ইতিহাস গড়তেই আজ মাঠে নামবে বাংলাদেশ
স্পোর্টস ডেস্ক /লিগ্যাল ভয়েস টোয়েন্টিফোর :
সিরিজ জিতে ভারতের বিপক্ষে ইতিহাস গড়ার সুযোগ টাইগারদের সামনে। তিন ম্যাচের চলমান টি-টোয়েন্টি সিরিজ এখন ১-১ সমতায়। আজ তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটি জিতলেই ভারতের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের ইতিহাস গড়বে কোনো সফরকারী দল। সেটি আজ বাংলাদেশকে দিয়েই হয়ে যেতে পারে।
আজ ভারতের নাগপুরের বিদর্ভ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় শুরু হবে ম্যাচটি। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতের কাছে ৮ উইকেটে হারা বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচে ভারতকে হারায় সাত উইকেটে।
নিজেদের মাটিতে ভারত কখনো টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারেনি। তবে চলমান টি-টোয়েন্টি সিরিজে তাদের হারানোর পথ তৈরি করেছে বাংলাদেশ। জয় দিয়ে সিরিজ শুরু করে সফরকারীরা। দিল্লিতে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৭ উইকেটে জয় পায় মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের দল।
এরপর আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ দ্বিতীয় ম্যাচ জিতে সিরিজ নিজেদের করে নেয়ার স্বপ্ন দেখেছিল। কিন্তু ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মার বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের সিরিজ জয়ের স্বপ্ন দীর্ঘায়িত হয়। ৬টি করে চার-ছক্কায় ৪৩ বলে ৮৫ রান করেন রোহিত। সিরিজে সমতা ফেরায় ভারত।
চমৎকার জয় দিয়ে সফর শুরু করা বাংলাদেশ সিরিজ জয়ের লক্ষ্য সঙ্গী করে আজ মাঠে নামবে। তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ জিতে সিরিজ নিজেদের করে নেয়ার ব্যাপারে আশাবাদী বাংলাদেশ কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো। তিনি বলেছেন, ‘দ্বিতীয় ম্যাচে আমরা ভালো অবস্থায় ছিলাম। কিন্তু ব্যাটিংয়ে আমরা কিছু ভুল করেছি। তবে আমরা বিশ্বাস করি, আমরা ভারতকে চাপে রাখতে পারি এবং যেকোনো দিন তাদের হারাতে পারি।’
চলতি সিরিজেই ভারতকে এই ফরম্যাটে প্রথমবারের মতো হারানোর নজির গড়ে বাংলাদেশ। গত দুটিসহ এখন পর্যন্ত ১০ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে এই দুই দেশ। এর মধ্যে ৯টিতে জয় পায় ভারত।
আজকের সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে দুটি পরিবর্তন থাকছে বাংলাদেশ দলে। দ্বিতীয় ম্যাচের একাদশ থেকে বাদ পড়ছেন মোসাদ্দেক হোসেন ও মোস্তাফিজুর রহমান। গ্রোয়েন ইনজুরিতে পড়েছেন মোসাদ্দেক। তার জায়গায় খেলবেন মোহাম্মদ মিঠুন। আর দুই ম্যাচে মাত্র ৪ ওভার বল করেছেন ফিজ। তার পরিবর্তে প্রায় এক বছর পর টি-২০ খেলতে নামবেন আরেক বাঁ-হাতি আবু হায়দার।
বিভিন্ন দলের সঙ্গে এখন পর্যন্ত মোট ৯১টি টি-২০ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। টাইগারদের জয় ৩০টিতে। ওয়ানডের মতো প্রশংসনীয় সাফল্য বাংলাদেশের নেই এই ছোট সংস্করণের ক্রিকেটে। তবে এ বছরের ফল ভালো- ৬ ম্যাচ খেলে ৪টি জিতেছে টাইগাররা। টি-২০ বিশ্বকাপের আগে এ বছর বাংলাদেশের পারফরমেন্স ছোট ফরম্যাটে সেরাই বলতে হবে।
তাই এ বছরের পরিসংখ্যান বাংলাদেশকে চলমান সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে আত্মবিশ্বাসী রাখতে সহায়তা করবে নিঃসন্দেহে। আর দ্বিতীয় ম্যাচের পারফরম্যান্সের বিচারে ভারতকে এগিয়ে না রাখার উপায় নেই।
আজকের ম্যাচে ব্যাটসম্যানদের মতো বাংলাদেশের বোলারদের নিয়েও চিন্তা করতে হচ্ছে টিম ম্যানেজমেন্টকে। দ্বিতীয় ম্যাচে আমিনুল ইসলাম বিপ্লব ছাড়া কোনো বোলারই ভারতের ব্যাটসম্যানদের পরীক্ষায় ফেলতে পারেননি। প্রথম ম্যাচে স্লো পিচ থাকায় সেখান থেকে ফায়দা নিতে পেরেছিল বাংলাদেশের বোলাররা। দিল্লির মতো রাজকোটের পিচ না হওয়াতে বোলাররা ভালো করতে পারেননি। তবে শেষ ম্যাচে সাফল্য পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী বাংলাদেশ।
জুয়াড়ির তথ্য গোপন করার অভিযোগে আইসিসির এক বছরের নিষেধাজ্ঞা এবং এর আগে খেলোয়াড়দের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর দাবিতে ধর্মঘটে নেতৃত্ব দেওয়া সাকিব আল হাসানকে নিয়ে টালমাটাল অবস্থার মধ্যেও সিরিজের প্রথম ম্যাচে জয় বাংলাদেশের জন্য ছিল অনেক বড় স্বস্তির বিষয়।
প্রথম ম্যাচ জয়ের পর বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বলেছিলেন, সিরিজে তাদের হারানোর কিছুই নেই, যা তাদের ভালো করতে অনুপ্রেরণা দিয়েছিল। এখন যদি, ডোমিঙ্গোর বক্তব্য বিবেচনা করা হয় তবে আবার চাপবিহীন ক্রিকেট খেলতে পারবে বাংলাদেশ।