বাজারে হাজারো টিভি – কোনটা কিনবেন ?

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক ডিজিটাল বিপ্লব – প্রতিটি ধাক্কা মানিয়ে নিয়েছে টেলিভিশন। ঘরোয়া বিনোদনের উৎস হিসেবে সুবিশাল বাক্স-আকৃতি থেকে শুরু করে এখনকার দেয়ালে আটকে থাকা ফ্ল্যাট প্যানেল পর্যন্ত টিভির যাত্রা। টেলিভিশন স্ক্রিনের এই বিবর্তন নিয়ে জানাতেই আমাদের আজকের এই আয়োজন-

টেলিভিশনের আদ্যোপান্ত

১৮০০ শতকের শেষদিকে আবিষ্কৃত ক্যাথড রে টিউব (সিআরটি) টেলিভিশনের পিকচার টিউবের পূর্বসুরি হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শুরুতে স্ক্যানিং ডিভাইস হিসেবে তৈরি করা হলেও, ক্যামেরা ও বিদ্যুতের কার্যপ্রণালী সঠিকভাবে সমন্বয় করতে সক্ষম হয় সিআরটি। এরপর আসে হাই ডেফিনেশন (এইচডি) টিভি; পরবর্তীতে যা আলট্রা-হাই ডেফিনেশন (ইউএইচডি) টিভি হিসেবে আরও আধুনিক হয়ে ওঠে। ইউএইচডি টিভির দুইটি ডিজিটাল ফরম্যাট রয়েছে – ৪কে ইউএইচডি ও ৮কে ইউএইচডি। এই ফরম্যাটগুলোতে আসপেক্ট রেশিও ১৬:৯ বা তার বেশি থাকতে হয়; পাশাপাশি, এগুলো কমপক্ষে একটি ডিজিটাল ইনপুট ধরে রাখতে সক্ষম এবং কমপক্ষে ৩৮৪০X২১৬০ রেজ্যুলশনের ভিডিও উপস্থাপনে সক্ষম হতে হয়।

সম্প্রতি বাজারে এসেছে কোয়ান্টাম ডট লাইট এমিটিং ডায়োড (কিউএলইডি)। এটি একধরণের ডিসপ্লে টেকনোলোজি যেটি ফিল্মের মধ্যে ডট ধারণ করে রাখে এবং এলইডি ব্যাকলাইটের মাধ্যমে আলোর প্রতিফলন তৈরি করে। ছবি উৎপন্ন করতে টিভির মধ্যে বেশ কয়েকটি স্তরে সেই আলো পরিভ্রমণ করে। এলইডি’র উৎস থেকে পাঠানো আলো টিভির বিভিন্ন স্তর পরিভ্রমণ শেষে স্ক্রিনে ফুটে ওঠে।

৪কে ইউএইচডি’র বিকাশ

৪কে আলট্রা এইচডি টিভি একটি এফএইচডি (ফুল এইচডি) টিভির তুলনায় চারগুণ বেশি রেজ্যুলেশন ধারণ করে, অর্থাৎ সাধারণভাবে এই টিভির রেজ্যুলেশন হবে ১০৮০ পিক্সেল। এর মানে হলো, একটি এফএইচডি টিভিতে যেখানে ২০ লাখ (২ মিলিয়ন) পিক্সেল থাকে, সেই একই পরিমাণ জায়গায় একটি ৪কে ইউএইচডি টিভিতে থাকবে ৮০ লাখ (৮ মিলিয়ন) পিক্সেল। এখানে পিক্সেল অগমেন্টেশনের মাধ্যমে একটি পিক্সেলকে চারগুণ ছোট করা হয়। এখন বেশিরভাগ আধুনিক টেলিভিশন সেটে থাকে এইচডিআর স্ক্রিন, যার সাহায্যে দেখা যায় নিখুঁত কালারের ঝকঝকে ছবি।

বাজারে হাজারো টিভি, কোনটা রেখে কোনটা কিনবেন!

এখনকার দিনে অনেকেই টিভি কিনতে গিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে যান। বাজারে থাকা হরেক রকম ব্র্যান্ড থেকে নিজের পছন্দের টিভি কিনতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়। আর এজন্য ক্রেতাদের বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য কোনো ব্র্যান্ডের প্রতি আস্থা রাখা উচিত। নিজের জন্য টিভি কেনার আগে এ বিষয়ে যথেষ্ট পরিমাণ খোঁজখবর নেয়া এবং বাজার সম্পর্কে ধারণা রাখা খুব জরুরি।

সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ও ক্রেতাদের প্রয়োজনকে গুরুত্ব দিয়ে বাজারের অনেক ব্র্যান্ডই টিভি উৎপাদন করছে। তবে, আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে ঘরোয়া বিনোদনের সবচেয়ে সেরা উৎস হিসেবে এগিয়ে রয়েছে স্যামসাং।

লাইফস্টাইল টিভি, কিউএলইডি টিভি ও নিও কিউএলইডি টিভিতে উদ্ভাবন নিয়ে এসে টেলিভিশনের প্রচলিত ধারণাই বদলে দিয়েছে স্যামসাং। বিশ্বের টিভি ইন্ডাস্ট্রিতে গত ১৭ বছর ধরে নেতৃস্থানীয় অবস্থান ধরে রেখেছে স্যামসাং। পাশাপাশি, বাংলাদেশের বাজারেও বেশ গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। সেরা টিভি ব্র্যান্ড হিসেবে নিলসেন আইকিউ’র সহযোগিতায় বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরাম আয়োজিত অনুষ্ঠানে বেস্ট ব্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ড ২০২২ অর্জন করেছে স্যামসাং টিভি। এছাড়া, প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের প্রথম টিভি ব্র্যান্ড হিসেবে সুপারব্র্যান্ডস খেতাবও অর্জন করেছে।

পরিবর্তনশীল এই জীবনে টেলিভিশন কেবল একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস নয়, বরং তার চেয়েও বেশি কিছুতে পরিণত হয়েছে। তাই, টিভি কেনার আগে অবশ্যই ভাবা উচিত। কোন টিভি আমাদের প্রয়োজন সবচেয়ে ভালোভাবে মেটাতে পারবে সেটা বিবেচনায় নিতে হবে।

অনন্যা আক্তার (অনন্যা)
তথ্যপ্রযুক্তি লেখক

মৈত্রী/এফকেএ/এএ

শেয়ার করুন: