আইনজীবী ও বিচারকের মধ্যে সুসম্পর্ক অপরিহার্য : প্রধান বিচারপতি

সুপ্রিমকোর্ট রিপোর্টার / লিগ্যাল ভয়েস টোয়েন্টিফোর :

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, বার (আইনজীবী) ও বেঞ্চের (বিচারক) মধ্যে সুসম্পর্ক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য অপরিহার্য। এর ব্যত্যয় কোনোভাবেই কাম্য নয়। একজন আইনজীবীকে মামলা পরিচালনায় যেমন তার নিজের মক্কেলের কাছে স্বচ্ছ থাকতে হবে, তেমনি আদালত ও বিরোধীপক্ষের কাছেও স্বচ্ছ থাকতে হবে।

প্রধান বিচারপতি নবীন আইনজীবীদের স্বচ্ছতার সঙ্গে পেশা পরিচালনার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আইনজীবী হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য সংক্ষিপ্ত কোনো পথ নেই। এজন্য আপনাদের নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। সিনিয়রদের পদাঙ্ক অনুসরণ করতে হবে। মরহুম ওজায়ের ফারুকের কর্মময় জীবন আইনজীবীদের জন্য অনুসরণীয় ও অনুকরণীয়।
আজ বুধবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ওজায়ের ফারুক স্বরণসভা ও দোয়ার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট এ এম আমীন উদ্দিনের সভাপতিত্বে সমিতি ভবন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত স্বরণসভায় গণপূর্ত ও গৃহায়নমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করীম, আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান, বিমান প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মাহবুব আলী, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল, সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম, আওয়ামী লীগের আইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. নজিবউল্লাহ হিরু, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন, সাবেক সম্পাদক ড. বশির আহমেদ, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল ও ড. মোমতাজউদ্দিন আহমদ মেহেদী বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট আজাহার উল্লাহ ভুইয়া।

প্রধান বিচারপতি বলেন, দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় তিনি নির্ভিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় তিনি ছিলেন অকুতোভয়। তিনি আইনের শাসন ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতার জন্য যে কাজ করে গেছেন তা আমাদের সকলের জন্য অনুকরণীয়। তিনি অসাম্প্রদায়িক চেতনার দৃঢ় অনুসারী ছিলেন। তিনি আইনজীবীদের কিংবদন্তী ছিলেন।

শ ম রেজাউল করীম বলেন, আমাদের আইনজীবীদের মধ্যে নৈতিকতা ও মূল্যবোধের দিক থেকে ভয়াবহ অবক্ষয় ঘটছে। আমরা সামনের দিকে না যেয়ে পিছনের দিকে যাচ্ছি। সিনিয়রের কাছ থেকে শেখার প্রবণতা কমে যাচ্ছে। বার কাউন্সিলের সনদ পাবার পরই সিনিয়র আইনজীবীর মতো আচরণ হয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, নতুন আইনজীবীদের একটি অংশের মধ্যে যথাযথভাবে আইনগত বিষয়ে শুনানি না করেই অন্যভাবে আদেশ পাওয়ার চেস্টা দেখতে পাই।

তিনি বলেন, হয়তো আমরা যারা আইনজীবী তারা অনেক টাকার মালিক হতে পারবো, কিন্তু শিষ্ঠাচার, সৌজন্যবোদের অভাব থাকলে এই বিত্তবৈভব কোনো কাজে আসবে না। আসুন আমরা সকলে মিলে আমরা নিজেদের আত্মসমালোচনা করি। মানুষ ও আইনজীবী হিসেবে সিনিয়রদের অনুসরণ করে সত্যিকারের একজন পরিপূরক মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হই।

অন্যান্য বক্তরা মরহুম ওজায়ের ফারুকের কর্মময়, মানবিক ও পেশাগত গুনাবলীর বিভিব্বন দিক তুলে ধরে বক্তব্য দেন। তারা নতুন প্রজন্মকে ওজায়ের ফারুকের জীবন অনুসরণ করার আহ্বান জানান।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *