আত্মসাৎ হওয়া অর্থ দ্রুততম সময়ে আদায়ের নির্দেশ
হাবিবুর রহমান /লিগ্যাল ভয়েস টোয়েন্টিফোর :
ঢাকা, ২৮ অক্টোবর ২০১৯
একাদশ জাতীয় সংসদের সরকারী হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির ১৫তম বৈঠক কমিটির সভাপতি মোঃ রুস্তম আলী ফরাজী-এর সভাপতিত্বে আজ জাতীয় সংসদ ভবনস্থ কেবিনেট কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। কমিটির সদস্য আবুল কালাম আজাদ, মো; আব্দুস শহীদ, মোঃ শহীদুজ্জামান সরকার, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, জহিরুল হক ভূঞা মোহন, মনজুর হোসেন, আহসানুল ইসলাম (টিটু), মুস্তফা লুৎফুল্লাহ ও ওয়াসিকা আয়েশা খান উক্ত বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।
বৈঠকে পূর্ত অডিট অধিদপ্তর কর্তৃক প্রণীত স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীনস্থ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর এর ২০০৮-২০০৯, ২০০৯-২০১০ ও এর পূর্ববর্তী অর্থ বছরের হিসাব সম্পর্কিত বংলাদেশের কম্পট্রোলার এন্ড অডিটর জেনারেল এর বার্ষিক অডিট রিপোর্ট ২০০৯-২০১০ এ অন্তর্ভুক্ত ১৫ (পনের) টি অডিট আপত্তির উপর আলোচনা হয়।
কোডাল বিধি ও সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করে বাজেট বরাদ্দের অতিরিক্ত ১০,২০,৭১,২৮৪টাকা ব্যয়, প্রকল্প পরিচালক কর্তৃক অপরিকল্পিত ও অপ্রয়োজনীয়ভাবে মালামাল ক্রয় এবং তা খোলা আকাশের নিচে ভান্ডারজাত করার ফলে অব্যবহৃত ২,৮৮,৫৯,৫০০টাকার মালামালের অপচয়, এডিপি ও দরপত্রের শর্ত উপেক্ষা করে টেস্ট রিপোর্ট ছাড়াই ঠিকাদার কর্তৃক সরবরাহকৃত মালামালের মাধ্যমে নলকূপ স্থাপন করায় অনিয়মিত ব্যয় ২,৬৬,১৮,৮০৮টাকা, সংগৃহীত সহায়ক চাঁদার ৮৯,২৫,০০০টাকা সরকারি কোষাগারে জমা প্রদান না করায় সরকারের আর্থিক ক্ষতি, বাজেট বরাদ্দ বহির্ভূত দরপত্র আহ্বান ও কার্যাদেশ প্রদান করায় সরকারের ৫৮,৫৭,৭৯৩টাকা অনিয়মিতভাবে অতিরিক্ত ব্যয়, নলকূপের সহায়ক চাঁদা ও যন্ত্রাংশের বিক্রয়লব্ধ অর্থ আত্মসাৎ, ভি এস মালামাল ঘাটতি ও ঘূর্ণায়মান তহবিল আত্মসাতের জন্য দায়ী কর্মকর্তাদের নিকট হতে সরকারি পাওনা আদায় না করায় সরকারের ৩৫,৩৭,৮৬৭টাকা ক্ষতি, ঠিকাদার দ্বারা স্থাপনকৃত নলকূপ হতে উত্তোলিত পানিতে নির্ধারিত মাত্রার বেশি আর্সেনিক পাওয়া সত্বেও বিল পরিশোধ; জড়িত অর্থের পরিমাণ ৩৬,৮৩,২৯০টাকা, ব্যবহারযোগ্য টিউবওয়েল সামগ্রী দীর্ঘদিন যাবত অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকায় সরকারের ২৩,২০,৭৪৫টাকা ক্ষতি, জালিয়াতির মাধ্যমে দরপত্র টেম্পারিং করে দরপত্র মূল্য বৃদ্ধি ও কার্যাদেশ প্রদানে ক্ষতি ১৪,৯১,০২৪টাকা, জালিয়াতির মাধ্যমে দরপত্র টেম্পারিং করে কার্যাদেশ প্রদানে ক্ষতি ৭,৯৮,৭৯৭টাকা।
আত্মসাৎকৃত অর্থ অনাদায়জনিত কারণে ১১,৩৪,৭০৫টাকা ক্ষতি, স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত বিভাগীয় রাজস্ব সরকারি কোষাগারে জমা না করে ২,৪৭,৮৯,৩২৯টাকা ব্যয় নির্বাহ, উচ্চ মূল্যে হ্যান্ড পাম্প ক্রয় করায় সরকারের ১০,১৩,৪০০টাকা ক্ষতি, চেক জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের জন্য ১৮,০০,০০০টাকা ক্ষতি, পিপিআর-২০০৮ অনুযায়ী দরপত্র বিজ্ঞপ্তি সিপিটিইউ ওয়েবসাইটে প্রকাশ ব্যতিরেকে অনিয়মিতভাবে ২,৫৭,৯৫,১২৮টাকা ব্যয় নির্বাহ- বিষয়ে উক্ত বৈঠকে দীর্ঘ প্রশ্ন-উত্তর ও জেরা পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে ৫ টি অডিট আপত্তি নিষ্পত্তির সিদ্ধান্ত হয়, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অধিকতর তদন্তের স্বার্থে মন্ত্রণালয়, অডিট অধিদপ্তর ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রতিনিধির সমন্বয়ে ট্যাকনিকেল কমিটি গঠন করে রিপোর্ট পেশ এবং আদায়যোগ্য অর্থ দ্রুততম সময়ে আদায়ের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে জমা করে কমিটিকে অবহিত করার সিদ্ধান্ত প্রদান করে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
বৈঠকে মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ এবং বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।