সাংস্কৃতিক সম্পর্ক জোরদারে ঢাকা-বাকু চুক্তি
চঙ্গল চৌধুরী /লিগ্যাল ভয়েস টোয়েন্টিফোর :
বাংলাদেশ ও আজারবাইজানের মধ্যে সাংস্কৃতিক সম্পর্ক জোরদারে একটি সাংস্কৃতিক সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে।
শনিবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম এলিয়েভের মধ্যে রাজধানীর বাকুর প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে একটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে ওই চুক্তিটি স্বাক্ষর হয়।
বাংলাদেশের সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ এবং আজারবাইজানের সংস্কৃতি ও পর্যটন মন্ত্রী ড. আবুলফাস গারায়েভ স্ব স্ব দেশের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম এলিয়েভ উপস্থিত ছিলেন।
গত শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) থেকে আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে শুরু হয়েছে জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের (ন্যাম) ১৮তম সম্মেলন। বাকু কংগ্রেস সেন্টারে ১২০টি উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের ফোরাম ন্যাম’র দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনের উদ্বোধন করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ইলহাম এলিয়েভ।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অন্যান্য সদস্য দেশগুলোর সরকার ও রাষ্ট্র প্রধান এবং সরকারি প্রতিনিধিরা এতে যোগ দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুক্রবার সকাল ১০টায় সম্মেলন স্থলে এসে পৌঁছলে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট তাকে স্বাগত জানান।
অন্যান্য বিশ্ব নেতৃবৃন্দের মধ্যে সম্মেলনে আরো যোগ দিয়েছেন- ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহনী, কিউবা’র প্রেসিডেন্ট মিগুয়েল ডিয়াজ-ক্যানেল, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ড. মাহাথির মোহাম্মদ, জিবুতি প্রেসিডেন্ট ইসমাইল ওমর, ঘানার প্রেসিডেন্ট নানা আকুফো-আড্ডো, নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শার্মা ওলী, পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভী, ভারতের ভাইস প্রেসিডেন্ট এম. ভেনকাইয়া নাইডু, তুর্কমেনিস্তানের প্রেসিডেন্ট গুরবাংগুলি বেরদিমুহামেদো, চেয়ারম্যান অব দি প্রেসিডেন্সি অব বসনিয়া এন্ড হার্জগোবিনা বাকীর ইজতেবেগোভিচ, আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গণি এবং লিবিয়ার প্রধানমন্ত্রী ফায়েজ মুস্তাফা আল-সারাজ।
সম্মেলনে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম এলিয়েভ সর্বসম্মতিক্রমে আগামী তিন বছরের জন্য ন্যাম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর প্রদত্ত ভাষণে তিনি ন্যামকে বাংডুং আদর্শের ভিত্তিতে গড়ে তোলার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
সম্মেলনের প্রথম দিন শুক্রবার বিকালে পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে সমসাময়িক বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সমন্বিত ও পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নিশ্চিতে ‘বান্দুং নীতিমালা’ সমুন্নত রাখা বিষয়ে এক সাধারণ আলোচনায় ভাষণ দেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ভাষণে তিনি জলবায়ু পরিবর্তন ও রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে বিশ্বকে সতর্ক করেন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘রোহিঙ্গা সংকট একটি রাজনৈতিক সংকট এবং এর মূল গভীরভাবে মিয়ানমারে প্রোথিত। তাই এর সমাধানও মিয়ানমারের অভ্যন্তরেই খুঁজতে হবে।’এই সংকট কেবল বাংলাদেশে নয়, বাইরেও অস্থিতিশীলতা তৈরি করছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে রোহিঙ্গা সংকট কেবল বাংলাদেশে নয়, এর বাইরেও অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে পারে স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা বর্তমানে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিচ্ছি। এটির আমাদের দেশ এবং এর বাইরেও অস্থিতিশীলতা তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা এই সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তা কামনা করছি।’
সম্মেলনের ফাঁকে ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিয়াদ আল মালকি দ্বিপক্ষীয় বুথে শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় তিনি ফিলিস্তিনের হেবরন শহরের একটি সড়কের নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে নামকরণ করা হবে বলে জানান।
এছাড়াও আজ শনিবার নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শার্মা ওলির সঙ্গে বৈঠক হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। বৈঠকে বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য জোরদারের অংশ হিসেবে প্রিফারেন্সিয়াল ট্রেড এগ্রিমেন্ট (পিটিএ) দ্রুত বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘পিটিএ দ্রুত বাস্তবায়ন করা গেলে দুই দেশ ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ব্যাপক সুবিধা লাভ করবে।’