‘প্রভাবিত হয়ে ব্যবস্থা না নিলে দুদক চেয়ারম্যানের সরে যাওয়া উচিত’
সাইয়্যেদ মোহাম্মদ রবিন/লিগ্যাল ভয়েস টোয়েন্টিফোর :
বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সদস্য সচিব ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নানা পর্যবেক্ষণ থাকার পরেও বেসিক ব্যাংকের তৎকালীন চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাচ্চুর বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়নি দুদক।
আমরা দেখেছি, একটি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে পায়তারা করা হচ্ছে তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ার। তিনি বলেন, দুদক চেয়ারম্যান যদি বলে থাকেন বা মনে করেন তিনি কোনো প্রভাবের কারণে বাচ্চুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেননি তাহলে উনি শপথভঙ্গ করেছেন। সে কারণে অবশ্যই তার পদ থেকে সরে যাওয়া উচিত।
আজ সোমবার সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ব্যারিস্টার তাপস এসব কথা বলেন। জবাবে দুদক কৌসুলি অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান বলেন, দুদক একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা। এটার চেয়ারম্যান নির্ধারণ করা হয় বাছাই কমিটির মাধ্যমে। উনি পদত্যাগ করবেন কিনা তা চেয়ারম্যানের একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার। সেটা তো আমি জানি না।
ব্যারিস্টার তাপস বলেন, আমরা লক্ষ্য করেছি দুদক কয়েক দফা ডেকে আব্দুল হাই বাচ্চুকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা করা হয়নি। তাই আমরা মনে করি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে দুর্নীতিবিরোধী ও শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছেন সেই প্রেক্ষিতে দুদকের এ বিষয়ে জবাবদিহিতা দরকার। কেন এখন পর্যন্ত বেসিক ব্যাংকের বাচ্চুর ব্যাপারে কোনো মামলা বা কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি তা জাতি জানতে চায়।
দুদক চেয়ারম্যান যদি মনে করেন, তিনি কারও কথায় প্রভাবিত হবেন না তাহলে বাচ্চুর বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তার ও জিজ্ঞাসাবাদে আশু পদক্ষেপ নেওয়া।
তিনি বলেন, বেসিক ব্যাংকের মাধ্যমে ফিনান্সিয়াল সেক্টরে যে দুর্নীতি হয়েছে তার মূল ব্যক্তি আব্দুল হাই বাচ্চু। যার কারণে সরকার তাকে সেই পদ থেকে অপসারণ করেছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত বেসিক ব্যাংক সংক্রান্ত যতগুলো দুর্নীতির মামলা হয়েছে, আমরা লক্ষ্য করেছি শুধুমাত্র কর্মকর্তা এবং ব্যবসায়ীদের সেই মামলায় সম্পৃক্ত করা হয়েছে। কিন্তু বাচ্চুর বিরুদ্ধে আজ পর্যন্ত কোনো দুর্নীতির মামলা আনা হয়নি।
দুদক কৌসুলি বলেন, শেখ ফজলে নূর তাপসের বক্তব্যকে আমরা অ্যাপ্রিশিয়েট করছি। তিনি চাচ্ছেন বেসিক ব্যাংক মামলার চার্জশিট হোক। একজন সংসদ সদস্য হিসেবে বা একজন সচেতন আইনজীবী হিসেবে উনি চাইতে পারেন।
তিনি বলেন, কিছুদিন আগে দুদক চেয়ারম্যান বলেছিলেন বেসিক ব্যাংকের সঙ্গে চার হাজার কোটি টাকার বিষয় জড়িত। প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে। বাকি অনেক টাকা উদ্ধার হওয়ার পথে।
মানিলন্ডারিং মামলার প্রধান বিষয় টাকার উৎস এবং টাকাটা কোথায় গেছে তা খুঁজে বের করা। এখন টাকার যদি গন্তব্য বের করা না যায় তাহলে তো চার্জশিট আদালতে প্রশ্নের সম্মুখীন হবে। তার মানে এই না যে, অনন্তকাল পর্যন্ত চার্জশিট হবে না। আমি যতটুকু জানি টাকার গন্তব্য খুঁজে বের করা হলে চার্জশিট হয়ে যাবে। যদি গ্রহণযোগ্য তথ্যপ্রমাণ থাকে তাহলে অবশ্যই বাচ্চুর নাম আসবে।