রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশনজটের শেষ কোথায়

ক্যাম্পাস প্রতিনিধি,

লিগ্যাল ভয়েস টোয়েন্টিফোর :
সেশনজটের কবলে ক্যাম্পাস জীবন যেন শেষ হচ্ছে না বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থীদের। চার বছরের স্নাতক শেষ করতে সময় লাগছে পাঁচ থেকে ছয় বছর। এক বছরের স্নাতকোত্তর শেষ করতে শিক্ষার্থীদের অপেক্ষা করতে হচ্ছে প্রায় দুই বছর।

সময়মত সেমিস্টার শেষ না হওয়াতে চাকরির বাজারে হোঁচট খেতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। এ নিয়ে তারা হতাশ ও ক্ষুব্ধ। সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে প্রায়ই তারা ক্ষোভ ঝাড়ে।

সেশনজট সবচেয়ে বেশি কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান, ইংরেজি, বাংলা, ইতিহাস ও প্রত্বতত্ব গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা, উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগে।

এক বছর থেকে আড়াই বছর পর্যন্ত সেশনজটে রয়েছে এসব বিভাগের শিক্ষার্থীরা। তুলনামূলক কম সেশনজটে রয়েছে লোকপ্রশাসন বিভাগ, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ। বেশিরভাগ বিভাগের ২০১৩-১৪ইং শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা এখনও শিক্ষাজীবন শেষ করতে পারেনি। পড়ে আছেন স্নাতকে পর্যায়েই।

কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা জানান, সাড়ে তিন বছরেও দ্বিতীয় বর্ষ শেষ হয়নি তাদের। বিভাগটির অন্যান্য ব্যাচের চিত্র প্রায় একই। রয়েছে আড়াই থেকে তিন বছরের সেশনজট।

হিসাববিজ্ঞান বিভাগের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী অনিক আহমেদ বলেন, ‘সাড়ে ছয় বছরেও অনার্স (স্নাতক) শেষ করতে পারিনি। এখনো অষ্টম সেমিস্টারে পড়ে আছি। বিভাগটির অন্যান্য ব্যাচের চিত্র প্রায় একই। রয়েছে আড়াই থেকে তিন বছরের সেশনজট।’

শরিফুল ইসলাম নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘বেশিরভাগ শিক্ষার্থী নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা। অনেকে আছে টিউশন, আবার অনেকে ছুটির সময় দিনমজুরের কাজ করে পড়ালেখার খরচ চালায়। এই অবস্থায় সেশনজট আমাদের জন্য অভিশাপ হয়ে দাড়িয়েছে। চার বছরের স্নাতক শেষ করতে কোন বিভাগে সময় বেশি লাগছে এক থেকে দুই বছর। আবার কোনো কোনো বিভাগে তিন বছরের মত। এতে আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রে প্রবেশে পিছিয়ে পড়ছি।’

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি গাজী মাজহারুল আনোয়ার বলেন, ‘মূলত শিক্ষক স্বল্পতা, ল্যাবরুম সংকট, ক্লাস রুম সংকট এসব কারণেই সেশনজটের প্রকোপ বাড়ছে। দ্রুত এসব সমস্যার সমাধান না করতে পারলে আরো পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে।’

শিক্ষকদের আন্তরিকতায় কিছু বিভাগ সেশনজট কমিয়ে আনা হয়েছে দাবি করে অন্যান্য বিভাগগুলোও সেশনজট কমিয়ে আনতে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান এই শিক্ষক নেতা।

সেশনজটের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বলেন, ‘সেশনজট যেন না থাকে সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে প্রশাসন। সবাই আন্তরিক হলে সেশনজট নিরসন সম্ভব হবে।’

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *