রাজউকে ঘুষের বিনিময়ে কাজ করানো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয় : টিআইবি
স্টাফ রিপোর্টার / লিগ্যাল ভয়েস টোয়েন্টিফোর :
ভবণ নির্মাণ তদারকিতে গুরুত্ব না দিয়ে, ডেভেলপার কোম্পানি হয়ে যাচ্ছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ- রাজউক। সংস্থাটি প্লট বা ফ্ল্যাট বিক্রি করে মুনাফা অর্জনে মনোযোগী বেশি। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবির গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজউকে ঘুষের বিনিময়ে কাজ করানো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। টাকা প্রদানে কেউ অপারগ হলে তাকে নানাভাবে হয়রানি করা হয়। অথচ রাজউকের বহুতল ভবনের সংজ্ঞার সাথে অন্যান্য আইনের অসংগতি আছে। সংস্থাটির চেয়ারম্যান ও সদস্যদের যোগ্যতার মানদন্ডও সুনির্দিষ্ট নয়। ফলে নিয়োগে স্বেচ্ছাচারিতার সুযোগ থাকে।
এ অবস্থায়, রাজউকে দালালদের হয়রানি বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি।
নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, রাজউকের আর্থিক কর্তৃত্ব বন্টনে আলাদা নির্দেশিকা রাখতে হবে। সেবার মূল্য উল্লেখ করে টাঙাতে হবে নাগরিক সনদ।
এই গবেষণায় রাজউকের নানা আইনি সীমাবদ্ধতা ও প্রয়োগের চ্যালেঞ্জ; প্রাতিষ্ঠানিক সীমাবদ্ধতা ও অনিয়ম; জবাবদিহিতা; তথ্য সরবরাহে স্বচ্ছতা; সিদ্ধান্ত গ্রহণে অংশগ্রহণ ও অন্তর্ভুক্তি ছাড়াও ছাড়পত্র ও নকশা অনুমোদন এবং প্রকল্প সংক্রান্ত অনিয়ম ও দুর্নীতির মত বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা করা হয়েছে।
নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা বাদ দিয়ে রাজউক এখন মুনাফা অর্জনকারী ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের নামে মুনাফা অর্জন ও নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা আলাদা করতেই হবে। দীর্ঘদিনের চর্চার ফলে রাজউকের ব্যবসায়িক মানসিকতা যেহেতু আর বদলানো যাবে বলে মনে হয় না, তাই আইনের যথাযথ সংশোধন করে রাজউকের সার্বিক কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের জন্য সম্পূর্ণ পৃথক, নিরপেক্ষ ও পর্যাপ্ত ক্ষমতায়িত ও প্রভাবমুক্ত কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
টিআইবির চালানো গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, রাজউকের কার্যক্রম পরিচালনায় বিভিন্ন ধরনের আইনি সীমাবদ্ধতা রয়েছে। যেমন, নগর উন্নয়ন (টাউন ইম্প্রুভমেন্ট) আইন, ১৯৫৩ এ চেয়ারম্যান ও সদস্যদের যোগ্যতার মানদণ্ড নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়নি।
এদিকে গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের দুর্নীতি সম্পর্কে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) দেওয়া বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, ‘এটি উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও ভিত্তিহীন।’