রাঘব বোয়ালদেরও ছাড় দিচ্ছে না দুদক

শাহ্ সাকিব /লিগ্যাল ভয়েস টোয়েন্টিফোর :

দুদক শুধু চুনোপুঁটিদের নয়, রাঘববোয়ালদেরও ছাড় দিচ্ছে না। অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদেও আওতায় আনা হয়েছে। আরও অনেককেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না। অপরাধীদের আইনের মুখোমুখি দাঁড় করানো হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট ও স্টেট ডিপার্টমেন্টের তিন সদস্যের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ এসব কথা বলেন। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

ইকবাল মাহমুদ বলেন, টেকসই উন্নয়নের প্রতিটি লক্ষ্য তরুণ প্রজন্মকে ঘিরে। দুর্নীতিমুক্ত সমাজ, আইনের শাসন, মানসম্মত শিক্ষা, সবই তরুণ প্রজন্মের ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে অপরিহার্য। তিনি বলেন, দুর্নীতি একটি গভর্নেন্স ইস্যু। আমরা সমন্বিতভাবে সরকারি পরিষেবা ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে চেষ্টা করছি। এক্ষেত্রে দুদক বহুমাত্রিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দল দুদক চেয়ারম্যানের কাছে জানতে চান, দুদকের ৩০ শতাংশ মামলায় খালাস পাওয়ার কারণ কী, দুর্বল তদন্ত, নাকি দুর্বল প্রসিকিউশন অথবা অন্য কিছু। জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, আপনাদের ধারণা হয়তো সবই সত্য। তবে বর্তমানে দুদক তদন্ত এবং প্রসিকিউশন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ব্যাপক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নিয়েছে। দুদকের মামলায় সাজার হার এক সময় মাত্র ২২ শতাংশে নেমে এসেছিল, যা বর্তমানে প্রায় ৭০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।

এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)-এর সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করতে চায় দুদক। এজন্য এফবিআইকে চিঠিও পাঠানো হয়েছে। দুদক-এফবিআই সমঝোতা স্মারক সই হলে পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্র আরও প্রসারিত হবে বলে যুক্তরাষ্ট্রের তিন সদস্যের প্রতিনিধি দলকে অবহিত করেন দুদক চেয়ারম্যান।

তিনি বলেন, এফবিআই’র দক্ষ ও চৌকস কর্মকর্তারা বাংলাদেশে এসে দুদকের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দিতে পারেন। এক্ষেত্রে দুদক হয়তো প্রশিক্ষকদের লোকাল হসপিটালিটির ব্যবস্থা করতে পারে। তদন্ত ও প্রসিকিউশনে অভিজ্ঞ রিসোর্স-পার্সনদের মাধ্যমে কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে চায় দুদক।

ইকবাল মাহমুদ বলেন, মানিলন্ডারিং, সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন, অপরাধীদের গতিবিধি তদারকি ও দুর্নীতির ষড়যন্ত্রকারীদের প্রতিরোধ করতে প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে চায় দুদক। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার প্রয়োজন রয়েছে। বিশেষ করে উন্নতমানের ফরেনসিক ল্যাব স্থাপনে যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতা করতে পারে।

প্রতিনিধি দলটিকে অভিনন্দন জানিয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিগত তিন বছরে দুদকের ১৬৪ জন কর্মকর্তাকে অনুসন্ধান, তদন্ত ও প্রসিকিউশনের ওপর প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে সক্ষমতা বাড়াতে প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখেছে। যুক্তরাষ্ট্রের এই সহযোগিতা বাংলাদেশের দুর্নীতি দমনে দুদকের সক্ষমতা উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *