লামায় নদী পথে অবৈধ কাঠ পাচার রোধে বন বিভাগের অভিযান

মো. নুরুল করিম আরমান, লামা প্রতিনিধি

বান্দরবান : অবৈধভাবে কাঠ পাচার রোধে অভিযান চালিয়ে আসছে বান্দরবানের লামা বন বিভাগ। এরই ধারাবাহিকতায় লামামুখ বন চৌকির অভিযানে নদী পথে পাচারকালে ৪ হাজার ৩০৮ ঘনফুট অবৈধ কাঠ জব্দ করা হয়েছে। যা নিলামে বিক্রি করে সরকারের রাজস্ব জমা হয়েছে ২১ লক্ষ ৩৬ হাজার ২৪১ টাকা।এসব ঘটনায় বন আইনে ৩০টি মামলাও করা হয়। বিভাগীয় বন কর্মকর্তার নির্দেশে লামামুখ বন চৌকির স্টেশন কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন খানের নেতৃত্বে সঙ্গীয় ৩ বন কর্মী গত কয়েক মাসে পৃথক অভিযান চালিয়ে এসব কাঠ জব্দ করেন। সীমিত সংখ্যক জনবল নিয়েই অভিযান পরিচালনা করা হয় বলে জানান বন কর্মীরা।

সূত্র জানায়, এক শ্রেনীর অসাধু কাঠ ব্যবসায়ী উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে অবৈধভাবে কাঠ সংগ্রহ করে বিনা পারমিটে উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া মাতামুহুরী নদী, বমুখাল ও লামা খাল দিয়ে অভিনব পন্থায় দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচারের চেষ্টা করছে, এমন সংবাদের ভিত্তিতে স্টেশন কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন খানের নেতৃত্বে সঙ্গীয় সদস্যরা বিভিন্ন সময় লামা খালের রুপসীপাড়া ব্রীজ সংলগ্ন, বমুখাল ও মাতামুহুরী নদীর মিনঝিরিতে অভিযান চালায়। এ সময় বিভিন্ন প্রজাতির ১ হাজার ৯৬৩ ঘনফুট গোল গাছ, ৯৩১ ঘনফুট আরএফটি বল্লি গাছ, ৮০৯ ঘনফুট জ্বালানীসহ ৬০৫ ঘনফুট গামারী, গর্জন, ভাদী ও শিউরী গাছ আটক করেন বন কর্মীরা। লামামুখ চৌকির স্টেশন কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন খান যোগদানের পর থেকে এসব কাঠ জব্দ করা হয়।

কাঠ ব্যবসায়ী বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেন বেঙ্গল, মো. সেলিম ও হারুণ অর রশিদ বলেন, বন বিভাগের মাধ্যমে আমরা পার্বত্য অঞ্চলে বৈধভাবে কাঠ ব্যবসা পরিচালনা করে যাচ্ছি। কিন্তু কিছু অবৈধ কাঠ ব্যবসায়ীর কারণে আজ আমরা সবাই বদনামের ভাগিদার হচ্ছি। অবৈধ কাঠ ব্যবসায়ীদের কারণে আমাদের মতো বৈধ ব্যবসায়ীদেরও বন বিভাগের কাছে সব সময় সন্দেহের চোখে পড়তে হয়। তারা আরো বলেন, বন বিভাগ প্রতিনিয়ত অবৈধ কাঠ ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে অভিযান পরিচালনা করছে। সঠিক তথ্য পেলে সঙ্গে সঙ্গে অভিযান পরিচালনা করেন অবৈধ কাঠ জব্দ করেন বন কর্মকর্তারা।

অভিযানের সত্যতা নিশ্চিত করে লামামুখ বন চৌকির স্টেশন কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন খান বলেন, গত ১৫ মাসে আমরা বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে ৪ হাজার ৩০৮ ঘনফুট কাঠ জব্দ করেছি। এসব নিলামে বিক্রি করে সরকারের কোষাগারে ২১ লাখ ৩৪ হাজার ২৪১ টাকা রাজস্ব জমা করতে সক্ষম হয়েছি। পাশাপাশি এসব ঘটনায় বন আইনে ৩০টি মামলাও করা হয়। তিনি আরো বলেন, বন রক্ষায় আমরা সর্বদা প্রস্তুত রয়েছি। কেউ অবৈধ কাঠ পাচার করতে পারবে না। অবৈধভাবে কাঠ পাচার রোধে পাচারকারীদের বিরুদ্ধে বন বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

এ বিষয়ে লামা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এস এম কায়চার বলেন, পাচারকারীরা সুযোগ খুঁজতে থাকে উপজেলা থেকে অবৈধভাবে কাঠ পাচারের জন্য। এটি মাথায় রেখে পাচার বন্ধে আমরা অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু জনবল কম থাকায় সীমিত জনবল দিয়েই অভিযান পরিচালনা করতে হচ্ছে। গত কয়েক মাসে শুধু নদী পথে পাচারকালে ২১ লাখ টাকার বেশি কাঠ জব্দ করা হয়েছে। অবৈধভাবে বনজ সম্পদ পাচাররোধে বন বিভাগের পাশাপাশি স্থানীয়দের সার্বিক সহযোগিতাও কামনা করেন তিনি।

মৈত্রী/এফকেএ/এএ

শেয়ার করুন: