বাবার আদর্শেই মৌজাবাসীর সেবা করে যাবো : নব নিযুক্ত দরদরী মৌজা হেডম্যান

মো. নুরুল করিম আরমান, লামা প্রতিনিধি

বান্দরবান : জেলার লামা উপজেলার ২৯৪ নং দরদরী মৌজার নব নিযুক্ত হেডম্যান মংসাইন থুই। তাঁর পিতা প্রয়াত হেডম্যান ও ইউপি চেয়ারম্যান চহ্লাখইন মার্মা গত বছরের ১৯ জুন মারা যান। চলতি বছরের ১৩ এপ্রিল পরিবারের ছোট ছেলে হিসাবে তিনি বান্দরবান পার্বত্য জেলা প্রশাসক কর্তৃক হেডম্যান নিয়োগপ্রাপ্ত হন। গত ১৭ এপ্রিল উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে যোগদান করেন তিনি। প্রথা গতভাবে বাবার মৃত্যুর পর অল্পবছর বয়সে তাঁকে এ দায়িত্ব নিতে হয়েছে। মংসাইন থুই দরদরী মৌজা হেডম্যান নিযুক্ত হয়ে যোগদানের সত্যতা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোস্তফা জাবেদ কায়সার নিশ্চিত করেন।

ভূমি অফিসের তথ্য মতে, ১৮৯২ সালে উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি ২৯৪ নং দরদরী মৌজাটি গঠিত হয়। এ মৌজায় রয়েছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি ও বাঙ্গালী মিলে ৫৮টি গ্রাম। ৮ হাজার ৬ শত ৪০ একর জমি উঁচু নীচু পাহাড় আর সমতল পরিবেষ্ট এই মৌজা। এর মধ্যে গ্রোভল্যান্ড ৪৮৫ একর, রাবার/হর্টিকালচার ২২৫ একর ও ৫০৮০টি বন্দোবস্তি রয়েছে। এতে খাস রয়েছে ১০৩১.৭১ একর জমি। এ মৌজার উত্তরে চৈক্ষ্যং মৌজা, দক্ষিণে লামা মৌজা, পূর্বে পোপা মৌজা ও পশ্চিমে ছাগল খাইয়া মৌজার অবস্থান। মারমা, ত্রিপুরা এবং বাংগালী অধ্যুষিত এই এলাকার অধিকাংশ জনগণের আয়ের উৎস কৃষি জমি, বিভিন্ন প্রকার ফলের বাগান এবং জুম চাষ। এছাড়া সরকারি বেসরকারি চাকরি, ব্যবসায়ি এবং বিভিন্ন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীতে চাকরিরত আছেন অনেকেই।

বুধবার সকালে নব নিযুক্ত হেডম্যান মংসাইন থুই’র সাথে এ প্রতিবেদকের কথা হয়। এ সময় হেডম্যান মংসাইন থুই বলেন, আমার প্রয়াত বাবা চাহ্লাখইন মার্মা উপজেলার ২৯৪নং দরদরী মৌজার একজন সৎ, দক্ষ, জনপ্রিয় হেডম্যান ও রুপসীপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ছিলেন। হেডম্যান দাদা থোয়াইহ্লা মার্মা মারা যাওয়ার পর ২০০০সাল থেকে হেডম্যান নিযুক্ত হয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে সফলভাবে দায়িত্ব পালন করে গেছেন আমার বাবা। শুধু তাই নয়, তিনি দু দু বার বিপুল ভোটে উপজেলার রুপসীপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে ইউনিয়নবাসীর সুখে দুখে পাশে থেকে সেবা করেছেন। আমিও সকলের সহযোগিতায় প্রয়াত বাবার সেই আদর্শ মতে মৌজাবাসীর সেবা করে করে যাবো।

তিনি জানান, সবার আর্শীবাদে আমি অল্প বয়সে হেডম্যান এর দায়িত্ব পেয়েছি। বাবাকে সবসময় দেখেছি এলাকার রাস্তাঘাট উন্নয়ন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নির্মাণ, ব্রিজ কার্লভাট নির্মাণে তিনি সবসময় সরকার এবং ইউনিয়ন পরিষদকে সহায়তা করে আসতে। আমিও বাবার সেই আদর্শে সেইসব উন্নয়ন কর্মকান্ডে নিজেকে সম্পৃক্ত করে এগিয়ে যাবো। হেডম্যান মংসাইন থুই আরোও জানায়, মৌজার অধিকাংশ জনগণ দরিদ্র। আমি বাবার মতো তাদের সুখে দুঃখে সবসময় কাছে থাকবো। সকলের সহযোগিতায় দরদরীকে একটি আর্দশ মৌজা হিসাবে গড়ে তুলতে চাই।

মৈত্রী/এফকেএ/এএ

শেয়ার করুন: