ডায়ালগ আঞ্চলিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে– স্পীকার

হাবিবুর রহমান /লিগ্যাল ভয়েস টোয়েন্টিফোর :

বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এমপি বলেছেন, বাংলাদেশের সাথে ভারতের সম্পর্ক ঐতিহাসিক- যার সূচনা ১৯৭১ সালে বাংলদেশের মুক্তিযুদ্ধ। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে ভারতের সহযোগিতা আজও বাংলাদেশের জনগণ কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করে বলে তিনি উল্লেখ করেন। বাংলাদেশ ভারত ফ্রেন্ডশিপ ডায়ালগ উভয় দেশের সম্পর্কে নব দিগন্তের সূচনা করেছে। ফ্রেন্ডশিপ ডায়ালগ এমন একটি প্লাটফর্ম যেখানে মতবিনিময়ের মাধ্যমে উভয় দেশ পারস্পরিকভাবে লাভবান হতে পারে।

তিনি আজ শুক্রবার কক্সবাজারস্থ রয়েল টিউলিপ লাক্সারি হোটেলে অনুষ্ঠিত “বাংলাদেশ ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ ডায়ালগঃ বাংলাদেশ ইন্ডিয়া স্ট্র্যাটেজিক স্পেস-৯ম রাউন্ড” শীর্ষক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন। এসময় তিনি দু’দিনব্যাপী “নবম বাংলাদেশ ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ ডায়ালগঃ বাংলাদেশ ইন্ডিয়া স্ট্র্যাটেজিক স্পেস” অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন।

স্পীকার বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনসহ দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়নে ভারতের ভূমিকা অসামান্য। এসময় মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি, পানি চুক্তিসহ বেশ কয়েকটি ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। পরবর্তীতে ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুনরায় ভারতের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্কে নতুন মাত্রা যোগ করেন।

তিনি বলেন, দীর্ঘস্থল সীমান্ত, ৫৪টি নদীর পানি বন্টন নিয়ে ভারত বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ ডায়ালগ ভূমিকা রাখতে পারে। তথ্য প্রযুক্তি, বিদ্যুৎ, নবায়নযোগ্য জ্বালানী, সমুদ্র অর্থনীতিসহ পারস্পরিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে দুদেশের মাঝে মতবিনিময় উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে। এছাড়া, দুদেশের বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্যে ভারসাম্য আনয়নে কাজ করার সুযোগ রয়েছে।

ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, সংসদীয় কূটনীতি ব্যবহার করে দুদেশের বিদ্যমান সমস্যা সমাধান করা যেতে পারে। সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপ দুদেশের সম্পর্ক আরো জোরদার করবে। ২০২০ সালে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে বাংলাদেশ পালন করবে ‘মুজিব বর্ষ’ এবং ‘স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী’ উল্লেখ করে এই ঐতিহাসিক মুহূর্তে দুদেশের সম্পর্ক অনন্য উচ্চতায় অবস্থান করবে বলে তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

স্পীকার বলেন, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর দুদেশের বিদ্যমান সমস্যা সমাধানে বেশ ফলপ্রসূ ভূমিকা রেখেছে। ‘ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক বিশ্বে রোল মডেল’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ উক্তি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আঞ্চলিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মোদী সরকার কার্যকর ভূমিকা রাখছে। দুদেশের সম্পর্ক সুরক্ষিত করে পারস্পরিক বিশ্বসযোগ্যতার মাধ্যমে সন্ত্রাস দমন করে শান্তি প্রতিষ্ঠায় উভয় দেশের ভূমিকা মাইলফলক হয়ে থাকবে।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোঃ শাহরিয়ার আলম এর সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে ভারতের আসাম রাজ্যের অর্থ, উন্নয়ন, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা এবং পূর্ত মন্ত্রী হিমান্ত বিশ্ব শর্মা, বিজিপি (ভারত) জাতীয় সাধারণ সম্পাদক রাম মাধব ভারানাসী, বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার রিভা গাঙ্গুলী দাশ ও বিমসটেক এর সাধারণ সম্পাদক এম শহিদুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, বাংলাদেশ ও ভারতের সংসদ সদস্য, কূটনীতিক, বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী, গবেষক, নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষকসহ গণমাধ্যমকর্মীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। উক্ত অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক এবং ভোট অব থ্যাংক্স প্রদান করেন আলোক বাংশাল।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *