তালা ঝুলছে বিশ্ববিদ্যালয়ে
ঢাবি প্রতিনিধি,
লিগ্যাল ভয়েস ডেস্ক : অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে উত্তাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। বিশ্ববিদ্যালয়ে গতকাল হামলা, লাঞ্ছনা ও পাল্টাপাল্টি সমাবেশ হয়েছে। উপাচার্য কার্যালয়ের প্রবেশমুখে আন্দোলনকারীদের দেওয়া তালা ভেঙেছে ছাত্রলীগ। ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের দ্বারা হামলার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
আন্দোলন নিয়ে অবস্থানের প্রশ্নে প্রকাশ্যে বিতর্কে জড়িয়েছেন ডাকসুর ভিপি ও জিএস। সংকট সমাধানে প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে। ডাকসু ভিপি নূরুল হক নূর বলেন, ডাকসুকে পাশ কাটিয়ে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের দিয়ে তালা খুলিয়েছে।
তারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কোনো রকম আলোচনা করেনি। এর মাধ্যমে প্রশাসন আবারও প্রমাণ করেছে, তারা ছাত্রলীগের হাতে জিম্মি। এ ঘটনার প্রতিবাদে সাধারণ শিক্ষার্থী নিজেরাই কর্মসূচি পালন করবে বলেও জানান তিনি। আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে টানা তিন দিন ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ করে দিয়ে আন্দোলন করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
গতকালও বিশ^বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও একাডেমিক সব ভবনে তালা লাগিয়ে দেয় তারা। অধিভুক্তি সমস্যার স্থায়ী সমাধানের আশ্বাস দিয়ে আন্দোলনের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে ক্লাসে ফিরতে আহ্বান জানিয়েছিল ডাকসু। কিন্তু সেই আহ্বানকে আমলে না নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
সকাল থেকেই উপাচার্য ভবনের প্রবেশমুখে তালা দিয়ে কয়েকজন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী সেখানে অবস্থান নিয়েছিলেন। দুপুর ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার সামনে সমাবেশ করে ছাত্রলীগ।
সমাবেশের পর সাত কলেজের অধিভুক্তির বিষয়ে স্থায়ী সমাধানের দাবিতে উপ-উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিতে যায় ছাত্রলীগ।
এ সময় উপাচার্য ভবনের প্রবেশমুখে ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী এসে তালা ভাঙার চেষ্টা করলে শিক্ষার্থীরা তাতে বাধা দেন। এরপর ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে একটি মিছিল গেটের সামনে অবস্থান নিয়ে সেখানে থাকা শিক্ষার্থীদের তালা খুলে দিতে বলেন।
শিক্ষার্থীরা রাজি না হওয়ায় তাদের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ বাক-বিত-া চলতে থাকে। পরে শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দিয়ে তালা ভেঙে ভিতরে ঢোকেন তারা। পরে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহম্মদ সামাদের কাছে স্মারকলিপি দেন ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ।
আখতারের ওপর হামলা : ছাত্রলীগের স্মারকলিপি প্রদানের সময় মল চত্বরে হামলার শিকার হন ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন। তিনি অভিযোগ করেন, উপাচার্য কার্যালয়ের তালা ভাঙার পর আমি মল চত্বরে দাঁড়িয়েছিলাম। আমাদের কয়েক শিক্ষার্থীকে পাওয়া যাচ্ছিল না। তাদের জন্য কিছুটা বিলম্ব হচ্ছিল। তখন জহুরুল হক হল ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক রাব্বী হকের নেতৃত্বে হঠাৎ করে একদল ছাত্রলীগ কর্মী আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা করে। তারা আমার কাঁধে, পিঠে এবং কোমরে আঘাত করে। আমাদের সঙ্গে যে মেয়েরা ছিল তাদেরও লাঞ্ছিত করে। তিনি আরও বলেন, আমরা সেখান থেকে কোনো রকম দৌড়ে নিজেদের রক্ষাকরি।