আজিমপুর মাতৃসদনে দুর্নীতি২৫ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
স্টাফ রিপোর্টার / লিগ্যাল ভয়েস টোয়েন্টিফোর :
রাজধানীর আজিমপুর মাতৃসদন ও শিশুস্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে কেনাকাটায় দুর্নীতির প্রমাণ মেলায় ২৫ জনের বিরুদ্ধে চারটি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ বুধবার দুদকের উপ-পরিচালক আবুবকর সিদ্দিক সংস্থাটির ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাগুলো করেন।
অভিযোগ রয়েছে, বাজারদরের চেয়ে দুই থেকে তিন গুণ বেশি দামে ওষুধ, সার্জিক্যাল যন্ত্রপাতি ও প্যাথলজিসামগ্রী কেনাকাটায় প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা আত্মসাত করেছেন অভিযুক্তরা।
চার অর্থবছরে কেনাকাটায় দুর্নীতির অভিযোগে চারটি আলাদা মামলা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন দুদকের মুখপাত্র প্রণব কুমার ভট্টাচার্য।
জানা যায়, মামলায় ১৭ জন চিকিৎসক ও সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরের ৮ জনকে আসামি করা হয়। আজিমপুর মাতৃসদন ও শিশুস্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধায়ক ইসরাত জাহানকে চারটি মামলাতেই আসামি করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধান করেন দুদকের উপ-পরিচালক মো. আবুবকর সিদ্দিক। এ অনুসন্ধানে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
চার মামলার আসামীরা হলেন, আজিমপুর মাতৃসদন ও শিশুস্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধায়ক ইসরাত জাহান, পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের সাবেক অধ্যক্ষ ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্য পারভীন হক চৌধুরী, মাতৃসদনের সাবেক সিনিয়র কনসালট্যান্ট ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্য মাহফুজা খাতুন, সাবেক সহকারী কো-অর্ডিনেটর (ট্রেনিং অ্যান্ড রিসার্চ) ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্য চিন্ময় কান্তি দাস, সাবেক মেডিকেল অফিসার ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্য সাইফুল ইসলাম, মেডিকেল অফিসার (শিশু) ও বাজারদর যাচাই কমিটির সদস্য মাহফুজা দিলারা আকতার।
মাতৃসদনের মেডিকেল অফিসার ও বাজারদর যাচাই কমিটি সদস্য নাজরিনা বেগম, প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও সদস্যসচিব (বাজারদর যাচাই কমিটি) জহিরুল ইসলাম, পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্য জেবুন্নেসা হোসেন, জ্যেষ্ঠ কনসালট্যান্ট (গাইনি) ও বাজারদর যাচাই কমিটির সভাপতি রওশন হোসনে জাহান, মাতৃসদনের সাবেক সহকারী কো-অর্ডিনেটর (ট্রেনিং অ্যান্ড রিসার্চ) ও পরিবার পরিকল্পনার অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. লুৎফুল কবীর খান, মেডিকেল অফিসার ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্য রওশন জাহান, সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হালিমা খাতুন, মাতৃসদনের বিভাগীয় প্রধান (শিশু) ও বাজারদর যাচাই কমিটির সদস্য মো. আমীর হোচাইন, সাবেক সমাজসেবা কর্মকর্তা ও বাজারদর যাচাই কমিটির সদস্য মোছা. রইছা খাতুন ও সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক কাজী গোলাম আহসান, সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নাছির উদ্দিন, কনিষ্ঠ কনসালট্যান্ট (শিশু) নাদিরা আফরোজ, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো. নাছের উদ্দিন, সমাজসেবা কর্মকর্তা বিলকিস আক্তার, মেডিকেল অফিসার আলেয়া ফেরদৌসীকে, মনার্ক এস্টাব্লিশমেন্টের মালিক মো. ফাতে নূর ইসলাম, মেসার্স নাফিসা বিজনেস কর্নারের মালিক শেখ ইদ্রিস উদ্দিন (চঞ্চল), সান্ত্বনা ট্রেডার্সের মালিক নিজামুর রহমান চৌধুরী আসামি হয়েছেন।
আজিমপুর মাতৃসদন ও শিশুস্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল। নামমাত্র মূল্যে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের আওতাধীন হাসপাতালটি ১৯৫৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ ২০০০ সালে আবারও চালু হয়।