ভূরুঙ্গামারীতে অবৈধ ফার্মেসির ছড়াছড়ি; বাড়াচ্ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি

আসাদুজ্জামান খোকন, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি :

কুড়িগ্রাম : ভূরুঙ্গামারীতে ঔষধ প্রশাসনের নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে বিভিন্ন হাট-বাজার ও অলিগলিতে চলছে ড্রাগ লাইসেন্স বিহীন ফার্মেসি বা ঔষধের দোকান। এসব ফার্মেসি বা ঔষধের দোকানে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া উচ্চমাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক, যৌন উত্তেজক ও ঘুমের বড়ি সহ নিষিদ্ধ, নকল ও নিম্নমানের বিভিন্ন ধরনের ঔষধ অবাধে বিক্রি হচ্ছে। রোগীরা ঔষধ সেবন করে সুস্থ হওয়ার পরিবর্তে জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে শারীরিক ও মানসিক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। অপরদিকে ক্রেতারা ঔষধ কিনে প্রতারণা ও আর্থিক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন।

উপজেলার দশ ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ হাটবাজার ও রাস্তার মোড়ে গড়ে ওঠা ড্রাগ লাইসেন্সবিহীন শতশত ফার্মেসি বা ঔষধের দোকান থেকে প্রতিনিয়ত অপচিকিৎসার শিকার হচ্ছেন। বিশেষ করে প্রত্যন্ত এলাকার মানুষজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের শরণাপন্ন না হয়ে নিকটবর্তী এসব ফার্মেসিতে গিয়ে রোগের বর্ণনা দিয়ে ঔষধ কিনে সেবন করছেন।

এ সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছে ড্রাগ লাইসেন্স বিহীন ফার্মেসিগুলো। তারা সাধারণ মানুষের অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে অপেক্ষাকৃত কম মূল্যের নিম্নমানের ঔষধ বেশি মূল্যে বিক্রি করছেন। এছাড়া তারা রোগীদের ব্যবস্থাপত্রে চিকিৎসকের উল্লিখিত ঔষধের পরিবর্তে একই গ্রুপের নিম্নমানের ঔষধ সরবরাহ করছেন। যা রোগ নিরাময়ের পরিবর্তে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে।

ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর কুড়িগ্রাম জেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ফার্মেসি বা ঔষধের দোকান যিনি চালাবেন তার ফার্মাসিস্ট সনদ থাকতে হবে। যদি তার ফার্মাসিস্ট সনদ না থাকে তাহলে একজন রেজিস্টার্ড ফার্মাস্টিট রাখতে হবে। ঔষধ নিয়ন্ত্রণ আইনের এ নিয়মের তোয়াক্কা না করেই ঔষধ বিক্রি করা হচ্ছে।

কয়েকজন সচেতন ক্রেতা বলেন, নকল ও নিম্নমানের ঔষধ বিক্রি করলে বেশি লাভ হয়। তাই ফার্মেসিগুলো নকল ও নিম্নমানের ঔষধ বিক্রি করে। সাধারণ মানুষের পক্ষে কোন ঔষধটি আসল আর কোনটি নকল তা বুঝতে পারা অসম্ভব। এতে নকল ও নিম্নমানের ঔষধের ব্যবসা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ছে।

ঔষধ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আলী মুকুল বলেন, উপজেলা জুড়ে তিনশোর মতো ঔষধের দোকান আছে। যার মধ্যে ৬০ থেকে ৭০টির ড্রাগ লাইসেন্স আছে। ম্যাক্সপ্রো, সেকলো, প্যান্টনিক্স, ফিনিক্স, ক্যালবো-ডিসহ যে সমস্ত ঔষধ বেশি চলে সেগুলোর নকল ঔষধে বাজার ভরে গেছে। তিনি আরও বলেন, কিছু ঔষধ আছে যেগুলো বেশি পরিমানে সেবন করলে নেশা হয়। কিছু অসাধু ঔষধ ব্যবসায়ী গভীর রাত পর্যন্ত দোকান খোলা রেখে সেই ঔষধগুলো বিক্রি করছেন।

কুড়িগ্রাম ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ঔষধ তত্ত্বাবধায়ক হাফিজুর রহমান মিয়া বলেন, ফার্মেসি বা ঔষধের দোকান পরিচালনা করতে হলে ড্রাগ লাইসেন্স থাকা আবশ্যক। ড্রাগ লাইসেন্স না থাকলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া অনুমোদনহীন নকল ও মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ সংরক্ষণ ও বিক্রয়কারীর বিরুদ্ধেও আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

মৈত্রী/এফকেএ/এএ

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *