দশ হাজার ইএফডি মেশিন কেনার কার্যাদেশ দিল এনবিআর

সাইদুর রনি,

লিগ্যাল ভয়েস টোয়েন্টিফোর : মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) আদায়ে স্বচ্ছতা আনতে প্রযুক্তি নির্ভর ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) মেশিন কেনার কার্যক্রম শুরু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। প্রথম দফায় গতকাল রোববার দশ হাজার ইএফডি মেশিন কেনার কার্যাদেশ প্রদান করেছে সংস্থাটি। পর্যায়ক্রমে এক লাখ মেশিন কেনা হবে।
এ বিষয়ে ভ্যাট অনলাইন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে ইএফডি মেশিন চালুর ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। এর অংশ হিসেবে আমরা গতকাল দশ হাজার মেশিন কেনার কার্যদেশ প্রদান করেছি। চীন-ভিত্তিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এসজেডজেডটি মেশিন সরবরাহ করবে।’
তিনি বলেন, আশা করছি আগামী ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে মেশিন পেয়ে যাব। এরপর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এগুলো সরবরাহ করা হবে।

আগামী এক মাসের মধ্যে ব্যবসায়ীদের কাছে ইএফডি মেশিন পৌঁছে দেয়া সম্ভব হবে বলে তিনি জানান।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, ইএফডি ব্যবহার করলে পণ্য ও সেবা বেচাকেনায় ভ্যাট হিসাবের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা আসার পাশাপাশি ভ্যাট ফাঁকি রোধ করা সম্ভব হবে।
ভ্যাট ফাঁকি ঠেকাতে ডিপার্টমেন্টাল স্টোর থেকে শুরু করে ২৫ ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ইএফডি চালুর কথা জানিয়েছে এনবিআর। এর মধ্যে রয়েছে রেস্তোরা,ফাস্টফুড,মিষ্টান্ন ভান্ডার,আবাসিক হোটেল,কমিউনিটি সেন্টার,শপিং মল ইত্যাদি।
দশ হাজার ইএফডি মেশিন কেনায় সরকারের ব্যয় হচ্ছে ৩১৭ কোটি টাকা।

এনবিআর বলছে, এতদিন ধরে ভ্যাট আদায়ের ক্ষেত্রে সারাদেশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোয় ইলেকট্রনিক ক্যাশ রেজিস্ট্রার (ইসিআর) মেশিন ব্যবহার হতো। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সংবলিত এই ইএফডি মূলত ইসিআরের উন্নত সংস্করণ।

মুশফিকুর রহমান বলেন, দেশের অর্থনীতির আকার বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পণ্য ও সেবা খাত থেকে যে পরিমাণ ভ্যাট রাজস্ব আয় হওয়ার কথা ছিল ইসিআরের মাধ্যমে সে অনুযায়ী ভ্যাট আদায় করা সম্ভব হয়নি। তবে ইএফডি মেশিনে ভ্যাট ফাঁকির সুযোগ যেমন নেই তেমনি ব্যবসায়ীদের হয়রানিরও সুযোগ নেই। কেননা এই যন্ত্রটি এনবিআরের সার্ভারে সরাসরি যুক্ত থাকায় প্রতিটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রতিদিনকার বিক্রয়ের তথ্য সরাসরি এনবিআরের সার্ভারে চলে আসবে।

তিনি বলেন, এ কারণে একবার ইএফডিতে ইনপুট দেয়া হলে সেই তথ্য গোপন করার কোন সুযোগ নেই। ইসিআর মেশিন অফলাইন হওয়ায় অসাধু ব্যবসায়ীদের তথ্য আড়াল করার সুযোগ থাকে। আবার যেসব ব্যবসায়ী এনবিআরের স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী ইসিআর ব্যবহার করেন না। তাদের অনেক ফিচার অনুপস্থিত থাকে। এ কারণে ভ্যাট আদায়ে ইসিআরের তুলনায় ইএফডি মেশিন অনেক বেশি কার্যকর।

উল্লেখ্য, নতুন ভ্যাট আইন অনুযায়ী-বাংলাদেশের যেসব ব্যবসায়ীর বার্ষিক লেনদেন ৫০ লাখ টাকার বেশি অর্থাৎ যারা ভ্যাটের আওতাধীন তাদের অব্যশই ইএফডি মেশিন ব্যবহার করতে হবে।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *