হাসপাতালে আইসোলেশন ইউনিট খোলার নির্দেশ

 

ডা. সবুজ / লিগ্যাল ভয়েস টোয়েন্টিফোর :

সম্প্রতি চীনে দেখা দিয়েছে প্রাণঘাতি নোবেল কোরানা ভাইরাস। এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশটিতে ৮০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। বাংলাদেশে এখনো এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া যায়নি। তবে এই চীনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিতের আগাম প্রস্তুতি হিসেবে সারাদেশের সরকারি হাসপাতালে অনতিবিলম্বে আইসোলেশন ইউনিট খোলার নির্দেশনা জারি করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।

আজ (সোমবার) রাজধানীর মহাখালীতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সম্মেলন কক্ষে স্বাস্থ্য মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বিভাগীয় পরিচালক ও সিভিল সার্জনদের সঙ্গে করোনাভাইরাস নিয়ে ভিডিও কনফারেন্স চলাকালে এই নির্দেশনা দেন।

সারাদেশের আটটি বিভাগের সকল জেলা সদর ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এই ইউনিট খোলা হবে। এ সময় দেশের সকল স্থল ও নৌবন্দরে বিভিন্ন দেশ থেকে আগত যাত্রীদের স্বাস্থ্যপরীক্ষাসহ সতর্ক দৃষ্টি ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা প্রদান করা হয়।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, এখনও পর্যন্ত দেশে নোবেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী পাওয়া না গেলেও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে সম্ভাব্য সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হচ্ছে। গত কয়েকদিন ধরে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ বিভিন্ন বিমানবন্দরে স্ক্যানার মেশিন দিয়ে চীনসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আগত যাত্রীদের শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে।

এর আগে রোববার স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে জেলাসদর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পৃথক আইসোলেশন ওয়ার্ড খোলার সিদ্ধান্তের পাশাপাশি দেশের ২৪টি স্থল ও নৌবন্দরে আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয় এবং তা চিঠি দিয়ে বিভাগীয় পরিচালক ও সিভিল সার্জনদের জানিয়ে দেয়া হয়।

অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ জানান, আজ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। বিভিন্ন স্থলবন্দরে আপাতত বিদেশ থেকে আগত যাত্রীদের হেলথ কার্ডের মাধ্যমে সংগ্রহ তথ্য সংগ্রহ ও থার্মোমিটার দিয়ে জ্বর মেপে মনিটরিং করা হবে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) পরিচালক ও রোগতত্ত্ববিদ অধ্যাপক মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা জানান, আজ (২৭ জানুয়ারি) সকাল পর্যন্ত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্ক্যানার মেশিন ও হ্যান্ড স্ক্যানিং মেশিনের মাধ্যমে দুই হাজার ৪৭০ জন যাত্রীর শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। তবে এখনও পর্যন্ত দেশে কোনো করোনাভাইরাস রোগী পাওয়া যায়নি।

তিনি জানান, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেও তাৎক্ষণিকভাবে তার এ রোগের উপসর্গ দেখা দিতে পারে। দুই থেকে ১৪ দিনের মধ্যে রোগী দেখা দিতে পারে। এ কারণে যাত্রীদের বলা হচ্ছে এ সময়ের মধ্যে যদি কেউ অসুস্থতা অনুভব করে তাহলে যেন আইডিসি আরে যোগাযোগ করে।

করোনা ভাইরাস থেকে বাঁচতে যা করবেন:

১. ঘরের বাইরে মাস্ক ব্যবহার করুন।

২. গণপরিবহন এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন।

৩. প্রচুর ফলের রস এবং পর্যাপ্ত পানি পান করুন।

৪. ঘরে ফিরে হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে ভালো করে হাত ধুয়ে নিন।

৫. কিছু খাওয়া কিংবা রান্না করার আগে ভালো করে ধুয়ে নিন।

৬. ডিম কিংবা মাংস রান্নার সময় ভালো করে সেদ্ধ করুন

৭. ময়লা কাপড় দ্রুত ধুয়ে ফেলুন।

৮. নিয়মিত থাকার ঘর এবং কাজের জায়গা পরিষ্কার করুন।

৯. সুরক্ষিত থাকতে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করুন।

১০. অপ্রয়োজনে ঘরের দরজা, জানালা খুলে রাখবেন না।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *