বেসরকারি ঋণের প্রবাহ বাড়াতে ব্যাংকারদের নতুন খাত বের করতে হবে : গভর্নর
ভূইয়া আসাদুজ্জামান / লিগ্যাল ভয়েস টোয়েন্টিফোর :
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেছেন, ব্যাংকগুলো ঋণ বিতরণে অনীহা কোনোভাবেই ভালো লক্ষণ না। বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশের দিকে যাচ্ছে। বেসরকারি খাতের ঋণের মন্দাবস্থা চলছে, যা এখনো কেন্দ্রিয় ব্যাংকের লক্ষ্যের নিচে আছে। তাই বেসরকারি খাতের স্বার্থে ঋণ প্রবাহ বাড়াতে ব্যাংকারদের নতুন খাত বের করতে হবে।
বুধবার রাজধানীর মিরপুর বিআইবিএম মিলনায়তনে দু’দিনব্যাপী ৮ম ব্যাংকিং সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক মো. আখতারুজ্জামান। সম্মেলনের প্রথম দিনে ২টি সেশনে ১২টি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। ২টি সেশনে সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রিয় ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর মোহাম্মদ সোহরাব উদ্দিন ও এস কে সুর চৌধুরী। আগামীকাল ১৩টি প্রবন্ধ উপস্থাপন হবে।
গর্ভনর বলেন, আগামী বছর থেকে আমাদের রপ্তানি বাড়াতে হবে। যা গত বছরে কমে গিয়েছিল। আমরা এখন আমদানি নিভৃর দেশ, রপ্তানি বাড়াতে সবাইকে উদ্যোগ নিতে হবে। ব্যাংকগুলোকে নিজেদের ভাবমূর্তি ধরে রাখতে নিয়মকানুন পরিপালনের উত্তম চর্চা করতে হবে। যাতে গ্রাহক, বিনিয়োগকারী ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার বিশ্বাস অর্জন করা যায়।
সম্মেলনের মূল প্রবন্ধে বিআইবিএমের মহাপরিচালক মো. আখতারুজ্জামান ২০১৮ সালের ব্যাংকিং কার্যক্রম তুলে ধরে বিভিন্ন মতামত দেন। বলেন, ২০১৮ সালে মাত্র ২০ শতাংশ ব্যাংক নতুন খাত ও শিল্পে ঋণ দিয়েছে। নতুন খাতে ঋণ দিতে ব্যাংকগুলোর অনীহাও বেশি ছিল। গত বছরে কৃষি ঋণ বিতরণও কমেছে ৯ শতাংশ। চলমান তারল্য সংকট কৃষি খাতে ঋণ বিতরণে আরও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
তিনি বলেন, ২০১৮ সাল শেষে ১০ দশমিক ৩১ শতাংশ ঋণ খেলাপি হয়ে গেছে। অর্থ ঋণ আদালতে আরও ৭৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ নিয়ে মামলা চলছে।
ব্যাংকের ঋণ কার্যক্রম নিয়ে মূল প্রবন্ধে বলা হয়, একজন বড় ব্যবসায়ীকে অনেকগুলো ব্যাংক মিলে ঋণ প্রদান করে, যাতে অনেক সময় চাহিদার বেশি ঋণ চলে যায়। এটা গ্রাহকদের অন্য খাতে ঋণ ব্যবহারের সুযোগ করে দেয়। এর ফলে ব্যবসায়ীরা ঋণ পরিশোধের জন্য পর্যাপ্ত অর্থ পায় না। ফলে তারা ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়। ব্যাংকের সুশাসনের উন্নতি ঘটলে ঋণের মান ভালো হবে।
ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ও পরিপালন নিয়ে মূল প্রবন্ধে বলা হয়, অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষার খরচ ও রিটার্ন অল্প কিছু ব্যাংক বিবেচনা করছে। বাংলাদেশের মতো ব্যাংক নির্ভর অর্থনীতি যে কোনো অভিঘাত দেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের ধাক্কা দেবে ও অর্থনীতিতে বড় চাপ তৈরি করবে। তাই কোনো ব্যাংকের অনিয়মের শুরুতে নিয়ন্ত্রক সংস্থার হস্তক্ষেপ এ থেকে রক্ষা দিতে পারে।
ইসলামি ব্যাংকিং ব্যবস্থা নিয়ে বলা হয়, বাংলাদেশে ইসলামি ব্যাংকিং ব্যবসার বিকাশ ঘটাতে সুষ্ঠু পদ্ধতি সময়ের দাবি। আবার তহবিল ব্যবস্থাপনায় ইসলামিক রেপো ও রিভার্স রেপো চালুর বিষয়ে কেন্দ্রিয় ব্যাংক চিন্তা করতে পারে। মূল প্রবন্ধে তথ্য প্রযুক্তি খাতে ব্যাংকগুলোকে আলাদা বরাদ্দ রাখার তাগিদ দেয়া হয়।