অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পের দাবি সরই ইউনিয়নবাসীর
মো. নুরুল করিম আরমান, লামা প্রতিনিধি
বান্দরবান : অবশেষে দাবী পুরণ হতে চলেছে বান্দরবান জেলার লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নবাসাীর। দীর্ঘদিন ধরে ইউনিয়নবাসীরা দুর্গম পাহাড়ি রেংয়েনপাড়া এলাকায় একটি পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের দাবী জানিয়ে আসছিল। এ প্রেক্ষিতে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পের স্থান নির্ধারণ ও সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য ইতিমধ্যে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশসহ একটি টিম সরেজমিন জরিপ করেছেন। ওই এলাকায় ক্যাম্প স্থাপন করা হলে স্থানীয়রাসহ বাগান মালিক ও কর্মচারীরা নিরাপদে চলাচলের পাশাপাশি চাঁদাবাজী, হামলা ও অপহরণ থেকে রক্ষা পাবে। তাই দ্রুত প্রস্তুাবিত পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন বাস্তবায়নের জোর দাবী জানান স্থানীয়রা।
জানা যায়, সরই ইউনিয়নে ২০টির মত রাবার ও হর্টিকালচার বাগান রয়েছে। বর্তমানে এসব বাগান থেকে প্রতিমাসে কোটি কোটি টাকার রাবার ও ফল উৎপাদন হচ্ছে, কর্মরত আছে শত শত শ্রমিক। কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরে ওই এলাকাটিতে পাহাড়ি সন্ত্রাসী কর্তৃক চাঁদার দাবীতে বিভিন্ন সময় রাবার বাগানে হামলা ও বাগান ম্যানেজারসহ কর্মচারিরা অপহরণের শিকার হন। এরপর থেকে বাগান মালিক, কর্মচারী ও স্থানীয়রা আতংকিত হয়ে পড়েন। এছাড়া পাহাড়ি ভূমি নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি বেশ কয়েকবার অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটে। এ কারণে নিরাপত্তার স্বার্থে ওই এলাকায় একটি পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের জোর দাবী তুলেন রাবার বাগান মালিক. কর্মচারী ও স্থানীয়রা।
এ প্রেক্ষিতে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাাখতে সেখানে একটি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করার উদ্যোগ নেওয়া হয় বলে জানান, বান্দরবান পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম।
ক্যাম্প স্থাপনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে সরই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইদ্রিস কোম্পানী বলেন, দুর্গম এলাকা হওয়ার কারণে দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকাটি পাহাড়ি স্বশস্ত্র সন্ত্রাসীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছিল। সন্ত্রাসীদের হামলা, চাঁদা না দিলে অপহরণের শিকারের কারণে উন্নয়ন কাজে বাঁধাগ্রস্তসহ রাবার উৎপাদনে ধ্বস নেমে এসেছিল। আতংকে জীবন যাপন করতে হয়েছে ওই এলাকার মানুষকে। পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা হলে স্থানীয়রাসহ বাগান মালিক ও কর্মচারীরা স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারার পাশাপাশি চাঁদাবাজী, হামলা ও অপহরণ থেকে রক্ষা পাবে।
এদিকে লামা রাবার ইন্ড্রাষ্ট্রিজের ম্যানেজার মো. আরিফ হোসেন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতিা নুরুল আলম ও হেডম্যান দূর্যধন ত্রিপুরা জানায়, ইউনিয়ন সদর থেকে ওই এলাকাটির দূরত্ব পাহাড়ি পথ বেয়ে প্রায় ১৫ কিলোমিটারের বেশি। তাই কোন একটা অঘটন ঘটলে ইউনিয়ন সদর থেকে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছার আগেই অপরাধীরা নিরাপদে সরে যেতে পারে। তাই ওই স্থানে বসবাসরত মানুষগুলোর নিরাপত্তায় একটি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা হলে সন্ত্রাসীরা আর অঘটন ঘটাতে সাহস পাবেনা।
অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পের স্থান নির্ধারণ ও সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার নেতৃত্বে সরেজমিন জরিপ করার সত্যতা নিশ্চিত করেন ক্যয়াজুপাড়া পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ মো. দেলোয়ার হোসেন।
মৈত্রী/এফকেএ/এএ