লামায় প্রাথমিক শিক্ষিকা সো সো ওয়ানের মানবিকতা
বান্দরবান : ‘মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য’-এ চির অমর বাণীটি সত্যি প্রমাণিত করলেন, বান্দরবানের লামা উপজেলার রুপসীপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা সো সো ওয়ান।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসারত ৩৪জন হাম রোগে আক্রান্ত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি ম্রো রোগীকে নিজের বেতনের টাকায় কেনা বস্ত্র প্রদানের মাধ্যমে এর প্রমাণ করেন তিনি। আরো কয়েকজন শিক্ষক শিক্ষিকাও এ ভালো কাজে সহযোগিতা করেন। বুধবার দিনগত রাতে বস্ত্র প্রদানের সময় উপস্থিত ছিলেন, জনতা ব্যাংক লামা শাখার সিনিয়র অফিসার অংছিং মার্মা, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র স্টাফ নার্স কৃষ্ণাশ্রী চক্রবর্তী, সাংবাদিক মো. নুরুল করিম আরমান ও মংছিং প্রু মার্মা, শিক্ষক থুইমংছিং মার্মা, এনজিও কর্মী বাবু মং মার্মা প্রমুখ। এ সময় হাসপাতাল জুড়ে প্রশসংসায় ভাসলেন এ শিক্ষিকা।
এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত সিনিয়র স্টাফ নার্স কৃষ্ণাশ্রী চক্রবর্তী জানান, দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় বসবাসকারী ম্রো পরিবারগুলোর পোষাক খুবই অপরিচ্ছেন খুবই নোংরা ছিল। তাছাড়া বেশ কয়েকজন শিশুর গায়ে কাপড়ও ছিলনা। সেই মুহুর্তে শিক্ষিকা সো সো ওয়ানের এ উদ্যোগে প্রমান করে মানবিকতা এখনো হারিয়ে যায়নি। তার এ উদ্যোগ অবশ্যই প্রশংসার দাবীদার।
এ বিষয়ে শিক্ষিকা সো সো ওয়ান বলেন, আমরা যে যেই লেভেলেই পেশাগত দায়িত্ব পালন করি না কেন, সব কিছুর মূলে রয়েছে মানব কল্যাণ। যথাযথভাবে মানব কল্যাণ করাটাই মূল দায়িত্ব, সেই দৃষ্টিকোন থেকেই গরীব মানুষের মাঝে আমি ও আমার কয়েকজন সহকর্মীর সামান্যতম এ বস্ত্র প্রদান। মানব কল্যাণে শিক্ষিকার গৃহীত পদক্ষেপ সমাজের অনেকেই অনুকরণ করবেন এমনটাই প্রত্যাশা সকলের।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি উপজেলা সদর ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ি পুরাতন লাইল্যা মুরুং পাড়ার ৮ পরিবারের ৩৫ জন ম্রো সম্প্রদায় হাম রোগে আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে দুতিয়া ম্রো (৭) নামের এক শিশু মারা যায়। পরে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মিন্টু কুমার সেন আক্রান্তদের নিজ উদ্যোগে উদ্ধার করে মঙ্গলবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। বর্তমানে আক্রান্ত রোগীদের শারীরিক অবস্থা উন্নতির দিকে বলে জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদুল হক।
মৈত্রী/এফকেএ/এএ