিন্তু বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন আইনে উল্লেখ রয়েছে নিবন্ধিত ও প্রত্যয়নকৃত না হলে কোন শিক্ষক নিয়োগের জন্য যোগ্য বিবেচিত হবেন ন। সে প্রেক্ষিতে এ ১৪ প্রভাষক ও প্রদর্শকের নিয়োগ বাতিল করার সুপারিশ করেছে শিক্ষা অধিদপ্তর।

নিয়োগ বিধি সম্মত না হওয়ায় এসব শিক্ষক সরকারি বা বেসরকারি বেতন ভাতা পাবেন না বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে কমিটি।

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের পারফরমেন্স অডিট প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ১৪ মে একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রভাষক ও প্রদর্শক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, বাংলার তিনজন, ইংরেজির একজন, রসায়নের একজন, আইসিটি দুইজন, গণিতের দুইজন প্রভাষক নিয়োগ দিবে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া গণিতের দুইজন, জীববিজ্ঞানের একজন এবং পদার্থবিজ্ঞানের একজন প্রদর্শক নিয়োগ দেয়া হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, আবেদনকারীর এনটিআরসিএ থেকে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক নয়। এ বিজ্ঞপ্তি অনুসারে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ১ জুলাই ১০ জন প্রভাষক এবং ৪ জন প্রদর্শক নিয়োগ দেয়া প্রতিষ্ঠানটি।

বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের আইনের ১০(২) ধারায় উল্লেখ রয়েছে, কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রণীত শিক্ষকদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত, নিবন্ধিত ও প্রত্যয়নকৃত না হলে কোনো ব্যক্তি কোনো বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক হিসেবে যোগ্য বিবেচিত হবেন না। এ ছাড়া বিজ্ঞপ্তিতে গণিতের দুইজন প্রভাষক নিয়োগের কথা থাকলেও তিনজন প্রভাষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

তদন্তকালে নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফলের শিট, নিয়োগ কমিটির সুপারিশ, সুপারিশের অনুমোদন, গভর্নিং বডির রেজুলেশনসহ কোনো রেকর্ড কমিটিকে প্রদর্শন করেনি কর্তৃপক্ষ। তদন্ত কমিটির মতে, নিবন্ধন সনদ ছাড়া নিয়োগ বিধিসম্মত নয়। তাই এ ১৪ প্রভাষক-প্রদর্শকের নিয়োগ বিধি সম্মত না হওয়ায় তারা সরকারি বা বেসরকারি বেতন ভাতা পাবেন না।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ আইন-২০০৫ এর উপধারা (১) লঙ্ঘন করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের ২০ ডিসেম্বর জারি করা পরিপত্র লঙ্ঘন করে নিয়োগ দেয়া ১৪ শিক্ষক-প্রদর্শকের নিয়োগ বাতিলের সুপারিশ করা হল।

তবে, বিধি লঙ্ঘন করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ও মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা না মানায় প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডি বা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেনি অধিদপ্তর।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *