রোহিঙ্গা সুরক্ষায় আইসিজের আদেশ প্রত্যাখ্যান মিয়ানমারের
আন্তর্জাতিক ডেস্ক / লিগ্যাল ভয়েস টোয়েন্টিফোর :
রোহিঙ্গাদের গণহত্যা পরিস্থিতিতে থেকে সুরক্ষা দিতে মিয়ানমারের প্রতি চার দফা অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে)। তবে এ আদেশ প্রত্যাখ্যান করেছে মিয়ানমার। খবর বিবিসি।
নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে অবস্থিত জাতিসংঘের এ আদালত গতকাল বৃহস্পতিবার সর্বসম্মতিক্রমে মিয়ানমারের প্রতি অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা নেয়ার আদেশ দেন। এগুলো মেনে চলা মিয়ানমারের জন্য বাধ্যতামূলক। আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করারও সুযোগ নেই।
তবে আইসিজের আদেশে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দিয়েছে মিয়ানমার।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, এ আদেশ পরিস্থিতির বিকৃত চিত্র উপস্থাপন করেছে। মন্ত্রণালয় বলছে, তাদের গঠিত ইনডিপেনডেন্ট কমিশন অব ইনকোয়ারি (আইসিওই) রাখাইনে গণহত্যার কোনো আলামত খুঁজে পায়নি। তবে যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হয়েছে বলে স্বীকার করেছে মিয়ানমারের সরকার ঘনিষ্ঠ এ তথাকথিত ‘স্বাধীন কমিশন’।
রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর মিয়ানমার সরকারের দীর্ঘ কয়েক দশকের জাতিগত বৈষম্য ও নিপীড়ন এবং ২০১৭ সালের সেনা অভিযানে নির্বিচারে হত্যা ও নির্যাতনের পটভূমিতে আইসিজেতে সুরক্ষার আবেদন করে গাম্বিয়া।
শুরু থেকেই এ মামলার উপযুক্ততা নিয়ে প্রশ্ন তোলে মিয়ানমার। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে গতকাল আইসিজে জানান, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর পরিচালিত সহিংসতা ও বৈষম্যের নীতিতে গণহত্যার উদ্দেশ্য থেকে থাকতে পারে। আদালত সেই বিবেচনা থেকে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর সহিংসতা ও বৈষম্য অবিলম্বে বন্ধ করার নির্দেশ দেন।
রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সুরক্ষার লক্ষ্যে আদালত মিয়ানমারের প্রতি যে চার দফা অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন সেগুলো হলো- ১. গণহত্যা সনদের বিধি ২ অনুযায়ী মিয়ানমারকে তার সীমানার মধ্যে রোহিঙ্গাদের হত্যা, জখম বা মানসিকভাবে আঘাত করা, পুরো জনগোষ্ঠী বা তার অংশবিশেষকে নিশ্চিহ্ন করা এবং তাদের জন্মদান বন্ধের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ থেকে অবশ্যই নিবৃত্ত থাকতে হবে। ২. মিয়ানমারকে অবশ্যই তার সীমানার মধ্যে সেনাবাহিনী বা অন্য কোনো অনিয়মিত সশস্ত্র ইউনিট বা তাদের সমর্থনে অন্য কেউ যাতে গণহত্যা সংঘটন, গণহত্যার ষড়যন্ত্র, প্রকাশ্যে বা অপ্রকাশ্যে গণহত্যার জন্য উসকানি দেয়া, গণহত্যার চেষ্টা করা বা গণহত্যার সহযোগী হতে না পারে, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। ৩. গণহত্যা সনদের বিধি ২-এর আলোকে গণহত্যার অভিযোগের সঙ্গে সম্পর্কিত সব সাক্ষ্যপ্রমাণ রক্ষা এবং তার ধ্বংস সাধনের চেষ্টা প্রতিরোধ করতে হবে। ৪. এ আদেশ জারির দিন থেকে চার মাসের মধ্যে আদালতের আদেশ অনুযায়ী মিয়ানমার যেসব ব্যবস্থা নিয়েছে, তা আদালতকে জানাতে হবে। এরপর থেকে আদালতের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত প্রতি ছয় মাস পরপর এ বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে হবে।