আসামের বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে নিহত ৩
আন্তর্জাতিক ডেস্ক / লিগ্যাল ভয়েস টোয়েন্টিফোর :
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আসামে বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধন আইনের বিরুদ্ধে রাতভর বিক্ষোভের পর ঐ রাজ্যে হাজার হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।
এই আইনের প্রতিবাদে বিক্ষোভকারীরা রাজধানী গুয়াহাটিতে কারফিউ ভঙ্গ করে দোকানপাট ও যানবাহনে আগুন দিয়েছে। পুলিশের সাথে সংঘর্ষে এ পর্যন্ত তিন ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও বহু লোক। খবর বিবিসি ও এনডিটিভির
বিক্ষোভের সময় বেশ কয়েকটি রেল স্টেশনেও ভাংচুর হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে। নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপি বলছে, বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে আসা অমুসলিম সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্ব দেয়ার লক্ষ্যে এই আইন তৈরি করা হয়েছে।
ভারতের সংসদের উচ্চ কক্ষ রাজ্য সভায় বৃহস্পতিবার এই আইনটি পাশ হওয়ার পর থেকেই আসামের বিভিন্ন জায়গায় সহিংস বিক্ষোভ শুরু হয়। রাজ্যের কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানাচ্ছে, পরিস্থিতি মোকাবেলার লক্ষ্যে কাশ্মীরসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে সেনাবাহিনীর কিছু ইউনিটকে আসামে সরিয়ে আনা হয়েছে।
বিক্ষোভকারীরা রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সানোয়ালসহ বেশ ক’জন বিজেপি নেতার বাড়িঘরে হামলা করেছেন। উত্তেজনা কমানোর জন্য রাজ্যের ১০টি জেলায় মোবাইল ইন্টারনেট বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে। কংগ্রেস এবং তৃণমূল কংগ্রেসসহ ভারতের বিভিন্ন বিরোধী রাজনৈতিক দল সংসদে সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট বিল বা সিএবি নামে পরিচিত এই বিতর্কিত বিলটির বিরোধিতা করেছে।
ভারতের বিভিন্ন মুসলিম দলের নেতারাও বিলটিকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছেন। আসামে যারা এই বিলের প্রতিবাদ জানাচ্ছেন তাদের বক্তব্য, এই বিলের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ থেকে আসামে আরও বেশি সংখ্যক বাঙালী হিন্দুর আসার পথ খুলে দেয়া হয়েছে। আসামে দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় অহমীয়া জনগোষ্ঠীর সাথে বাংলাভাষী জনগণের বিরোধ চলছে।
আসাম অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলছেন, এই আইনটি নিয়ে আসামের বাসিন্দাদের উদ্বেগের কোন কারণ নেই। ইংরেজি এবং অহমীয়া ভাষায় পাঠানো একের পর এক টুইট-বার্তায় মোদি বলছেন, আসাম চুক্তির অনুচ্ছেদ ছয়কে রক্ষা করার জন্য তিনি ব্যক্তিগতভাবে এবং কেন্দ্রীয় সরকার সম্ভাব্য সবকিছুই করবে।
এই চুক্তিতে স্থানীয় বাসিন্দাদের রাজনৈতিক, ভাষাগত, সাংস্কৃতিক এবং ভূমির অধিকারকে হেফাজত করার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে।
এদিকে নাগরিকত্ব আইনের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লীগ বৃহস্পতিবার আদালতে মামলা দায়ের করেছে। সুপ্রিম কোর্টের কাছে পেশ করা এক আর্জিতে আইউএমএল বলছে, এই আইনটি ভারত সংবিধানের সাম্য, মৌলিক অধিকার এবং জীবনের অধিকার সংক্রান্ত বিধানগুলোকে ভঙ্গ করছে।