বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্যে নিজস্ব কার্যালয় করতে আগ্রহ প্রকাশ তুরস্কের
ভূইয়া আসাদুজ্জামান / লিগ্যাল ভয়েস টোয়েন্টিফোর :
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বৃহস্পতিবার দুপুরে তুরস্কের আঙ্কারায় তুরস্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুয়াত ওকতের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।
তাদের মধ্যে দ্বিপাক্ষকি ব্যবসা-বাণিজ্য সম্পর্কে পারস্পারিক আলোচনা হয়।
সাক্ষাতের সময় তুরস্ক বাংলাদেশে তাদের কার্যলয় স্থাপন করে কর্মপরিচালনা করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, যেহেতু বাংলাদেশে তাদের বাজার রয়েছে এবং তারা ইউরোপসহ অন্যান্য দেশের প্রবেশদ্বার, তাই বিশ্বে তাদের একটি অন্যরকম গুরুত্ব রয়েছে। এধরনের কার্যালয় স্থাপন করে কর্ম পরিচালনা করলে বাণিজ্য সক্রিয়ভাবেই অনেকগুণ বেড়ে যাবে।
অর্থমন্ত্রী এ বিষয়টি বিবেচনা করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন।
ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের কুটনেতিক সম্পর্ক অত্যন্ত ভাল। দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আমরা একে অন্যের প্রতিযোগী না হয়ে ব্যবসা করতে হবে। যেসব দ্রব্য উৎপাদনে তুরস্ক নিজেই ভাল করছে সে সব দ্রব্য নয় বরং অন্য দ্রব্যসমূহ এবং যেগুলোর প্রতি তুরস্কের চাহিদা রয়েছে সেই দ্রব্যেগুলো রপ্তানিতে বাংলাদেশ সুযোগ নিয়ে ভাল করতে পারে। আমরাও বাংলাদেশকে সেসকল ক্ষেত্রে সহযোগীতা প্রদান করতে পারি।
বাংলাদেশ কৃষি খাত, এগ্রো প্রসেসিং, পাট ও পাটজাত দ্রব্য, ফ্রুট প্রসেসিং বিশেষ করে আম, লিচু, কাঁঠাল, আনারস প্রসেসিং এর মাধ্যমে বাণিজ্য বাড়াতে পারে। সেক্ষেত্রে তুরস্কও সহায়তা প্রদান করতে পারে। পাশাপাশি বাংলাদেশের গুড় উৎপাদনে অগ্রগতির বিষয়টি উঠে এসেছে।
এক্ষেত্রেও তিনি আগ্রহ প্রকাশ করে বলেন, যেহেতু বাংলাদেশ গুড় উৎপাদনে সফলতা অর্জন করেছে এবং গুণগত দিক থেকে যেকোন দেশের তুলনায় উৎকৃষ্ট মানের মাংস উৎপাদন করছে সেহেতু এগুলোও রপ্তানী বাণিজ্যের আওতায় আনা সম্ভব। এ ক্ষেত্রে হালাল সার্টিফিকেশনের যে প্রয়োজনীয়তা সেক্ষেত্রে তুরস্ক বাংলাদেশকে সহায়তা প্রদান করতে পারে।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বাংলাদেশের সার্বিক অগ্রগতি তুলে ধরেন এবং পাশাপাশি বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুবিধাগুলো তুলে ধরলে তুরস্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের চামড়াজাত দ্রব্যের প্রতি অত্যধিক আগ্রহ ব্যক্ত করেন এবং আইসিটি খাতে তুরস্ক যেহেতু সফল তাই এই দুটি খাতে বাংলাদেশ সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে প্রকল্প প্রেরণের অনুরোধ ব্যক্ত করেন।
বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জন্য বড় হুমকি যা বাংলাদেশর সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি ও অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে ব্যাহত করছে।
অর্থমন্ত্রী এ সমস্যাটি সমাধানে তুরস্কের সহায়তা কামনা করেন।
তুরস্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট এ বিষয়ে আরো বেশী আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, সমস্যাটি সমাধানের জন্য আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করার পাশাপশি যেহেতু বিতাড়িত এই অসহায় মানুষগুলো মুসলমান তাই বিশেষ করে মুসলিম দেশগুলো ভাগাভাগি করে তাদেরকে আশ্রয় প্রদান করলে সমস্যা অনেকটাই সমাধান হতে পারে।
ভাইস প্রেসিডেন্ট এ বিষয়টি নিয়ে বিশেষভাবে প্রেসিডেন্টের সাথে আলোচনা করবেন বলে জানান।
সাক্ষাতের সময় উপস্থিত ছিলেন তুরস্কে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম আল্লামা সিদ্দিকী এবং পররাষ্ট মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মো. দাউদ আলী।
অর্থমন্ত্রী তুরস্কের ভাইস প্রেসিডেন্টকে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে সালাম ও শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন।
তিনি তাকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ করেন এবং তুরস্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশ সফরের জন্য সম্মতি জানান।