নির্বাচন কমিশন ভবন অগ্নিকান্ডে আর্থিক ক্ষতি প্রায় ৪ কোটি টাকা
সিনিয়র রিপোর্টার/লিগ্যাল ভয়েস টোয়েন্টিফোর :
বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ভবনের বেজমেন্টে অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসির তদন্ত কমিটি। কমিটির তদন্ত রিপোর্টে এ তথ্য অনুযায়ী এ ঘটনায় আর্থিকভাবে তিন কোটি ৭৭ লাখ ২১ হাজার ১৬৯ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত সভা শেষে কমিটি ইসি সচিব মো. আলমগীরের কাছে এ প্রতিবেদন দাখিল করেন। এই প্রতিবেদনে ক্ষয়-ক্ষতির বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, ইভিএম কন্ট্রোল ইউনিট ৫৯টি, বেটারি ৪৭টি, ব্যালট ৭৮৯টি, মনিটর ১ হাজার ২৩৩টি, ক্যাবল ৫৫৭ সেট, মনিটরের ব্যাটারি ৬৪টি, ল্যাপটপ একটি ও বার কোড স্ক্যানার দুইটি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এসব ইভিএম সামগ্রীর আনুমানিক মূল্য তিন কোটি ২১ লাখ ২৮ হাজার ৪৮৩ টাকা।
এছাড়া অন্যান্য কিছু ইলেক্ট্রনিক সামগ্রীও ছিল। এর মধ্যে এসি ছিল ৯টি, সিলিং লাইন ৪৮টি, একটি প্রজেক্টর, হুইল চেয়ার ও অটবি চেয়ার ১৬টি, টেবিল তিনটি, ঘড়ি একটি, সুইচ বোর্ড ১৪টি, বিভিন্ন রকমের ৯টি প্লাগ, ওয়্যারিং চ্যানেল ২ হাজার ফিট, ফ্লোর টাইলস ৫০টি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এর মূল্য ৪০ লাখ ৪৫ হাজার ৭০০টাকা। পূর্ত ক্ষতি ১৫ লাখ ৪৬ হাজার ৯৮৬ টাকা। ইভিএম ও সব মিলিয়ে ৩ কোটি ৭৭ লাখ ২১ হাজার ১৬৯ টাকা।
এ বিষয়ে ইসির অতিরিক্ত সচিব মোখলেসুর রহমান বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছিল। আমরা আজ কমিশনের সচিবের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করেছি। তদন্তে ইলেকট্রিক শর্ট সার্কিট থেকেই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাতের বিষয়টি উঠে এসেছে।
ইসির জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের (এনআইডি উইং) মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত, সিসিটিভি ফুটেজসহ সব কিছু যাচাই বাছাই করে সেটিই উঠে এসেছে।
তিনি বলেন, যেখানে ইভিএম কাস্টমাইজড হয়ে থাকে, সেই জায়গাটিতে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে।
ঘটনাটি ঘটেছিল রাত ১০টা ২০ মিনিটের দিকে। সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায় রাত ১০ টা ৫০ মিনিটের দিকে ধোয়া দৃশ্যমান হয়। তাৎক্ষনিকভাবে যারা ছিলেন তারা ফায়ার সার্ভিস হেডকোয়ার্টারে ফোন করেন। পার্শ্ববর্তী নিকটস্থ মোহাম্মদপুর ফায়ার স্টেশন থেকে তারা প্রথম এখানে চলে আসেন এবং ছয়টি ইউনিট আধা ঘন্টার চেষ্টায় রাত ১২টার আগেই আগুন নেভাতে সক্ষম হয়। সেদিন রাতেই ছয় সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করা হয়।
তিনি বলেন, ইভিএম কাস্টমাইজ সেন্টারে সাড়ে চার হাজার ইভিএম মেশিন সেখানে ছিল। পরবর্তীতে সেখানে যে সংখ্যক যন্ত্রপাতি ছিলো সেগুলো গণনা করা হয়েছে। যেহেতু অনেক পানি দেওয়া হয়েছে, যেগুলো একেবারে ভস্মিভূত হয়েছে এবং একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে সেগুলোকে আলাদা করেছি। যেগুলো ব্যবহার উপযোগি বা নষ্ট হয়নি কার্টনের ভিতরে ছিল সেগুলোকেও আলাদা করেছি। সিভিল কিছু ক্ষতি হয়েছে, উপরের কাঁচ, দেয়াল ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু বিল্ডিংয়ের তেমন কোন ক্ষতি হয়নি।