এফআর টাওয়ারের অন্যতম মালিক ফারুকসহ তিনজন কারাগারে
কোর্ট রিপোর্টার/লিগ্যাল ভয়েস টোয়েন্টিফোর :
রাজধানীর বনানীর বহুতল ভবন এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় করা মামলায় জমির ইজারা গ্রহীতা (অন্যতম মালিক) সৈয়দ মো. হোসাইন ইমাম ফারুকসহ (এসএমএইচ ফারুক) তিনজনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এফআর টাওয়ার নকশা জালিয়াতি ও ইমারত বিধিমালা লঙ্ঘন করে নির্মাণের অভিযোগে দুদকের দায়ের করা মামলায় তাদের এ কারাদণ্ড দেয়া হলো।
কারাদণ্ডপ্রাপ্ত অপর দুইজন হলেন-রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক ইমারত পরিদর্শক মো. আওরঙ্গজেব সিদ্দিকী (নান্নু) ও সাবেক উপপরিচালক (এস্টেট) মুহাম্মদ শওকত আলী।
আজ (রোববার) এ তিন আসামি হাইকোর্টের নির্দেশে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কায়েসের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন।
শুনানি শেষে আদালত তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
গত ২৬ জুন নকশা জালিয়াতির মাধ্যমে অবৈধভাবে এফআর টাওয়ার ১৬ থেকে ২৩তলা ভবন নির্মাণের অভিযোগে মালিক, রাজউকের সাবেক দুই চেয়ারম্যানসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের উপ-পরিচালক আবু বকর সিদ্দিক বাদী হয়ে এ মামলাটি করেন।
মামলায় ভুয়া ছাড়পত্রের মাধ্যমে এফআর টাওয়ারের ১৯তলা থেকে ২৩তলা নির্মাণ, বন্ধক প্রদান ও বিক্রির অভিযোগে দণ্ডবিধির সাতটি ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭-এর ৫ (২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়।
এ মামলায় এ তিন আসামির জামিন দেয় বিচারিক আদালত।
তবে গত ৫ নভেম্বর দুদকের পৃথক তিনটি আবেদনের শুনানি শেষে হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ সে জামিন বাতিল করেছেন হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে তাদেরকে বিচারিক আদালতে সাত দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দেয়া হয়।
প্রসঙ্গত চলতি বছরের ২৮ মার্চ দুপুরে বনানীর এফআর টাওয়ারে আগুন লাগে। এতে ২৭ জন মারা যান, আহত হন ৭৩ জন। ওই ঘটনার পর ভবন নির্মাণে নানা অনিয়মের বিষয়গুলো বেরিয়ে আসতে থাকে। কামাল আতাতুর্ক এভিনিউয়ে এফআর টাওয়ারের জমির মূল মালিক ছিলেন প্রকৌশলী এসএমএইচআই ফারুক।
অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ভবনটি নির্মাণ করে রূপায়ন হাউজিং এস্টেট লিমিটেড। সে কারণে সংক্ষেপে ভবনের নাম হয় এফআর টাওয়ার।
নকশা জালিয়াতির মাধ্যমে ভবনটিতে কয়েকটি তলা বাড়ানোর অভিযোগে গত ২৫ জুন বিএনপি নেতা তাসভীরসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেন দুদক কর্মকর্তা মো. আবুবকর সিদ্দিক। একটি মামলায় রাজউকের ভুয়া ছাড়পত্রের মাধ্যমে এফআর টাওয়ারকে ১৯তলা থেকে বাড়িয়ে ২৩তলা করা, উপরের ফ্লোরগুলো বন্ধক দেয়া ও বিক্রি করার অভিযোগে ২০ জনকে আসামি করা হয়।
অপর মামলাটি করা হয় এফআর টাওয়ারের ১৫তলা পর্যন্ত নির্মাণের ক্ষেত্রে ইমারত বিধিমালা লঙ্ঘন এবং নকশা জালিয়াতির মাধ্যমে ১৮তলা পর্যন্ত বাড়ানোর অভিযোগে। ফারুক ও নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের মালিক রূপায়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী খান মুকুল দুই মামলারই আসামি।