বাংলাদেশে নতুন ডিজিটাল পাওয়ার ইনভার্টার নিয়ে এলো হুয়াওয়ে
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক :
ঢাকা : বাংলাদেশের জন্য চারটি সোলার পাওয়ার ইনভার্টার উন্মোচন করেছে হুয়াওয়ে। ডিজিটাল জ্বালানির কার্যকারিতার ওপর গুরুত্বারোপ করে রাজধানীতে আয়োজিত সংশ্লিষ্ট অংশীজন ও ইপিসি সহযোগীদের জন্য আয়োজিত হুয়াওয়ে পার্টনার ইকোলজিকাল কনফারেন্স ২০২৩ শীর্ষক এক সম্মেলনে এই ঘোষণা দেয় হুয়াওয়ে। পাশাপাশি এই সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীগণ বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানির সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন।
অনুষ্ঠানে ইনভার্টারগুলো প্রদর্শন করেন হুয়াওয়ে সাউথ এশিয়ার ডিজিটাল পাওয়ার বিভাগের ব্যবস্থাপনা পরিচালক লিয়াং উইশিং (জ্যাক)। বাণিজ্যিক ও শিল্পখাতের (সিঅ্যান্ডআই) জন্য তিনি SUN2000-100-KTL-M2, SUN2000-115-KTL-M2, SUN2000-50-KTL-M3 এবং ইউলিটি খাতের জন্য SUN2000-330KTL-H1 ইনভার্টার উন্মোচন করেন।
অনুষ্ঠানে লিয়াং উইশিং (জ্যাক) বলেন, “বাংলাদেশের শিল্পখাতের জন্য ডিজিটাল জ্বালানি তুলনামূলক একটি নতুন ধারণা। এর অভুতপূর্ব সম্ভাবনা রয়েছে এবং জ্বালানি সঙ্কটে এটি কার্যকরী ভূমিকা রাখবে। নতুন এই ধারণা আমাদের শিল্পখাতকে বিদ্যুৎ ব্যবহারে শুধুমাত্র সাশ্রয় কিংবা কার্যকরি পরিচালনারই সুযোগ করে দিবে না; তাদের আত্মনির্ভরশীল করে তুলতেও ভূমিকা পালন করবে। আর এই লক্ষ্যে আমরা বাংলাদেশে অনন্য এসব পণ্য নিয়ে এসেছি। আমার বিশ্বাস, এসব পণ্যের মাধ্যমে বাংলাদেশ উপকৃত হবে। অন্যদিকে, আমাদের সহযোগীদের ছাড়া বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে যে সফলতা আমরা দেখছি তা কখনই সম্ভব হতো না। আমি আশাবাদী, দেশের প্রবৃদ্ধির সাথে আমরা সকলে একসাথে এগিয়ে যাবো।”
বাণিজ্যিক ও শিল্পখাতের জন্য হুয়াওয়ে যে নতুন ইনভার্টারগুলো এনেছে সেগুলোয় স্মার্ট স্ট্রিং-লেভেল ডিসকানেক্টর (এসএসএলডি) ফিচার রয়েছে যা রিভার্স কারেন্ট ফ্লো ও শর্টসার্কিট শনাক্ত করে। শুধুমাত্র হুয়াওয়ে ইনভার্টারে টিইউভি স্বীকৃত আর্ক ফল্ট সার্কিট ইন্টারাপ্টার (এএফসিআই) ফাংশন রয়েছে যার ফলে মাত্র ০.৫ সেকেন্ডে প্লান্টে ২০০ মিটারের মধ্যে যে কোন আর্কিং স্বয়ংক্রিয়ভাবে শনাক্ত করে আগুনের ঝুঁকি থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। এছাড়াও রয়েছে পিআইডি (পোটেনশিয়াল ইনডিউসড ডিগ্রেডেশন) রিকভারি ফিচার যা পাঁচ শতাংশ পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে পারে।
SUN2000-330KTL-H1 প্রথম ইনভার্টার যা স্মার্ট ফ্যান ডাস্ট রিমুভাল এবং স্মার্ট কানেক্টর-লেভেল ডিটেকশন (এসসিএলডি) ফাংশনসমৃদ্ধ। এর ফলে, ইউটিলিটি স্কেল প্রকল্পে ডিসি-সাইড ত্রুটির সময় অত্যন্ত নির্ভুলভাবে এবং দ্রুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা সহজ হবে। সার্বিক পরিচালনায় কখনই এই ইনভার্টার বন্ধ করার প্রয়োজন হবে না। তাই পরিচালন ব্যয় ও সময় ছয় শতাংশ পর্যন্ত কমবে।
SUN2000-330KTL-H1 ইনভার্টারে নতুন প্রজন্মের ১৫০০ভোল্ট স্মার্ট স্ট্রিং ইউটিলিটি পিভি সিস্টেম রয়েছে, যা নিরাপদ, ব্যবহারবান্ধব, স্মার্ট ও কার্যকরী এনার্জি ডেনসিটি নিশ্চিতে ভূমিকা রাখবে। এটি সকল প্রেক্ষাপটে ব্যবহারযোগ্য প্রথম ডিসি ট্রিপল-সেফ ইনভার্টার।
বর্তমানে বিভিন্ন ইপিসি প্রতিষ্ঠান সহযোগী হিসেবে হুয়াওয়ের সাথে কাজ করছে। বাংলাদেশে ডিজিটাল জ্বালানির সম্ভাবনা উন্মোচনে অনন্য ভূমিকা রাখার জন্য সম্মেলনে এই সকল সহযোগীদের স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। আর উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য ওমেরা রিনিউয়্যাবল এনার্জি লিমিটেড, সিনার্জি লিমিটেড এবং সোলার ইপিসি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড – এই তিনটি প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার প্রদান করা হয়।
কার্বন নিঃসরণ হ্রাসের পরিকল্পনা রয়েছে বাংলাদেশের। ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে ২২ শতাংশ কার্বন নিঃসরণ কমানোর অঙ্গীকার করেছে। গত তিন বছর ধরে বাংলাদেশে সৌরবিদ্যুৎ সমাধান প্রদান করছে হুয়াওয়ে। এর মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রকল্পে এ সংশ্লিষ্ট সমাধান প্রদান করেছে। ময়মনসিংহে অবস্থিত দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সোলার প্ল্যান্টে হুয়াওয়ের ডিজিটাল পাওয়ার সল্যুশন ব্যবহার করা হচ্ছে।
মৈত্রী/এফকেএ/এএ