আলীকদমের দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শতাধিক ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি

মো. নুরুল করিম আরমান, লামা প্রতিনিধি

বান্দরবান : জেলার আলীকদম উপজেলার দূর্গম পাহাড়ি কুরুকপাতা ইউনিয়নের বিভিন্ন পাড়ায় পাড়ায় ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। শুক্রবার পর্যন্ত বেশ কয়েকটি পাড়ায় শতাধিক ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৪১ জনে অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। শিশুর পাশাপাশি আক্রান্ত হচ্ছেন প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষরাও। এ ঘটনায় উৎকন্ঠা বিরাজ করছে পুরো ইউনিয়নের পাহাড়ি এলাকা জুড়ে। দিন দিন এ ডায়রিয়া রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে বলে জানান, কুরুকপাতা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ক্রাতপুং মুরুং। তবে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ মতে, ৪-৫টি পাড়ার ২৫ জন নারী পুরুষ ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়।

ইউনিয়নের সারদা পাড়ার কারবারী সারদা ত্রিপুরা ও সাবেক মেম্বার চিনপাত ম্রো জানান, গত দুই তিন দিন ধরে কুরুকপাতা ইউনিয়ন সদর বাজার, সারদা পাড়া, পোয়ামুহুরী, মেরিনচর ও দোছড়িসহ বিভিন্ন পাড়ায় ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। ডায়রিয়ার পাশাপাশি জ্বর ও বমি হচ্ছে অনেকের। অর্থনৈতিক সংকট ও যোগাযোগ ব্যবস্থার অসুবিধার কারণে সন্তানকে নিয়ে উপজেলা সদর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে যেতে পারছেন না তারা। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলেও বিভিন্ন ঔষুধ দোকান থেকে কিনতে হয়। এদিকে ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়ার খবর পেয়ে আক্রান্তদের চিকিৎসবা দিতে বৃহস্পতিবার আক্রান্ত পাড়াগুলোতে গিয়ে চিকিৎসা সেবা দেয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টিম।

স্থানীয় নিপিও ম্রো বলেন, প্রতিবছর শুকনো মৌসুমে পাহাড়ের পল্লী গুলোতে খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দেয়। পাহাড়ি এসব পল্লীতে রিংওয়েল ও টিউবওয়েল না থাকায় অধিবাসিরা বাধ্য হয়ে ঝিরি ও ঝর্ণার পানি পান করে থাকেন। মূলত এসব কারণেই পাড়ার লোকজনের মধ্যে ডায়রিয়া রোগ ছড়িয়ে পড়ছে।

ডায়রিয়া রোগ ছড়িয়ে পড়ার সত্যতা নিশ্চিত করে কুরুকপাতা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ক্রাতপুং মুরুং সাংবাদিকদের জানায়, রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।

এ বিষয়ে আলীকদম উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: মাহাতাব উদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন, কুরুকপাতা ইউনিয়নে ঔষুধসহ চিকিৎসক দলকে পাঠানোর পর বৃহস্পতিবার পুরো দিনে ৪-৫টি পাড়ার মোট ২৫ জন ডায়রিয়া রোগী পাওয়া যায়। এর মধ্যে দুই জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে খবর পাওয়া গেছে। তাদেরকেও চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে মেডিকেল টিমের সদস্যরা। তিন শতাধিক আক্রান্তের খবর সম্পূর্ণ গুজব বলেও জানান এ কর্মকর্তা। তিনি জানান, মেডিকেল টিমের সদস্যরা আসলে বিস্তারিত জানা যাবে।

মৈত্রী/এফকেএ/এএ

শেয়ার করুন: