সারাদেশে ২ হাজার ৩৬২টি কোরবানির পশুর হাটে কেনা-বেচা জমে ওঠেছে
স্টাফ রিপোর্টার,
লিগ্যাল ভয়েস টোয়েন্টিফোর : ইদুল আযহা উপলক্ষে সারাদেশে ২হাজার ৩৬২টি কোরবানির পশুর হাটে কেনা-বেচা জমে ওঠেছে। এরমধ্যে রাজধানী ঢাকায় গাবতলীসহ দুই সিটি কর্পোরেশনে ২৪টি পশুর হাটে আজ বিকেলে থেকে কেনা-বেচা বাড়ছে।
রাজধানীর দুই সিটি কর্পোরেশনের আওতায় ২৩টি ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) ১০টি এবং দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) ১৪টি পশুর হাট বসেছে। এবার পশুর হাটে সরকারিভাবে শতকরা ৬টা টাকা হারে হাসিল ধার্য করা হয়েছে।
রাজধানীর পশুর হাটগুলোতে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। প্রত্যেক হাটে পুলিশের কন্ট্রোল রুম ও ওয়াচ টাওয়ার বসানো হয়েছে। মানি এস্কর্ট ও জাল নোট শনাক্তকরণেও বসানো হয়েছে বিশেষ বুথ।
এছাড়া যারা হাট ইজারা নিয়েছেন, তাদের পক্ষ থেকে পশুর মল-মূত্র ও ময়লা নিয়মিত পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে। এবার উত্তরাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বন্যা হওয়ায় অনেক ব্যবসায়ী আগেভাগেই গাবতলী হাটে গরু নিয়ে এসেছেন।
পাবনা, সিরাজগঞ্জ, রাজশাহী, কুষ্টিয়া, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল ও দিনাজপুরসহ বিভিন্ন জেলা থেকে রাজধানীর বাজারে কুরবানীর পশু আসছে।
হাটের ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, ক্রেতাদের পছন্দের তালিকায় এবার বড় গরুর চেয়ে ছোট গরুর চাহিদা বেশি। কোরবানির জন্য মানুষ ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকার গরুই পছন্দ করছেন।
রাজধানীর উত্তরা পশুর হাট থেকে বাসস প্রতিনিধি মনির হোসেন জীবন জানান, আজ এখানে সবোচ্চ ৮ লাখ টাকায় একটি গুরু বিক্রি হয়েছে। কালা মানিক নামে এই গুরুটি ঢাকার একজন শিল্পপতি ক্রয় করেছেন বলে হাটের ইজারাদার জানিয়েছেন।
মানিকগঞ্জের নিত্য মহাজন নামে এক গরু ব্যবসায়ী বাসসকে বলেন, তিনি ১০টি গুরু নিয়ে এসেছেন।
এরমধ্যে ৫টি গুরু ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন। এই বাজারে মধ্য বয়সী গুরুর চাহিদা বেশি। উত্তরার হাটে ১ লাখ থেকে ১লাখ ৫০ হাজার টাকার মধ্যে গুরুর দাম হাকলেও মিন্টু নামে এক ব্যবসায়ী জানান, গুরুর দাম ৯০ থেকে ১ লাখের বেশি ওঠে না। তাই তিনি ১০ টি গুরু এখনো বিক্রি করতে পারেনি। এই হাটে রেজাউল নামে এক ব্যক্তি ৮১টি ছাগল নিয়ে বাজারে আজই এসেছেন। পাবনার ঈশ্বরদী থেকে তিনি ছাগল বিক্রি করতে উত্তরা হাটে হাসলেও বিক্রি এখন পর্যন্ত শুরু হয়নি।
তবে কাল ছাগল বিক্রি বাড়বে তিনি মনে করছেন। উত্তরা হাটে বিভিন্ন কারণে তিনটি গরু মারা গেছে।
রাজধানীর গাবতলী, উত্তর শাহজাহানপুর, কমলাপুর স্টেডিয়াম সংলগ্ন বিশ্বরোডের আশপাশের খালি জায়গায় স্থাপিত হাটসহ কয়েকটি হাট ঘুরে ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এবার হাটগুলোতে দেশি গরুর যোগান সবচেয়ে বেশি। রাজধানীর হাটগুলোতে পর্যাপ্ত দেশীয় গরু-ছাগল রয়েছে।
গাজীপুর থেকে বাসস প্রতিনিধি জানান, গাজীপুর মহানগরসহ বিভিন্ন উপজেলায় কুরবানীর পশুর হাট বেশ জমে ওঠেছে। ৭০ থেকে ৮০ হাজার এবং ৯০ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকার মধ্যে গুরু কেনাবেচা চলছে। মধ্যবয়সী গুরুর চাহিদা অনেক বেশি। আগামীকাল পশু কেনা-বেচা আরো বাড়বে বলে ক্রেতা-বিক্রেতারা জানান।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বেশি দাম পাওয়ার আশায় ব্যবসায়ী ও খামারিরা দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে রাজধানীতে গরু নিয়ে আসেন। এরমধ্যে কুড়িগ্রাম, জামালপুর, জয়পুরহাট, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ী, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, সাতক্ষীরা, যশোর, সুনামগঞ্জ, নীলফামারী, রংপুর, দিনাজপুরসহ বিভিন্ন জেলা থেকে পশু নিয়ে গাজীপুর ও ঢাকার বাজারে যাচ্ছে।